নিউজ ডেস্ক: দেশের সর্ব উত্তরের জনপথ পঞ্চগড় ও এর পার্শ্ববর্তী জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে হেমন্তেই অনুভূত হচ্ছে শীত। গত ২ দিন ধরে পঞ্চগড়সহ পার্শ্ববর্তী জেলা ঠাকুরগাওয়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির সঙ্গে বয়ে যাওয়া ঝোড়ো ও হিমেল হাওয়ায় বেড়েছে শীতের অনুভূতি।
অবশ্য কয়েকদিন থেকেই পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাও জেলায় শীতের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে অবস্থানগত কারণে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাও জেলা হিমালয় পর্বতের কাছাকাছি হওয়ায় প্রতি বছরই আগাম শীত নামে। শীত বিদায় হয় সবার পরে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ২০ দশমিক ৫ ডিগ্রির ঘর ছুঁয়েছে। এদিকে প্রতিদিনই ভোররাত থেকে শুরু করে সকাল ৯টা পর্যন্ত পুরো এলাকা কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকছে। দিনের বেলায় যদিও তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ছে, কিন্তু সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে শীতের মাত্রা বেড়েই চলছে। এরই মধ্যে রাতে কাঁথা-কম্বল গায়ে জড়িয়ে স্থানীয়দের ঘুমাতে হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার ২ দিনে ১১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে বলে জানিয়েছে।
এদিকে অব্যাহত বৃষ্টির কারণে শুক্রবার সারাদিন স্থানীয় লোকজন নেহায়েত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হয়নি। রাস্তাঘাট ও হাট বাজারে লোকজনের তেমন উপস্থিতিও তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারনে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাওয়ের সহস্রাধিক শ্রমজীবী খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।
তবে শীতের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন আগেভাগেই লেপ সেলাই করাসহ শীতবস্ত্র সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউবা আবার পুরোনো লেপ নতুন করে সেলাই করে নিচ্ছেন। তবে শীতের প্রস্তুতি নেই খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষদের। হাতে কাজ কম ও দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কারণে সংসার সামলানোটাই তাদের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। তবে শীত নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
লেপ তৈরি করার মতো তাদের কোন সামর্থ নেই। প্রতিবছর প্রচণ্ড শীতে কাহিল মানুষদের জন্য সরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিরতণ করা হয়। কিন্তু এগুলোর পরিমাণ খুবই নগণ্য। বেসরকারি উদ্যোগে কিছু শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও শহরের আশপাশেই এর কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকে। প্রত্যন্ত এলাকার লোকজন এই সকল শীতবস্ত্রের দেখাই পায় না।
এ প্রসঙ্গে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, হিমালয় কন্যা হিসেবে পরিচিত আমাদের পঞ্চগড়ে অন্য জেলার তুলনায় আগেই শীত শুরু হয়। কয়েকদিন ধরে শীতের আমেজ অনুভূত হচ্ছে। শীত নিয়ে দুঃস্থ ও খেটে খাওয়া মানুষের দূর্ভোগ লাঘবে প্রতি বছরের মত এবারও আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা শীতের কম্বলসহ পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের চাহিদা জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।