আর্কাইভ  বুধবার ● ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ● ৩ পৌষ ১৪৩২
আর্কাইভ   বুধবার ● ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
জাতীয় পার্টিতে ফিরেছেন রাঙ্গা এবং নূর মোহাম্মদ মন্ডল

জাপার দুর্গ উদ্ধারের মিশন শুরু
জাতীয় পার্টিতে ফিরেছেন রাঙ্গা এবং নূর মোহাম্মদ মন্ডল

ইনশাআল্লাহ আমি ২৫ তারিখ দেশে ফিরে যাচ্ছি: লন্ডনে বিদায়ী সভায় তারেক রহমান

ইনশাআল্লাহ আমি ২৫ তারিখ দেশে ফিরে যাচ্ছি: লন্ডনে বিদায়ী সভায় তারেক রহমান

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে ফুল দেওয়ার প্রস্তুতি

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে ফুল দেওয়ার প্রস্তুতি

জাতীয় পার্টির অফিসে ভাঙচুর, মিটিং পণ্ড

জাতীয় পার্টির অফিসে ভাঙচুর, মিটিং পণ্ড

জাপার দুর্গ উদ্ধারের মিশন শুরু

জাতীয় পার্টিতে ফিরেছেন রাঙ্গা এবং নূর মোহাম্মদ মন্ডল

বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, সকাল ০৯:৫৭

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: ক্ষমা চেয়ে আবার জাতীয় পার্টিতে (জাপা) ফিরেছেন দলের সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। একইসঙ্গে রংপুর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ মন্ডল আবার ফিরেছেন জাতীয় পার্টিতে। তাদের ফিরে আসা জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে। সবাই একসঙ্গে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে জাপার দুর্গ উদ্ধারে নামবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। 

রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে দলটির কো-চেয়ারম্যান রংপুর মহানগর সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এবং রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মো. আজমল হোসেন লেবুর হাতে ফুল তুলে দিয়ে জাপায় ফেরেন নুর মোহাম্মদ। অবশ্য ওই রাতেই আবার ফেসবুক লাইভে এসে নূর মোহাম্মদ মন্ডল দাবি করেন, তিনি এমনিতেই সাবেক মেয়রের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তবে জাপায় যোগ দেননি।

পরদিন সোমবার রংপুর-১ আসন থেকে জাপার তিনবারের সাবেক এমপি দলের সাবেক মহাসচিব ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দেখা করে আবারও জাতীয় পার্টিতে ফিরেছেন। এদিন ফেসবুুক লাইভে এসে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের কাছে ক্ষমা চেয়ে দলে ফেরার কথা জানান।

এ ব্যাপারে মঙ্গলবার বিকালে জানতে চাইলে মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘দলের চেয়ারম্যান আমাকে ক্ষমা করেছেন। আমি জাতীয় পার্টিতে ফিরে এসেছি। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে রংপুর-১ আসনে অবারও দলের প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করতে চাই। তবে এক্ষেত্রে দল আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করতে প্রস্তুত আছি। আর যদি মনোনয়ন না পাই তারপরও দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাবো না।’

এ ব্যাপারে দলের কো-চেয়ারম্যান রংপুর মহানগর সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘আমরা তাকে (মসিউর রহমান রাঙ্গা) দলে আবারও সাদরে গ্রহণ করেছি।’

প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমানকে ব্যাপক ভোটে হারিয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান। মসিউর রহমানও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়েছেন। ২০০১ সালে জাতীয় পার্টি থেকে এ আসনে সংসদ সদস্য হন মসিউর রহমান। ২০০৮ সালে এ আসনে সংসদ সদস্য হন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার। ২০১৪ সালে মসিউর রহমান আবার এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য হয়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী হন। ২০১৮ সালে জাতীয় পার্টি থেকে জয়ী হয়ে তিনি জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ হন।

মসিউর রহমান ২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের ২৬ জুলাই পর্যন্ত জাতীয় পার্টির মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তবে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর রওশন এরশাদ ইস্যুতে পক্ষ নেওয়ায় জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ দলের সব পদ-পদবি থেকে মসিউর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

অপরদিকে, তিন বড় রাজনৈতিক দলের ছায়ায় রাজনৈতিক অভিযাত্রা, দুর্নীতি মামলা ও জেলজীবনের মধ্য দিয়ে যাওয়া রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ মন্ডল আবারও ফিরেছেন তার রাজনৈতিক প্রথম ঠিকানা জাতীয় পার্টিতে। স্থানীয় পর্যায়ে ‘দল পরিবর্তনে সেরা’ হিসেবে পরিচিত মন্ডলের এই দল পরিবর্তন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও জল্পনার সৃষ্টি করেছে। নূর মোহাম্মদ মন্ডলের রাজনৈতিক জীবন জাতীয় পার্টির হাত ধরেই শুরু। এই দল থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। 

নব্বইয়ের দশকের গণঅভ্যুত্থানের পর জাতীয় পার্টির পতন হলে তাৎক্ষণিক যোগ দেন বিএনপিতে। বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বিএনপি সরকারের পতনের পর ২০১৮ সালে তিনি যোগ দেন আওয়ামী লীগে এবং দলের টিকিটে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের উপজেলা নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন।

জানা গেছে, নূর মোহাম্মদ মন্ডল শুধু দল পরিবর্তনের জন্যই নন, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্যও আলোচিত। আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় গত ১৯ জুন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। আদালত পীরগঞ্জে বন বিভাগের ৩ হাজার ১৩০ একরেরও বেশি জমি দখল করে নির্মিত ‘আনন্দনগর’ নামের একটি পিকনিক স্পট ও বিনোদন কেন্দ্র, আটটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ৯ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন।

মন্তব্য করুন


Link copied