আর্কাইভ  বুধবার ● ২৭ আগস্ট ২০২৫ ● ১২ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   বুধবার ● ২৭ আগস্ট ২০২৫
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং ডিসি ডিবি হারুনের দাপটে ভিন্ন খাতে যায় মামলার তদন্ত

মুনিয়া হত্যারহস্য ফাঁস
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং ডিসি ডিবি হারুনের দাপটে ভিন্ন খাতে যায় মামলার তদন্ত

ড. ইউনূসের ওপর আস্থা রাখুন

ড. ইউনূসের ওপর আস্থা রাখুন

ভোটারদের দ্বারে প্রার্থীরা, তিন স্তরের নিরাপত্তাসহ থাকবে সেনা মোতায়েন

প্রচার শুরু, হাড্ডাহাড্ডির আভাস
ভোটারদের দ্বারে প্রার্থীরা, তিন স্তরের নিরাপত্তাসহ থাকবে সেনা মোতায়েন

চীনের পথে এনসিপির ৮ নেতা

চীনের পথে এনসিপির ৮ নেতা

মুনিয়া হত্যারহস্য ফাঁস

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং ডিসি ডিবি হারুনের দাপটে ভিন্ন খাতে যায় মামলার তদন্ত

বুধবার, ২৭ আগস্ট ২০২৫, রাত ০১:০৩

Advertisement Advertisement

নিউজ ডেস্ক: আলোচিত মুনিয়া হত্যারহস্য ফাঁস হয়েছে। কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেপ্তারের পর তার প্রতারণা, নির্যাতন ও ব্ল্যাকমেলের নানা ঘটনা সামনে চলে আসার পর উঠে এসেছে মুনিয়া হত্যার প্রকৃত ঘটনাটিও। সম্প্রতি ‘ক্রাইম এডিশন’ নামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদনে ইউটিউবার ও ব্লগারদের আওয়ামী লীগের পক্ষে জোরপূর্বক কাজ করানো থেকে শুরু করে আফ্রিদির নানা কুকীর্তির বিস্তারিত তথ্য উঠে আসে। ফাঁস হওয়া একাধিক ফোনালাপ ও ভুক্তভোগীদের দেওয়া বক্তব্যে জানা যায়, মুনিয়ার সঙ্গে আফ্রিদির ঘনিষ্ঠতা কেবল ব্যক্তিগত সম্পর্কেই সীমাবদ্ধ ছিল না। ব্যক্তিগত সম্পর্কের অবনতি হলে মুনিয়াকে নির্মমভাবে আফ্রিদি হত্যা করে। এ তথ্য প্রকাশ করেছেন আফ্রিদির প্রতারণা ও লালসার শিকার আরেক নারী। এটি মুনিয়ার মৃত্যুর রহস্য নতুন দিকে মোড় নিতে শুরু করেছে। চাঞ্চল্যকর তথ্যে পুলিশ ও গোয়েন্দা নড়েচড়ে বসেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তৌহিদ আফ্রিদি এবং তার পরিবারের ঘনিষ্ঠতা ছিল সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং ডিসি ডিবি হারুনের সঙ্গে। হারুনকে তিনি চাচা বলে সম্বোধন করতেন। এ তিনজনকে নিয়মিত নারী সাপ্লাই দিতেন। তাদের শেল্টারেই তৌহিদ আফ্রিদি নানা কুকীর্তি করে যেতেন। তাদের দাপটেই মুনিয়া হত্যার ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেওয়া হয় বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা।

ক্রাইম এডিশনের ভিডিও প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী জানান, দীর্ঘদিন সম্পর্কে থাকার পর আফ্রিদি হঠাৎ করেই তাকে ছুড়ে ফেলে দেয়। পরে তাকে ডিবি অফিসে ডেকে গায়েব করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। ফলে সংসার করার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় তার। ‘ক্রাইম এডিশন’ এর প্রতিবেদনে ওই নারী আরও বলেন, ‘আমি জানতে পারি, বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে তার (আফ্রিদি) সম্পর্ক আছে। মুনিয়া নামের একটা মেয়ে আছে, তার সঙ্গেও আফ্রিদির সম্পর্ক। এগুলো জেনে ওর সঙ্গে আমি একটু রাগারাগি করি। এটা স্বাভাবিক, আমার একটু খারাপ লাগতেই পারে। আমি যেহেতু ওকে ভালোবেসে ফেলেছি। তো, ওকে আমি বলার পরে খুব বাজেভাবে রিঅ্যাক্ট নেয়। একসময় এরকমও বলে, মুনিয়ার যেরকম অবস্থা হয়েছে, আমারও ঠিক সেরকম অবস্থা হবে। মানে, ইনডিরেক্টলি ও আমাকে হত্যার হুমকিই দেয়।’

