নিউজ ডেস্ক: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার জন্য ২৫ ডিসেম্বর তারিখটি বেছে নেওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমানো এবং জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া। এমনটাই জানিয়েছেন বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে গঠিত অভ্যর্থনা কমিটির সদস্য অধ্যাপক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল।
বৃহস্পতিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনি জানান, ২৫ ডিসেম্বর সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় এবং পরবর্তী শুক্র ও শনিবার মিলিয়ে টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় এ সময় রাস্তায় মানুষের চাপ তুলনামূলকভাবে কম থাকবে। পাশাপাশি বছরের এই সময়ে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ থাকে এবং অনেক মানুষ ভ্রমণ বা অবকাশ যাপনে থাকেন। ফলে বড় জমায়েত হলেও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কাজে উল্লেখযোগ্য বিঘ্ন ঘটবে না বলে আশা করা হচ্ছে।
অধ্যাপক আলমগীর পাভেল বলেন, সাধারণত বড় রাজনৈতিক কর্মসূচি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা মানিক মিয়া এভিনিউয়ের মতো স্থানে অনুষ্ঠিত হলে পুরো শহরের যান চলাচল ব্যাহত হয়। তবে জনস্বার্থ বিবেচনায় এবার সংবর্ধনার স্থান শহরের এক প্রান্তে নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে মূল নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থা সচল থাকে।
তিনি আরও জানান, মানুষের নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিত করতে মহাখালী, আবদুল্লাহপুর ও বিমানবন্দরের সামনে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। এসব হেল্প ডেস্ক থেকে স্বেচ্ছাসেবকরা বিদেশগামী যাত্রী ও বিশেষ করে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে এসকর্ট সেবা দেবেন।
তার ভাষায়, জনগণের নেতা হিসেবে তারেক রহমান এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাননি, যাতে সাধারণ মানুষ কষ্টের মুখে পড়ে। সে কারণেই এমন সময় ও পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে জনজীবন ব্যাহত না হয়ে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে কর্মসূচি সম্পন্ন করা যায়।
এই সিদ্ধান্তকে একটি বড় পারিবারিক আয়োজনের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, যেমনভাবে মানুষ নিজের অনুষ্ঠানে পাড়া-প্রতিবেশীর অসুবিধা এড়াতে ছুটির দিন বেছে নেয় এবং চলাচলের পথ বন্ধ না রাখার চেষ্টা করে, এখানেও তেমন জনবান্ধব চিন্তা থেকেই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এক-এগারোর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ২০০৭ সালে গ্রেপ্তার হন তারেক রহমান। ২০০৮ সালে জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য তিনি সপরিবার যুক্তরাজ্যে যান এবং দীর্ঘদিন লন্ডনে অবস্থান করেন। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে উচ্চ আদালত তার বিরুদ্ধে দেওয়া সাজার রায় বাতিল করেন এবং আইনি প্রক্রিয়ায় একাধিক মামলা থেকে তিনি অব্যাহতি পান। ফলে দেশে ফেরার আইনি বাধা দূর হয়।
ঢাকার উদ্দেশে তারেক রহমান গতকাল (২৪ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশের বিজি-২০২ ফ্লাইটে রওনা হন। তার সঙ্গে রয়েছেন স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমান। ফ্লাইটটি আজ দুপুর পৌনে ১২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।