আর্কাইভ  বুধবার ● ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ● ২ আশ্বিন ১৪৩২
আর্কাইভ   বুধবার ● ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রংপুরে সড়ক অবরোধ করে কারিগরি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রংপুরে সড়ক অবরোধ করে কারিগরি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রংপুরসহ ৩ বিভাগে ভারী বৃষ্টির আভাস

রংপুরসহ ৩ বিভাগে ভারী বৃষ্টির আভাস

বেরোবির ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর ইরিনা বহিস্কার

জাল সনদে ১২ বছর চাকুরি !
বেরোবির ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর ইরিনা বহিস্কার

রংপুরের পীরগাছা স্টেশন এলাকায় যাত্রীবাহী ট্রেনের পাঁচ বগি লাইনচ্যুত

১১ ঘণ্টা পর উদ্ধার পদ্মরাগ
রংপুরের পীরগাছা স্টেশন এলাকায় যাত্রীবাহী ট্রেনের পাঁচ বগি লাইনচ্যুত

রংপুরে সড়ক অবরোধ করে কারিগরি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রাত ১২:০০

Advertisement

মমিনুল ইসলাম রিপন: ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের হত্যার হুমকির প্রতিবাদ ও সাত দফা দাবিতে  সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কারিগরি শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সাড়ে ১২টার দিকে তারা মহানগরীর ব্যস্ততম শাপলা চত্বরে সড়ক অবরোধ করেন। এতে যান চলাচল ব্যাহত হবার পাশাপাশি আশপাশের অলিগলিসহ বিকল্প সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

এর আগে, সকাল এগারোটায় রংপুর পলিকেটনিক ইনস্টিটিউটে নগরীর বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সমবেত হন। সেখান থেকে সাড়ে এগারোটার দিকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি নগরীর সেন্ট্রাল রোড, পায়রা চত্বর, জাহাজ কোম্পানী মোড়, প্রেসক্লাব চত্বর ও গ্রাণ্ড হোটেল মোড় হয়ে শাপলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

পরে সেখানে সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস এবং প্রকৌশল কর্মক্ষেত্র কুক্ষিগত করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে কারিগরি শিক্ষাকে অবহেলা করা হচ্ছে এবং প্রকৌশল কর্মক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য অধিকার হরণ করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদেই তারা রাস্তায় নেমেছেন। ডিপ্লোমা খাতে বিএসসিধারীদের ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবি তোলেন তারা।

কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মিল্লাত হোসেন, শাওন হোসেন, আশিক আবরার, মেহেদী হাসানসহ আরো অনেকে।

এসময় শিক্ষার্থীরা জানান, ডিপ্লোমাধারীদের জন্য সরকার কর্তৃক স্বীকৃত নবম ও দশম গ্রেডের অগ্রাধিকার থেকে বঞ্চিত করতে স্বড়যন্ত্র করছে বিএসসি প্রকৌশলরা। তারা একের পর এক ডিপ্লোমাদারীদের ৭ দফা আন্দোলনকে বানচাল করতে অযৌক্তিক ৩ দফা দাবি তুলেছে এবং কর্মক্ষেত্রেও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এই হুমকি দাতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।

একই সাথে প্রকৌশল সেক্টরে পেশাগত সমস্যা নিরসনে গঠিত অসম কমিটি ও ডিগ্রী প্রকৌশলের তিন দফা দাবি প্রত্যাখ্যান করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে শাপলা চত্বর, স্টেশন রোড, লালবাগ রোডসহ আশপাশে যানবাহন চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। সড়কের দুপাশে তীব্র যানজটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও পথচারীরা। প্রায় দুই ঘণ্টা পর সড়কে অবস্থান কর্মসূচি শেষ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় দাবি আদায়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা।

অটোরিকশায় (ইজিবাইক) করে রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন নগরীর আলমনগর এলাকার মাহিদুল ইসলাম। কিন্তু শাপলা চত্বরে তীব্র যানজটে আটকা পড়ে বিকল্প পথে নূরপুর-গুপ্তপাড়া সড়ক হয়ে যেতে চেষ্টা করেও বিলম্বিত হয় তার যাত্রা। সড়ক অবরোধ করে এমন ভোগান্তি বাড়ানোয় ক্ষুদ্ধ এই অটোরিকশা যাত্রী বলেন, মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা চিন্তা করা উচিত। কিন্তু কেউ তা না ভেবেই এখন কথায় কথায় রাস্তায় বসে পড়ে আন্দোলন করছে। শিক্ষার্থী, রাজনীতিক নেতা সবাই এখন নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। মানুষ মরে পড়ে থাকলেও তাদের মাথা ব্যথা নেই।

সড়কে যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের প্রচেষ্টা চোখে পড়লেও সংকীর্ণ সড়কের দু’পাশের ফুটপাত দখল, সড়কের উপর অবৈধ স্থাপনাসহ যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে তীব্র আকার ধারণ করে যানজট। যার প্রভাব পড়ে বিকল্প সড়কের পাশাপাশি নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে।

এদিকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের দাবির মধ্যে রয়েছে– হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল হওয়া ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি ও নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল করা; ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে বয়সসীমাহীন ভর্তির সুযোগ বন্ধ করে উন্নতমানের চার বছর মেয়াদি কারিকুলাম চালু করা এবং ধাপে ধাপে ইংরেজি মাধ্যমে একাডেমিক কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেওয়া। ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বাদ দিয়ে নিম্নপদে নিয়োগ বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবলকে কারিগরি সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিষিদ্ধ করা এবং শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ।

শিক্ষার্থীরা আরও দাবি তুলেছেন– স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে। একইসঙ্গে উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণাধীন প্রকৌশল কলেজগুলোতে অস্থায়ী ক্যাম্পাস চালুর মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

মন্তব্য করুন


Link copied