আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ১৯ আগস্ট ২০২৫ ● ৪ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ১৯ আগস্ট ২০২৫

‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ’ কেন, খসড়ায় কী আছে?

সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, রাত ১০:২৩

Advertisement Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে কোনো প্রশ্ন না করার বিধান রেখে নতুন একটি অধ্যাদেশ জারির প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’ শিরোনামে এর খসড়ায় সম্প্রতি অনুমোদন দিয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদ।

খসড়াটি এখন গেজেট আকারে প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তবে ঠিক কত দিনের মধ্যে অধ্যাদেশটি জারি হতে পারে, সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সরকারের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘প্রয়োজনীয় সব দিক মাথায় রেখেই খসড়াটি প্রস্তুত করা হয়েছে। যতটুকু জানি, শিগগিরই সেটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হতে পারে।’

সরকারের পক্ষ থেকে এই অধ্যাদেশটি নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা না হলেও সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন সরকারের একটি আইনি বৈধতা দেওয়ার জন্যই এই অধ্যাদেশটি করা হচ্ছে। অধ্যাদেশে উপদেষ্টা নিয়োগের কিছু শর্তও যুক্ত করা হয়েছে।

যদিও অধ্যাদেশের খসড়ায় থাকা প্রশ্ন না করার বিষয়টিকে দায়মুক্তি বলে সমালোচনাও রয়েছে। কিন্তু ঠিক কী আছে খসড়া অধ্যাদেশটিতে? তিন মাস রাষ্ট্র পরিচালনার পর সরকার এখন অধ্যাদেশ জারির তাগিদ অনুভব করছে কেন?

খসড়ায় কী আছে?

নতুন যে অধ্যাদেশটির খসড়া অন্তর্বর্তী সরকার অনুমোদন দিয়েছে, সেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠন, ক্ষমতা, কার্যাবলি, মেয়াদসহ আরো বেশ কিছু বিষয়ে বলা হয়েছে। 

গণ-আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের তিন দিনের মাথায় শপথ গ্রহণ করে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশ অনুযায়ী ওই দিন থেকে শুরু করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, অর্থাৎ বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের পর নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার দিন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব পালন করবে।

বিলুপ্ত হওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতোই এই সরকারে রয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের পদমর্যাদা। তবে রাষ্ট্রপতির নির্দেশে গঠিত এই সরকারের আকারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু উল্লেখ করা হয়নি অধ্যাদেশের খসড়ায়। বলা হয়েছে, একজন প্রধান উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টা যতজন নির্ধারণ করবেন, ততজন উপদেষ্টার সমন্বয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হবে।

এ ক্ষেত্রে দেশের স্বনামধন্য ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করবেন রাষ্ট্রপতি। এরপর প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শ অনুযায়ী অন্য উপদেষ্টারা নিযুক্ত হবেন।

শপথ গ্রহণের পর সরকারি কর্মচারীদের সহায়তায় উপদেষ্টা পরিষদ রাষ্ট্র পরিচালনা করবে।

একই সঙ্গে দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে এবং সংবিধান বা অন্য কোনো আইন দিয়ে নির্ধারিত দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সাহায্য ও সহায়তা দেবে অন্তর্বর্তী সরকার।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারে এতদিন ২১ জন উপদেষ্টা দায়িত্ব পালন করলেও ধীরে ধীরে সেটির আকার বাড়ছে।

প্রশ্ন তোলা যাবে না

অধ্যাদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে যে, অন্তর্বর্তী সরকার গঠন, সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বা কোনো উপদেষ্টার নিয়োগে কোনো ত্রুটি থাকলে শুধু এ কারণে তাদের কোনো কাজ অবৈধ হবে না। বিষয়টি সম্পর্কে আদালতে কোনো প্রশ্নও তোলা যাবে না, এমনকি মামলা করা যাবে না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

অধ্যাদেশের খসড়ায় আরো বলা হয়েছে যে, সংবিধান ও আপাতত বলবৎ অন্য আইনে ভিন্নতর যা কিছুই থাকুক না কেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়া এবং নতুন সংসদ গঠিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী যে তারিখে কার্যভার গ্রহণ করবেন, সেই তারিখের (উভয় দিনসহ) মধ্যবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রয়োগ করা সব ক্ষমতা, অধ্যাদেশ, বিধিমালা, প্রবিধানমালা, জারি করা প্রজ্ঞাপন, আদেশ, কর্মকাণ্ড ও গৃহীত ব্যবস্থা আইনানুযায়ী যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে বলে গণ্য হবে। সুপ্রিম কোর্ট বা অন্য কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষ এর বৈধতা সম্পর্কে কোনোভাবেই প্রশ্ন উত্থাপন বা একে অবৈধ বা বাতিল করতে পারবে না।

