আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ১৯ আগস্ট ২০২৫ ● ৪ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ১৯ আগস্ট ২০২৫

তিস্তায় পানি বাড়ছে, যে কোন সময় বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে

রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, রাত ০৮:৫৫

Advertisement Advertisement

স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ টানা বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। এতে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।
রবিবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যা ৬ টায় বিপৎসীমার মাত্র দশমিক ৭ সেন্টিমটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যে কোন সময় তিস্তা ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এর আগে সকাল ৬টা বেলা ১২টা ও বিকাল ৩টায় ডালিয়া পয়েন্টে  তিস্তার পানি সমতল রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ০০মিটার (অটো গেজ)। যা বিপৎসীমার মাত্র ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল (বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার)। তবে সকাল ৯টায় দুই সেন্টিমটার পানি কমেছিল। তবে সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার মাত্র ৭ সেন্টিমটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। যা রাত ৮টায় আরো দুই সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায়।

এদিকে উজানের ঢলে নদীর পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাটই খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি কমলা সংকেত জারী করা হয়েছে। তবে বিপৎসীমা অতিক্রম করলে লাল সংকেত দেয়া হবে। পাশাপাশি নিম্নাঞ্চল এলাকার বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে থাকার জন্য বলা হয়েছে।

অপর দিকে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার (২৯.৩১) ৩৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল সন্ধ্যা ৬ টার দিকে। সেখানেও তিস্তার পানি হু-হু করে বাড়ছে বলে সেখার কার গেজরিডার আকতার হোসেন জানান। 
এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধির কারনে তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছে। চরখড়িবাড়ি, বাইশপুকুর, ঝাড়শিঙ্গেশ্বর, চরবাসী ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

সূত্রমতে, উজানের ঢল আরও বৃদ্ধি পেলে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলে নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর ও কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের বসবাড়িগুলো তলিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে লালমনিরহাট ও নীলফামারীর চর গ্রামগুলোতে নদীর পারি প্রবেশ করতে শুরু করেছে বলে জানান আইউব আলী নামের এক ব্যক্তি। 
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, শনিবার (১৯ জুলাই) রাত থেকে তিস্তা অববাহিকা সহ বিভিন্ন নদনদী অববাহিকায় ভারি ও অতিভারি বৃস্টি হয়েছে। এতে রবিবার (২০ জুলাই) সকাল ৯টা পর্যন্ত  তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে ৯২ মিলিমিটার, কাউনিয়া পয়েন্টে ১৪৮ মিলিমিটার, কুড়িগ্রামের পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৮৭ মিলিমিটার, কুড়িগ্রাম সদরে ৭৮ মিলিমিটার, রংপুর সদরে ৯০ মিলিমিটার, নীলফামারী সদরে ২৭ মিলিমিটার, পঞ্চগড়ের করতোয়া পয়েন্টে ১৪০ মিলিমিটার, ঠাকুরগাঁও টাঙন পয়েন্টে ৮৬ মিলিটার বৃস্টিপাত রেকর্ড করা হয়। সূত্রটি জানায়  তিস্তা নদীর ওপারে ভারতের জলপাইগুড়ি পয়েন্টে ১৩২ মিলিমিটার ও কোচবিহার  পয়েন্টে ৬২ মিলিমিটার বৃস্টিপাত রেকর্ড করার খবর পাওয়া গেছে। এতে তিস্তা নদী সহ করতোয়া, দুধকুমার ও ধরলা নদীর পানি হু-হু করে বাড়ছে। নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, ভারি ও অতিভারি বৃষ্টি এবং উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি  গত ২৪ ঘন্টায় তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে  ৪৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে তিস্তা অববাহিকার বাসিন্দাদের কমলা সংকেতের মাধ্যমে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি জানান পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ চি গেট দিয়ে প্রতিমিনিটে ৪ লাখ কিউসেক পানি অপসারনে সিষ্টেম রয়েছে। 

মন্তব্য করুন


Link copied