আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ২২ অক্টোবর ২০২৪ ● ৭ কার্তিক ১৪৩১
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ২২ অক্টোবর ২০২৪
 
 width=
 
 
 width=
 
শিরোনাম: উত্তরবঙ্গে ঘনিয়ে আসছে শীত; তাপমাত্রা ১৭.৮       আড়াই শতাধিক এসআইকে অব্যাহতি       প্রবাসী সরকার: কী বলছে আ.লীগ ও ভারত       রংপুরে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল        ব্যারিস্টার সুমন আটক      

 width=
 

গৌরব-ঐতিহ্যের ধারক আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০২২, দুপুর ১০:৩৩

শেখ মাজেদুল হক

গৌরব-ঐতিহ্যের ধারক-বাহক, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। 

পূর্ববাংলার জনগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। জননেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে যদিও প্রতিষ্ঠাকালে সংগঠনের নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরবর্তীতে পরিবেশ বিবেচনায় ‘আওয়ামী লীগ’ নামে সংগঠনটি কার্যক্রম শুরু করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শামসুল হক নেতৃত্ব দেন।

১৯৫২ সালের ‘মায়ের ভাষা বাংলা’ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন হয়েছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট পাকিস্তানের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করেছিল। ’৬২ সালে গণ-বিরোধী শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন, ’৬৬ সালের ৬-দফার আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানসহ সকল আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। 
’৭০-এর নির্বাচনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করার পরও পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করলে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দেন। আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা এদেশের জনগণকে সাথে নিয়ে পাকিস্তানিদের এদেশ থেকে তাড়িয়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে উপহার দেয়। 

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতা উত্তর সাড়ে তিন বছর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব বাংলাদেশ যখন অর্থনৈতিক মুক্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই কুচক্রী মহল, স্বাধীনতা বিরোধী-চক্র ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে জেলখানায় জাতীয় চারনেতাকে হত্যার মাধ্যমে এই সংগঠনটিকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়। 

১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নবউদ্যামে সংগঠিত হয়। আওয়ামী লীগ এ দেশের মাটি ও মানুষের দল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই অর্জন করেছে মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক এবং মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্বদানের সুমহান গৌরব। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর পরবর্তী সামরিক শাসক, গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর তারই ধারাবাহিকতায় জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে আবারও রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে। উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ১৯৯৬-এর সরকার গঠন করে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখে।

২০০৮ সালে পুনরায় সরকার গঠন করে ‘রূপকল্প ২০২১’-এর আলোকে মধ্যম আয়ের সুখী-সমৃদ্ধিশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখান বঙ্গবন্ধুর কন্যা তিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা ‘রূপকল্প ২০৪১’-এর আলোকে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

পদ্মা সেতু আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। এক সময়ের স্বপ্নের সেতু এখন দৃষ্টিসীমায় দিগন্তজুড়ে দাঁড়িয়ে। পদ্মা সেতু নির্মাণ আওয়ামীলীগ সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো। সেই চ্যালেঞ্জকে দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীর স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিয়েছেন। আর এক দিন পরেই (আগামী ২৫ জুন) যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে এই স্বপ্নের সেতু। সেতুটি চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। দারিদ্র্যের হার কমবে দশমিক ৮৪ শতাংশ। নতুন করে গড়ে উঠবে ভারি শিল্প কারখানা। আর এরই অপেক্ষায় যেন বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে আওয়ামীলীগ সরকারের উপহার হচ্ছে পদ্মা সেতু।

আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জনের ধারাবাহিকতায় বাংলার জনগণ বিশ্বাস করে নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই বাংলাদেশ একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, মার্কেটিং বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর

email: smh.mkt@brur@ac.bd 

মন্তব্য করুন


 

Link copied