উপদেষ্টা হতে পারবেন না যারা

প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের নাগরিক না হলে এবং বয়স ২৫ বছর পূর্ণ না হলে তিনি উপদেষ্টা হতে পারবেন না। কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন কিংবা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করলেও তিনি শপথ নিতে পারবেন না।

একইভাবে, ব্যক্তি যদি কোনো আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষিত হন বা দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর দায় থেকে অব্যাহতি না পেয়ে থাকেন, তাহলেও তিনি উপদেষ্টার পদে বসতে পারবেন না।

আর নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্তত দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে এবং মুক্তি পাওয়ার পর পাঁচ বছর পার না হলে উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার পদে যেতে পারবেন না।

বাংলাদেশ কোলাবোরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল) অর্ডার, ১৯৭২ এর অধীন কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হলেও তিনি উপদেষ্টা হতে পারবেন না। অর্থাৎ রাজাকার বা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত কেউ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকতে পারবেন না।

পাশাপাশি উপদেষ্টার পদে বসতে হলে ব্যক্তিকে ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না’- মর্মে সম্মতি দিতে হবে।

জরুরি অবস্থা প্রধান উপদেষ্টার হাতে

প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শ গ্রহণের বিষয়ে খসড়ায় বলা হয়েছে যে, বিদ্যমান অন্যান্য আইনে যা কিছুই বলা থাকুক না কেন অন্তর্বর্তী সরকারের সময় প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শ নিয়ে রাষ্ট্রপতি কাজ করবেন। এক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা ঘোষণার বৈধতার জন্য ঘোষণার আগে তাকে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিস্বাক্ষর নিতে হবে।

অন্যদিকে, পদত্যাগ, মৃত্যু বা অন্য কোনো কারণে প্রধান উপদেষ্টার পদ শূন্য হলে উপদেষ্টাদের মধ্য থেকে রাষ্ট্রপতি একজনকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন। রাষ্ট্রপতির কাছে নিজে লেখা ও স্বাক্ষরযুক্ত পত্রের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টারা পদত্যাগ করতে পারবেন। প্রধান উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর এবং উপদেষ্টারা মন্ত্রীর পদমর্যাদা, পারিশ্রমিক ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন বলে প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

অধ্যাদেশ আসলে কী?

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, অধ্যাদেশ মূলত এক ধরনের আইন, যেটি রাষ্ট্রপতি জারি করে থাকেন। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, ‘সংজ্ঞা অনুযায়ী, অধ্যাদেশ হলো একটি টেমপোরারি ল (ক্ষণস্থায়ী আইন), যা একটি নির্দিষ্ট সময় পর অকার্যকর হয়ে যায়।’ 

বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতিকে অধ্যাদেশ জারি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদ ভেঙে গেলে বা সংসদ অধিবেশন না থাকা অবস্থায় যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজন মনে করলে তিনি অধ্যাদেশ জারি করতে পারেন।

জরুরি পরিস্থিতিতে বিশেষ প্রয়োজনে জারি করার পর সেই অধ্যাদেশটি পরবর্তী সংসদ অধিবেশনের প্রথমদিনেই উত্থাপন করা হয়ে থাকে।

শাহদীন মালিক বলেন, ‘এক্ষেত্রে প্রথমদিনেই সংসদ চাইলে অধ্যাদেশটিকে বাতিল করে দিতে পারে। আর যদি তারা সেটি না করে, তাহলে উত্থাপিত হওয়ার ৩০ দিন পরে অধ্যাদেশটি আপনাআপনিই বাতিল হয়ে যায়।’

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অধ্যাদেশ জারি মোটেও নতুন কিছু নয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পর বিভিন্ন সময় অধ্যাদেশ জারি হতে দেখা গেছে।

এখন অধ্যাদেশ কেন?

বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আইনি কাঠামোয় আনতে বা আইনি বৈধতা দিতেই ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’ শিরোনামে অধ্যাদেশ জারি হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন আইনজীবীরা।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন একটি বিশেষ সরকার কাজ করছে, যেটি গঠিত হয়েছে একটি বিশেষ অবস্থায়।’

তার কথা সূত্র ধরে সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী ও বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল বলেন, ‘কাজেই শপথ নেওয়ার পরে সাংবিধানিক ও আইনগত বৈধতার জন্য অবশ্যই উনারা (অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার) এই অধ্যাদেশ জারি করতে পারেন।’

বাংলাদেশে গণআন্দোলনের মুখে গত পাঁচ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর আটই অগাস্ট ক্ষমতা গ্রহণ করে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পরামর্শে রাষ্ট্রপতি ওই সরকার গঠনের আদেশ দেন। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয়ে কিছু বলা নেই।

এর আগে এক সময় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কথা বলা ছিল। কিন্তু বিগত আওয়ামী শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর ফলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত করা হয়।

ফলে বর্তমানে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা এবং প্রধান উপদেষ্টা বা উপদেষ্টার পদ বলে কিছু আসলে নেই।

সেই কারণে অন্তর্বর্তী সরকারের আইনি ভিত্তি নিয়ে পরবর্তীতে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।

‘প্রশ্ন না করতে পারা’ নিয়ে প্রশ্ন

অনেকে সাধুবাদ জানালেও খসড়া অধ্যাদেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘বলা হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার ও তাদের কাজকর্ম নিয়ে কোনোভাবেই প্রশ্ন তোলা যাবে না। কিন্তু কেন? প্রশ্ন করা না গেলে তো বলতে হবে এটা ইনডেমনিটি বা দায়মুক্তি।’

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পরামর্শে সরকার গঠিত হওয়ার পর নতুন করে অধ্যাদেশ জারি করার দরকার নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি তো মনে করি এটার দরকার নেই। তারপরও তারা এটি চাচ্ছেন কেন? তাহলে কী ধরে নিবো যে, তারা বুঝেশুনে এমন কোনো অন্যায় করেছেন বা করতে যাচ্ছেন, যার কারণে এমন অধ্যাদেশ জারি করার কথা ভাবতে হচ্ছে?’

তিনি আরো বলেন, ‘এটা অনেকটা নিজের চরিত্রের বিষয়ে নিজেই সার্টিফিকেট দেওয়ার মতো অবস্থা। আমি এটাকে ইনডেমনিটি মনে করি। এর আগেও কোনো ইনডেমনিটি টেকেনি, এটাও টিকবে না।’

তবে আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া অবশ্য কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করছেন। তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন করা যাবে মানে এই নয় যে, তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) যা ইচ্ছা তাই করবে।’

সরকার কী বলছে?

সুষ্ঠুভাবে কাজ সম্পন্ন করার সুবিধার্থে অধ্যাদেশ জারি করা প্রয়োজন মনে করলেও বৈধতার প্রশ্নে বর্তমান সরকারের দৃষ্টিভঙ্গে কিছুটা ভিন্ন। সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘এই সরকারের বৈধতা হলো গণঅভ্যুত্থান।’ 

গণঅভ্যুত্থানের পর সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সরকার সংস্কার কাজ শুরু করতে যাচ্ছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গত তিন মাস আমাদের কার্যক্রমের অগ্রগতি আপনারা দেখেছেন। সংস্কার কমিশনগুলোর সঙ্গে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা নিয়মিত বসছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে সংস্কার কার্যক্রম শেষ করার রূপরেখা ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আশা করি, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে কথা আমরা মুখে বলছি, তার বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।’

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার করার লক্ষ্যে এখন পর্যন্ত দশটি কমিশন গঠন করেছে অর্ন্তবর্তী সরকার।

আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া মনে করেন যে, আইন বিরুদ্ধ কাজ করলে অধ্যাদেশ জারি করেও সরকারের পার পাওয়ার সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে  তিনি ২০০২ সালের ‘অপারেশন ক্লিনহার্টে’র উদাহরণ সামনে আনেন। দায়মুক্তি দিয়ে ওই অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না মর্মে সংসদে আইন পাশ করার পরও সেটি উচ্চ আদালতে বাতিল হয়ে গিয়েছিল।

তিনি বলেন, ‘সুতরাং আইনভঙ্গ হলে সেটার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।’

তবে সংবিধানে যেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়ে সরাসরি কিছু বলা নেই, সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা করেই এটি নিয়ে অধ্যাদেশ জারি করা ভালো বলে মনে করেন এই আইনজীবী।

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সবার মতামতের ভিত্তিতেই এটি করা উচিত। তা না হলে তাদের মধ্য থেকেই পরে দেখা যাবে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন।’

মন্তব্য করুন


Link copied