আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ● ৫ পৌষ ১৪৩২
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
ব্রেকিং নিউজ:
অস্ত্রোপচার শেষে মারা যান ওসমান হাদি: ডা. আহাদ

অস্ত্রোপচার শেষে মারা যান ওসমান হাদি: ডা. আহাদ

শুক্রবার দেশে আনা হবে ওসমান হাদির মরদেহ

শুক্রবার দেশে আনা হবে ওসমান হাদির মরদেহ

হাদির শিক্ষা ও শিক্ষকতা জীবন

হাদির শিক্ষা ও শিক্ষকতা জীবন

কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাল ইনকিলাব মঞ্চ

হাদির মৃত্যু
কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাল ইনকিলাব মঞ্চ

যেভাবে হাদি হয়ে উঠেছেন রাজনীতিতে এক অনন্য চরিত্র

বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, রাত ১০:৪৮

Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করার ঘটনা দেশজুড়ে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ আন্দোলনের পরিচিত মুখ হাদি তার ব্যতিক্রমী বক্তব্য ও রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক অনন্য চরিত্রে পরিণত হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১০–২০১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন শরীফ ওসমান বিন হাদি। ঝালকাঠির নলছিটিতে তার গ্রামের বাড়ি; বাবা ছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষক। নেছারাবাদ কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষাজীবন শুরু করে দাখিল ও আলিম সম্পন্ন করেন তিনি, পরে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

পেশাগত জীবনে একসময় সাইফুরস ইংলিশ কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করেছেন হাদি। সর্বশেষ তিনি ইউনিভার্সিটি অব স্কলারস নামের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন বলে জানিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের কর্মীরা।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর হাদির নেতৃত্বেই গড়ে ওঠে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘ইনকিলাব মঞ্চ’। সংগঠনটির ঘোষিত লক্ষ্য—সব ধরনের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ।

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সোচ্চার অবস্থানের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়কে তিনি “পুরো পৃথিবীর জন্য নজির” বলে মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে বিএনপি, সেনাবাহিনী ও অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন দিক নিয়েও তিনি একাধিকবার সমালোচনামুখর হয়েছেন। গত জুলাইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, বিএনপি ‘পুরনো ধারায়’ ক্ষমতায় এলে দুই বছরের বেশি টিকতে পারবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা তুলে ধরে তিনি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবও দেন।

চলতি বছর এনসিপির ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিতে সংঘর্ষের পর গোপালগঞ্জ জেলা ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দেওয়া তার বক্তব্য ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়। পরে তিনি সেই ভাষাকে ‘মুক্তির মহাকাব্য’ আখ্যা দিয়ে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে দুঃখ প্রকাশ করেন।

গত নভেম্বরে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে হাদি দাবি করেন, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি নম্বর থেকে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে; বাড়িতে আগুন ও পরিবারের নারীদের ধর্ষণের হুমকিও পেয়েছেন। জীবননাশের আশঙ্কা সত্ত্বেও ‘ইনসাফের লড়াই’ থেকে পিছু হটবেন না বলেও জানান তিনি।

সম্প্রতি মতিঝিল, শাহজাহানপুর, পল্টন, রমনা ও শাহবাগ থানা এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেন শরীফ ওসমান বিন হাদি। সে লক্ষ্যেই তিনি নিয়মিত জনসংযোগে ছিলেন। তফসিলের পরদিন গুলির ঘটনাটি তাই শুধু একটি হামলাই নয়—দেশের চলমান রাজনৈতিক উত্তাপের প্রতিচ্ছবি হিসেবেই দেখছেন অনেকেই।

মন্তব্য করুন


Link copied