নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে ‘চিন্ময়কাণ্ড’ ও আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় পুলিশকে দায়ী করেছেন চট্টগ্রামের আইনজীবীরা। একইসঙ্গে আলিফ হত্যায় পরিবারের করা মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আসামি না করায় ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন তারা।
রোববার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে আদালত প্রাঙ্গণে শোকর্যালি বের করেন আলিফের সহকর্মী আইনজীবীরা। র্যালি শেষে সংক্ষিপ্ত সভায় দেওয়া বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী এ ক্ষোভের কথা জানান।
এ সময় আদালত প্রাঙ্গণের ঘটনায় পুলিশকে দোষারোপ করে আইনজীবী নেতা নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমি সবসময় বলে এসেছি- ঘটনার জন্য পুলিশ দায়ী। আমরা অনেক রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেফতার করে আনতে দেখেছি। পুলিশ তাদের রাজনৈতিক সমর্থক কাউকে কাছে ভিড়তে দেয়নি। কিন্তু চিন্ময় দাসকে যখন প্রিজন ভ্যানে তোলা হলো, তখন তার সন্ত্রাসী সমর্থকরা গাড়ি আটকে রেখেছিল।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি- চিন্ময় দাস পুলিশের মাইক ব্যবহার করেছেন। সেই মাইক ব্যবহার করে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। চিন্ময় দাসের ঐ বক্তব্যের পরে তার নির্দেশনার মধ্য দিয়ে পর্যায়ক্রমে সমস্ত ত্রাস, ভাঙচুর, মসজিদে হামলা, তাণ্ডব— সর্বোপরি আমার ভাই আলিফকে হত্যা করা হয়েছে।
২৬ নভেম্বরের ঘটনার পর যেসব মামলা হয়েছে, প্রতিটি মামলায় চিন্ময় দাসকে এক নম্বর আসামি করার দাবি জানান আইনজীবী সমিতির শীর্ষ এ নেতা।
তিনি বলেন, ইসকনের সন্ত্রাসী চিন্ময় দাসকে গ্রেফতার করা নিয়ে গত ২৬ নভেম্বর কোর্ট বিল্ডিংয়ে পর্যায়ক্রমে যে ঘটনাগুলো হয়েছে এবং আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার পর যে মামলাগুলো করা হয়েছে, প্রতিটি মামলায় চিন্ময় দাসকে এক নম্বর আসামি করতে হবে। আমরা আইনজীবীরা মানবো না, যদি চিন্ময় দাসকে এক নম্বর আসামি করা না হয়।
আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলার চার্জশিট দ্রুত দেওয়ার দাবিও জানান তিনি।
নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, যে হত্যা মামলা হয়েছে, সেই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। এছাড়া প্রত্যক্ষদর্শী-সাক্ষী রয়েছে। আমি পুলিশকে অনুরোধ করবো— এই মামলার চার্জশিট দিতে দেরি হওয়ার কথা নয়। যারা গ্রেফতার হয়নি, তাদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনুন। আমরা আমাদের প্রিয় ভাই আলিফের হত্যার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাব না।
এর আগে, আইনজীবী আলিফ হত্যার প্রতিবাদে বুকে কালোব্যাচ ধারণ করে শোকর্যালি করেন আইনজীবীরা। র্যালিটি আদালত চত্বরের সোনালী ব্যাংক কার্যালয়ের সামনে থেকে লালদীঘি হকার্স মার্কেট ঘুরে আদালত চত্বরের দোয়েল ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এ সময় তারা ‘চিন্ময় জঙ্গি, দিল্লির সঙ্গী’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ইসকনের ঠাঁই নাই’ এসব স্লোগান দিতে থাকেন।
২৬ নভেম্বর আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ডের পর ২৭ ও ২৮ নভেম্বর জেলা আইনজীবী সমিতির কর্মসূচি অনুযায়ী কর্মবিরতি পালন করেন চট্টগ্রামের আইনজীবীরা। এরপর ২৯ ও ৩০ নভেম্বর ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন। ফলে চারদিন কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর আজ রোববার (১ ডিসেম্বর) থেকে আবারো কাজে যোগ দিয়েছেন আইনজীবীরা।