স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে নেওয়া ঋণ আর বেতন বোনাসের প্রায় পৌনে চার লাখ টাকা নিয়ে নীলফামারীর সৈয়দপুরের নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কাইয়ুম চৌধুরী। কিন্তু তিনি তার বাড়িতে প্রবেশের আগে টাকার ব্যাগ রেখেই অটোরিকশা থেকে নেমে যান। অটোরিকশাচালক মো. ছটু কিছু দূর যাওয়ার পর টের পান, তাঁর অটোরিকশায় কেউ ব্যাগ ফেলে গেছেন। পরে ব্যাগটি খুলে দেখেন, ভেতরে অনেক টাকা। এরপরই ছটু মঙ্গলবার(১৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে নয়টার দিকে সৈয়দপুরের বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি ও পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে কাইয়ুম চৌধুরীর কাছে টাকাসহ ব্যাগটি ফিরিয়ে দেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী সৈয়দপুর শহরের নিয়ামতপুর সরকারপাড়ার বাসিন্দা। তিনি অটোরিকশাচালক মো. ছটু সৈয়দপুর শহরের তামান্না মোড় এলাকার বাসিন্দা।
কৃষি কর্মকর্তা মো. কাইয়ুম চৌধুরী জানায়, মঙ্গলবার ইফতারের আগে কর্মস্থল থেকে বাসে করে সৈয়দপুর বাস টার্মিনালে নামেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে প্রায় পৌনে চার লাখ টাকার একটি ব্যাগ ছিল। পরে বাস টার্মিনালে নেমে একটি অটোরিকশায় চেপে নিয়ামতপুর সরকারপাড়ার বাসায় আসেন। তবে ভুল করে তিনি তাঁর সঙ্গে থাকা টাকার ব্যাগটি অটোরিকশায় রেখেই বাড়িতে ঢুকে পড়েন। বাড়িতে ঢোকার কিছুণ পর তিনি বুঝতে পারেন, ব্যাগটি তিনি অটোরিকশায় ফেলে এসেছেন। তৎণাৎ অটোরিকশার সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন তিনি। টাকা সমেত ব্যাড় ফেরত পেয়ে তিনি অটোচালককে পুরস্কৃত করেন।
এদিকে ছটু টাকার ব্যাগসহ অটোরিকশাটি চালিয়ে শহরের দিকে চলে যান। পথে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের মুন্সিপাড়া মোড় অতিক্রম করার সময় টাকার ব্যাগটি রাস্তার ওপর পড়ে যায়। এ সময় ব্যাগটি ছটুর নজরে পড়ে। পরে তিনি সেটি খুলে দেখতে পান, ওই ব্যাগে টাকা রয়েছে। তখনই ছটু বিষয়টি বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি সৈয়দপুর উপজেলার তামান্না মোড় হাজারীহাট শাখার নেতাদের জানান। সংগঠনটির সভাপতি মঞ্জুর হোসেন এবং সাধারণ স¤পাদক মো. আরজু রহমান টাকার মালিকের সন্ধান করতে থাকেন। এদিকে কাইয়ুম চৌধুরীও টাকা হারানোর বিষয়টি থানায় জানান।
পরে ছটুকে সঙ্গে নিয়ে ওই সংগঠনের নেতারা কাইয়ুম চৌধুরীকে খুঁজে বের করেন। রাতেই শহরের বঙ্গবন্ধু চত্বরের ট্রাফিক পুলিশ বক্সে টাকার মালিককে ডেকে আনা হয়। পরে নীলফামারীর পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) আবু নাহিদ পারভেজ চৌধুরীর মাধ্যমে ব্যাগে থাকা পৌনে চার লাখ টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয় ওই কৃষি কর্মকর্তাকে।
পুলিশ পরিদর্শক আবু নাহিদ পারভেজ চৌধুরী বলেন, অটোরিকশাচালক ছটুর সততা সত্যিই প্রশংসনীয়। এ জন্য তাঁকে আমরা ট্রাফিক বিভাগের প থেকে ধন্যবাদ জানাই। তাঁর এ সততা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।