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ওই নারীর অভিযোগের সূত্র ধরে কিছু ফোন রেকর্ড ফাঁস করা হয়। যেখানে মুনিয়ার বাসায় আফ্রিদির যাতায়াত এবং ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ মেলে। মুনিয়ার সঙ্গে আফ্রিদির সম্পর্ক মিলিয়ে দেখলে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উন্মোচিত হবে।

একটা ফোন কলে মুনিয়া, ‘অন্য এক নারী ও তৌহিদ আফ্রিদির কথা শোনা যায়। ওই নারী বলছে, তুমি যেটা বললা, সেটা রিপিট কর। মুনিয়া বলছে, রসকষ থাকবে না। তৌহিদ আফ্রিদি বলছে, ওর রসকষ থাকবে না বিয়ের পর। বিয়ের আগেই রস... বিয়ের পরের। মুনিয়াকে বলতে শোনা যায়, উনি কীভাবে বলল, উনাকে আমি কি, তোমার উপরে কিচ্ছু...’

আরেকটি ফোন কলে মুনিয়া বলছে, ‘হ্যাঁ! কোথায় তুমি, কই, কী করো। তৌহিদ আফ্রিদি বলেন, এই যে, আমি এই যে, আমি রাত্রে বেলার মধ্যে আসতেছি। মুনিয়া বলেন, ও, কোথায় আসবা? আফ্রিদি বলেন, তোমাকে পিক করবো রাতে। মুনিয়া বলেন, আচ্ছা, ফোন দিও।’

আরেকটি ফোন কলে শোনা যায়, হ্যালো, ‘হ্যা, কোথায় তুমি? আফ্রিদি বলেন, অফিসে, অফিসে কাজে। মুনিয়া বলেন, অফিসে কি গাড়ি চালাও, হা হা হা! আফ্রিদি বলেন, না না অফিসে। মুনিয়া বলেন, আচ্ছা, এখন কী করবো বলো একটু? আফ্রিদি বলেন, কী করবা? মানে বুঝি নাই। মুনিয়া বলেন, মানে, আজকে দেখা করবা না আমার সাথে একটু? আফ্রিদি বলেন, রাতে রাতে।’

আরেকটি ফোন কলে শোনা যায়, ‘আফ্রিদি বলেন, না আমি মানে, মাত্র ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে বের হচ্ছি। আমার কথা হচ্ছে, আমি আসতে পারবো, কোনো সমস্যা নেই। আমি একটু একটু ড্রাংক। তবে, চলবে? মুনিয়া বলেন, না, সমস্যা কী? ড্রাংক! আফ্রিদি বলেন, আচ্ছা। মুনিয়া বলেন, ওই কাবাইকাবা, আফ্রিদি বলেন, হ্যাঁ! বুঝি নাই। মুনিয়া বলেন, কাইকাবা গাধা কোথাকার! আফ্রিদি বলেন, গাধা কেন? মুনিয়া বলেন, এত ন্যাচারালভাবে কথা বলতে পারতা? আফ্রিদি বলেন, হ্যাঁ! আমি ন্যাচারালি কথা বলি। আর হ্যাঁ! এক পারসেন্ট। এটা তোমাকে জানায়া রাখলাম। আমি রাতে আসতেছি। এসময় মুনিয়া বলেন, এত দুষ্টু ক্যান তুমি?’ প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই আন্দোলন চলাকালে তৌহিদ আফ্রিদি দেশের জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের হুমকি দিয়ে সরকারের পক্ষে কাজে লাগানোর চেষ্টা চালিয়েছেন। তা ছাড়া, আফ্রিদির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার অভিযোগও উঠেছে।

তৌহিদ আফ্রিদির বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত দুটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে জুলাই আন্দোলনে আসাদুল হক বাবু নামের এক বিক্ষোভকারীকে হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে তিনি জড়িত। আরেকটি মামলা হয়েছে বাড্ডা থানায়। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ২০ জুলাই মধ্য বাড্ডা ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায় আফ্রিদি।

মন্তব্য করুন


Link copied