আর্কাইভ  শনিবার ● ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ● ২২ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   শনিবার ● ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
স্বল্প আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম

নিত্যপণ্যের চড়া দাম
স্বল্প আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম

আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)

আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)

শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর বিএনপি

♦ অনেকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে
♦ জিরো টলারেন্স নীতি দলীয় হাইকমান্ডের
শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর বিএনপি

খাদের কিনারে পর্যটন খাত

খাদের কিনারে পর্যটন খাত

সাড়ে ৬ লাখ পুঁজি থেকে বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে ২৮ লাখে

ব্রিটিশ নাগরিকত্বের আড়ালে টিউলিপের বাণিজ্য

শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রাত ০২:০৫

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: ব্রিটিশ নাগরিকত্বের আড়ালে বাংলাদেশে বাণিজ্য করেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি তথা শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক। ২০০৬ সালে তিনি তাঁর মোট সম্পদ দেখান ৪ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকার। অথচ ২০১৫ সালে গিয়ে তা দাঁড়ায় ৩৬ লাখ ৪৬ হাজার ৫০৫ টাকায়। আয়ে ব্যবসার সুনির্দিষ্ট ধরন না উল্লেখ করলেও বছর বছর ব্যবসার আয় বৃদ্ধি দেখিয়েছেন। গত ৩ জুন টিউলিপের ১৩ বছরের আয়কর নথি জব্দ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আদালতের নির্দেশনায় রাজধানীর পুরানা পল্টনে কর অঞ্চল-৬-এর কর অফিসে অভিযান চালিয়ে এ-সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র জব্দ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে এ অভিযান চলে। দুদক সূত্রে জানা যায়, দুদক টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ২০০৬-০৭ থেকে ২০১৮-১৯ করবর্ষ পর্যন্ত টিউলিপের ১৩ বছরের সব আয়কর নথি জব্দ করে। এসব নথিতে টিউলিপের নাম কোথাও রিজওয়ানা সিদ্দিক, কোথাও রিজওয়ানা সিদ্দিক টিউলিপ, আবার কোথাও টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক লেখা হয়েছে। সইগুলোও সব মেলে না, মনে হয় ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির হাতের লেখা। আবার নামের বানানের সঙ্গে কোনো কোনো সইয়ে লেখা বানানেও অসংগতি দেখা যায়। তবে বাবার নাম শফিক আহমেদ সিদ্দিক, মায়ের নাম কোথাও রেহানা সিদ্দিক, কোথাও শেখ রেহানা। জন্ম তারিখ ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮২ সঠিকভাবেই আছে। আর আয়কর নথির ছবিও টিউলিপের। টিউলিপ সিদ্দিকের একটি টিআইএন নম্বর সংগ্রহ করেন এ প্রতিবেদক। তাঁর টিআইএন নম্বরটি হলো ১৮৩১০৬২৮৬৪। এ নম্বরের সূত্র ধরে টিউলিপ সিদ্দিকের আয়কর নথিটিও সংগ্রহ করা হয়। এসব নথি বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০৬ সালের ৩০ জুন আয়ের বিবরণীতে টিউলিপ ব্যবসা থেকে আয় দেখিয়েছেন ১ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা। বাবার কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া স্বর্ণালংকারের মূল্য দেখিয়েছেন ১ লাখ টাকা। তাঁর অন্যান্য সম্পদ দেখিয়েছেন ৪ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকার। এ ছাড়া তাঁর কোনো বাড়ি বা নিজস্ব আবাসন নেই, থাকেন বাবার সঙ্গে। ২০১২ সালে ব্যবসা থেকে আয় বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকায়। ব্যাংক লাভ আসে ৪৫ হাজার ৩৩১ টাকা। ব্যবসায় পুঁজি দেখান ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৬০ টাকা। এ বছর তাঁর মোট সম্পদ দাঁড়ায় ১৮ লাখ ২৪ হাজার ৪৩৭ টাকায়। পারিবারিক ব্যয় হয় ৯৬ হাজার টাকা।

২০১৩ সালে টিউলিপ এক লাফে কৃষি থেকে আয় দেখান ৯ লাখ টাকা। ব্যবসা থেকে দেখান ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংকের লাভ দেখান ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা। ব্যবসায় পুঁজি দেখান প্রায় ২৪ লাখ ১৬ হাজার টাকা। এ বছর তাঁর মোট সম্পদ দাঁড়ায় ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ৪৯৮ টাকার। পারিবারিক ব্যয় দেখানো হয় ৯৬ হাজার টাকার। পর্যালোচনা করে আরও দেখা যায়, তিনি ২০১৪ সালে নিজের নাম ব্যবহার করেন টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক। আর মায়ের নাম রেহানা সিদ্দিক বদলে ব্যবহার করেন শেখ রেহানা। এ বছর পাওয়া ই-টিন নম্বর উল্লেখ করেন ৬২৮২৮১১১২০০২। ২০১৫ সালে টিউলিপ ব্যবসা থেকে আয় দেখান ৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। ব্যাংকের লাভ পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা। তাঁর মোট সম্পদ দাঁড়ায় ৩৬ লাখ ৪৬ হাজার ৫০৫ টাকায়। পারিবারিক ব্যয় ৯৬ হাজার টাকা দেখানো হয়। এ বছর তিনি ইংল্যান্ডে বসবাস করেন বলেও উল্লেখ করেন। এ বছর তাঁর সোনালী ব্যাংকে জমা দেখানো হয় ৩১ লাখ ২৩ হাজার ৭৬ টাকা। এদিকে দুদকের অনুসন্ধান বলছে, টিউলিপ গুলশানে তাঁর ফ্ল্যাট থাকার বিষয়টি আয়কর নথিতে গোপন করে আবাসন কোম্পানিকে অগ্রিম অর্থ পরিশোধের তথ্য দিয়েছেন। যদিও ২০০২ সালের ৩০ অক্টোবরের সাফ কবালা দলিল নম্বর ১৪০৭১ অনুযায়ী গুলশান সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নিবন্ধন করা ফ্ল্যাটটির মালিক হিসেবে ভোগদখলে ছিলেন তিনি। ২০১৫-১৬ করবর্ষে টিউলিপ তাঁর গুলশানের ফ্ল্যাটটি ছোট বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীকে হিবা করেছেন। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এই এমপি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও পরিচয়পত্র গ্রহণ করেছেন এবং ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন।’

মন্তব্য করুন


Link copied