নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ সচিবালয় ও প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় মিছিল, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে গত ১০ মে একটি আদেশ জারি করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তা সত্ত্বেও যমুনার পাশে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
যদিও সেখানে নির্বিকার দেখা গেছে পুলিশকে। শুক্রবার (১৬ মে) সকালে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা সংলগ্ন কাকরাইলে শিক্ষার্থীদের অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। আবাসন ভাতাসহ তিন দফা দাবি আদায়ের এ আন্দোলনে তাদের সঙ্গে আছেন জবির শিক্ষকরাও।
১৪ মে থেকে এখানে কর্মসূচি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। তার আগের দিন গত ১৩ মে দুপুরে দাবি আদায়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি দল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসিতে যান। কিন্তু সেখান থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় ১৪ মে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
পরে ১৪ মে ঘোষিত কর্মসূচি ‘লং মার্চ টু যমুনা’ শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিং মোড় এলেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশের টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন অনেকে।
এরপর থেকে কাকরাইল মোড় ঘিরে চলছে জবির শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি। এই আন্দোলনকে ঘিরে ওই এলাকায় কর্মদিবসে তীব্র যানজট দেখা যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের। যদিও শুক্রবার ছুটির দিনে যানবাহন চলাচল কম হওয়ায় যানজট তেমন দেখা যায়নি।
কাকরাইলে আন্দোলনের বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আন্দোলনস্থলে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি আড়াতে তারা (পুলিশ) সেখানে কর্তব্যরত আছেন।
বেলা সাড়ে ১১টার পর কাকরাইল মোড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অবহেলিত, বঞ্চিত, নিষ্পেষিত এটি ঐতিহাসিকভাবে সত্য। এই বৈষম্য নিরসনের জন্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই এক। সুতরাং আমাদের দাবি পূর্নাঙ্গরূপে মানতে হবে। আমরা এমন একটি পর্যায়ে উপস্থিত হয়েছি, এখান থেকে পেছনে যাওয়ার সুযোগ নাই। তাই সবার সহযোগিতা ও অংশগ্রহণ চাই।
তিনি বলেন, আমরা এখান থেকে এক চুল সরব না। আমাদের রক্তের ওপরে প্রতিষ্ঠিত সরকার যদি চোখ রাঙিয়ে কথা বলে, হুমকি-হুমকি-ধমকি দেয়, যদি স্টিম রোলার চালানোর চেষ্টা চালায়, তাহলে আমরা তা রুখে দেব। এ আন্দোলন তখন কাকরাইল পয়েন্টে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটা কোথায় যাবে, জানি না, এর দায়-দায়িত্ব আমরা নেব না।