আর্কাইভ  সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫ ● ১০ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫
সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

► এক চুক্তি, চার সমঝোতা স্মারক ও এক কর্মসূচি সই
একাত্তর ইস্যু দুবার মীমাংসিত, বললেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী
বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

উল্টো বাড়ছে দিনদিন, চলছে শুধুই আলোচনায়
রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

নিম্নমানের সামগ্রীতে সড়ক নির্মান, চিঠি দিয়েও নিরুপায় এলজিইডি

শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, বিকাল ০৬:২৪

Advertisement Advertisement

লালমনিরহাট প্রতিনিধি : লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় নিম্নমানের সামগ্রীতে চলছে সড়কের নির্মান কাজ। একদিন পর খুলে পড়ছে প্লাসাইটিংয়ের ইটের গাথুনী। কর্তৃপক্ষের চিঠিতেও কর্ণপাত নেই নির্মানকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের। ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারের সাড়ে ৬ কোটি টাকা। 
 
স্থানীয়দের অভিযোগ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর(এলজিইডি) সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভেলাবাড়ি বাজার জিসি থেকে দুর্গাপুর জিসি সড়কটি দীর্ঘ দিন ধরে খানাখন্দরে চলাচলের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়ে। তাই এটি সংস্কার করতে প্রকল্প গ্রহন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর। দরপত্র অনুযায়ী ৯ কিলো ২২৫ মিটার দুরুত্বের সড়কের বিপরীতে বরাদ্ধ দেয়া হয় ৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। প্রকল্পটি কাজের দায়িত্ব পান সৈকত এন্টারপ্রাইজ নামে বগুড়ার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। চলতি বছরের ১৭ মার্চে করা চুক্তি মতে কাজটি আগামী আগস্ট মাসে সমাপ্ত করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত অর্ধেকের বেশি  কাজই বাকী রয়েছে। ইতোমধ্যে দুই কিস্তিকে কিছু অর্থ ছাড় দিয়ে প্রকৌশল দপ্তর। 
 
চুক্তিমতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু প্রথম থেকে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছে। নিম্নমানের ইট খোয়া ব্যবহার করে দায়সারা কাজ করতে শুরু করে। স্থানীয়রা ও বাস্তবায়নকারী আদিতমারী এলজিইডি বারংবার বাঁধা দিলেও কর্ণপাত নেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির। এ সড়কের নির্মান কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারনে কাজের মান নিয়ে অসন্তষ প্রকাশ করে খোদ জেলা প্রশাসন। মুখের কথায়  কাজ না হওয়ায় কাজের তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা প্রকৌশলী গত ২২ এপ্রিল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নিম্নমানের সামগ্রী সড়াতে এবং কাজের গুনগত মান ভাল করার তাগিদ দিয়ে পত্র পাঠান। এতেও কোন কাজ হয়নি। কার্যত নিরুপায় হয়ে পড়েছে এলজিইডি। 
 
সেই সড়কে মোট ৬টি পুকুর পাড়ে প্লাসাইটিং ধরা হয়েছে। এসব প্লাসাইটিংয়ে এক নম্বর ইট দিয়ে গাধুনির ওয়াল করার কথা। সেই প্লাসাইটিংয়ে দেয়া হয়েছে নিম্নমানের ইট ও নাম মাত্র গাধুনি। ইটের জয়েন্টে নাম মাত্র সিমেন্ট আর অধিক পরিমানের বালু দিয়ে করা হয়েছে মিক্সিং(মশলা)। যা গাধুনির পর দিনই ভেঙে পড়েছে। এটা দেখে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানালে সেই গাধুনি ভেঙে নতুন করে দেয়াল করা হলেও ভেঙে পড়া নিম্নমানের ইটই ব্যবহার করা পুনরায় হয়েছে। এমন খবরে মুঠোফোনে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন উপ সহকারী প্রকৌশলী(এসও) পারভেজ রুবেল। 
 
স্থানীয় পথচারি জুয়েল বলেন, সিমেন্ট তো নেই, বালু দিয়ে কোন রকম ইট জয়েন্ট দেয়া হয়। গাধুনি শেষ হলেই প্লাসাইটিং মাটিতে ঢেকে দেয়া হচ্ছে। যার কারনে গাধুনির পরে নিম্নমানের কাজ বুঝার উপায় থাকে না। কোন কোন দিন রাতেও কাজ করে শ্রমিকরা। মুলত কাজটা দায়সারা গোছের করা হচ্ছে। 
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন ঠিকাদার বলেছেন, কাজটি পান বগুড়ার একজন ঠিকাদার। তার কাছ থেকে এ জেলার তিনজনের একটি প্রভাবশালী মহল বেশি কমিশন দিয়ে ক্রয় করেছেন। যার কারনে নিম্নমানের সামগ্রীতে লোকসানের ভয়ে নামমাত্র কাজ করছে।
 
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার দাবি করা এক ব্যাক্তি বলেন, কিছু নিম্নমানের ইট এসেছিল তা ভুলে শ্রমিকরা ব্যবহার করেছে। পরে সেই দেয়াল ভেঙে নতুন করে গাধুনি দেয়া হয়েছে। নিম্নমানের হলেও পুর্বের ইটে সিমেন্ট বালু লাগার কারনে তা তো ফেরত নিবে না ভাটা। তাই এসব ব্যবহার করা হচ্ছে। যেসব ইট অব্যবহৃত স্টক ছিল তা সড়িয়ে ভাল ইট আনা হচ্ছে। শ্রমিকদের ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিকের সাথে কথার সুযোগ হয়নি। 
 
প্রকল্পটির সুপারভাইজার উপ সহকারী প্রকৌশলী পারভেজ রুবেল বলেন, নিম্নমানের ইটের ভেঙে পড়া ওয়াল পুনরায় গাধুনিতে পুর্বের ইট ব্যবহার করার অভিযোগে ওই প্লাসাইটিংয়ের কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে বাকী প্লাসাইটিংয়ের কাজ কিছুটা সন্তোষজনক হয়েছে। 
 
আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হক বলেন, শুরু থেকে এ প্রকল্পটিতে নিম্নমানের সামগ্রী ইট খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। অনেক বার মৌখিক ভাবে বলেছি, লিখিত ভাবেও  একবার চিঠি দেয়া হয়েছে। কোন কাজ হচ্ছে না। দ্বিতীয় দফায় পত্র পাঠানো হচ্ছে। এ প্রকল্প নিয়ে জেলা প্রশাসনও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। আমরা বিধিমত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

মন্তব্য করুন


Link copied