আর্কাইভ  শনিবার ● ২৭ জুলাই ২০২৪ ● ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
আর্কাইভ   শনিবার ● ২৭ জুলাই ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: আহতরা যেই দলেরই হোক, চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী       ২৭শে জুলাই রংপুর বিভাগের আট জেলায় কারফিউ শিথিল       সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান বেরোবি প্রশাসনের       "শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে"       রংপুর বিভাগের আট জেলায় কারফিউ শিথিল      

 width=
 

জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণে ‘ডায়নামিক প্রাইসিং’ চালু

রবিবার, ৩ মার্চ ২০২৪, সকাল ০৯:৩৬

ডেস্ক: পৃথিবীর অনেক দেশে জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে সমন্বয় করা হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলে দেশের বাজারে কমে যায়, আবার বেড়ে গেলে দেশেও বেড়ে যায়। এতে জ্বালানি পণ্যের দাম নির্ধারণে স্বচ্ছতা থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি বা কমার বিষয়টি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) ওপর নির্ভরশীল। অভিযোগ আছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়লে বিপিসি দাম বাড়ায়; তবে কমলে আর সহজে কমায় না। যদিও গত বছর দাম কমানোর নজিরও বিপিসি স্থাপন করেছে। তেলের দাম নির্ধারণ বিভিন্ন মহল থেকে দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সেই পরিস্থিতি এড়াতে সরকার এবার ‘ডায়নামিক প্রাইসিং মডেল’ (বিশ^বাজারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ দাম নির্ধারণ পদ্ধতি) চালু করেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে জ্বালানি বিভাগ।

বিষয়টি নিয়ে একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকার যে ফর্মুলা দিয়েছে তাতে প্রতিমাসে একবার নতুন করে দাম সমন্বয় করা হবে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করবে জ্বালানি বিভাগ। যার ফলে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্ত দূর হবে। জ্বালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ হবে অনেকটা এলপিজির দাম নির্ধারণ প্রক্রিয়ার মতো। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) প্রতিমাসে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে। দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রতিমাসে সৌদি কন্ট্রাক্ট প্রাইজ দেখে দাম নির্ধারণ করা হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে প্রতি মাসে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে আসছে বিইআরসি। জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রেও আমদানিমূল্য দেখে সেটার সঙ্গে অন্যান্য খরচ হিসাব করে দাম নির্ধারণ করা হবে।

নতুন ফর্মুলা অনুযায়ী চলতি সপ্তাহে দাম কী হতে পারে জানতে চাইলে বিপিসির একজন কর্মকর্তা বলেন, আমার ধারণা প্রথম মাসে অধিকাংশ জ্বালানি পণ্যের দাম কিছুটা কম করে সমন্বয় হতে পারে। এ কর্মকর্তা বলেন, তবে পর্যায়ক্রমে জ্বালানি পণ্যের সম্পূর্ণ ভর্তুকি তুলে দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে করা হবে।

গত বৃহস্পতিবার দিন জ্বালানি বিভাগ থেকে জ্বালানি তেলের নতুন ফর্মলা চালু করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি পণ্যের দাম এবং স্থানীয় বিভিন্ন বিষয়গুলো হিসাব করে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ করা হবে।

প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, পেট্রোলিয়াম পণ্য যেমন- ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রল তথা সরকার যে সকল গ্রেডের জ্বালানি তেলের বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে থাকে, সেগুলোর জন্য এই স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি প্রযোজ্য হবে। তবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) প্রয়োজন মনে করলে অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্যের ক্ষেত্রেও শর্তসাপেক্ষে উক্ত নির্দেশনা প্রয়োগ করতে পারবে। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে প্রাথমিকভাবে প্রতিমাসে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি চলতি বছরের মার্চ থেকে কার্যকর হবে।

যেভাবে মূল্য নির্ধারণ করা হবে : প্রজ্ঞাপনে জনানো হয়, ডিজেল ও কেরোসিনের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতিতে আমদানি করা পরিশোধিত ডিজেলের কস্ট কম্পোনেন্টসমূহের পাশাপাশি ইস্টার্ন রিফাইনারিতে ক্রুড অয়েল থেকে উৎপাদিত ডিজেলের কস্ট কম্পোনেন্ট অন্তর্ভুক্ত হবে। এ দুই ধরনের জ্বালানি তেলের কস্ট কম্পোনেন্টসমূহ বিবেচনা করে নিম্নরূপভাবে ডিজেল ও কেরোসিনের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ করা হবে: ডিজেলের স্বয়ংক্রিয় বিক্রয় মূল্য, পণ্য মূল্য, আমদানি শুল্ক, অগ্রিম আয়কর ও আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট, অপারেশনাল ব্যয়, আর্থিক, প্রশাসনিক ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়, বিপিসির মার্জিন, ভ্যাট, বিক্রয় ও বিতরণ খরচ।

অকটেন ও পেট্রলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতিতে আমদানিকৃত পরিশোধিত অকটেনের কস্ট কম্পোনেন্টসমূহ বিবেচনা করে নিম্নরূপভাবে অকটেনের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ করা হবে: অকটেনের স্বয়ংক্রিয় বিক্রয় মূল্য, পণ্য মূল্য, আমদানি শুল্ক, অগ্রিম আয়কর ও আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট, অপারেশনাল ব্যয়, আর্থিক, প্রশাসনিক ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়, বিপিসির মার্জিন, ভ্যাট, বিক্রয় ও বিতরণ খরচ।

দেশে ব্যবহৃত অকটেন ও পেট্রল ব্যক্তিগত যানবাহনে অধিক পরিমাণে ব্যবহৃত হয় বিধায় এর মূল্য বিলাসদ্রব্য (লাক্সারি আইটেম) হিসেবে সব সময় ডিজেলের চেয়ে বেশি রাখা হয়। বর্তমানে ডিজেল ও অকটেনের খুচরা বিক্রয় মূল্যে পার্থক্য লিটারপ্রতি ২১ টাকা। ফর্মুলা অনুযায়ী অকটেনের মূল্য নির্ধারণকালে ডিজেলের সঙ্গে পার্থক্য লিটারপ্রতি ন্যূনতম ১০ টাকা যেন থাকে সে জন্য প্রাইসিং ফর্মুলায় এটি ফ্যাক্টর হিসাবে বিবেচিত হবে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied