গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধায় উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ধর্ষণ ও নারী-শিশু নির্যাতনের ঘটনা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত জেলায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন অন্তত ১২০ জন নারী ও শিশু। এছাড়া ১৫৫টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে।
জেলা হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, ধর্ষণের শিকারদের মধ্যে ৩ থেকে ১০ বছর বয়সী ১৪ জন, ১১ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৮৭ জন এবং ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে ১৯ জন। সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন স্কুল-কলেজগামী কিশোরী ও শিশু। হাসপাতালের হিসাব বলছে, প্রতি মাসেই গড়ে প্রায় ১৫ জন নারী-শিশু ধর্ষণের পর ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন অথবা পরীক্ষা করিয়েছেন।
নারী ও শিশু অধিকারকর্মীরা বলছেন, বিচারহীনতা, অশ্লীলতা, পর্নোগ্রাফি এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের হাতে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের অবাধ প্রবেশাধিকার এসব ঘটনার অন্যতম কারণ। যদিও অনেক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়, তবে আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে তারা পার পেয়ে যায়। ফলে অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
গাইবান্ধা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিক্তু প্রসাদ বলেন, অপরাধীরা শাস্তি না পাওয়ায় এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে। কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি।
বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র গাইবান্ধার সংগঠক কলি রানী বর্মন বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের আরও কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন। মামলার দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) শরিফুল আলম বলেন, আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি অভিভাবক, শিক্ষক ও সচেতন মহলকে এগিয়ে আসতে হবে। শুধু পুলিশ একা এসব প্রতিরোধ সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে গাইবান্ধায় এক বছরে ১৬২ জন নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং ২২২ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তুলনামূলকভাবে এ বছর ধর্ষণ ও নির্যাতনের হার আরও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।