ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগের অনেক ধারণাই এসেছে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মাথা থেকে, তবে জয় রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন কিনা, সেটা নির্ভর করছে তার এবং দেশের জনগণের ওপর।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন বাংলাদেশের সরকারপ্রধান। তার ভারত সফরের আগের দিন রোববার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছেন এএনআই।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা জয় রাজনীতিতে আসবেন কি না, সেই প্রশ্নে তার মা শেখ হাসিনা বলেন, “দেখুন, সে তো একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ। তাই এটা তার ব্যাপার। কিন্তু সে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরি করেছি, সেখানে স্যাটেলাইট, সাবমেরিন কেবল বা কম্পিউটার প্রশিক্ষণের মত সমস্ত ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার ধারণা তার। আর আপনারা জানেন, সে (জয়) আমাকে সহায়তা করে যাচ্ছে এবং এই সে যে কাজ করে যাচ্ছে, সেজন্য দলে বা মন্ত্রণালয়ে কখনও কোনও পদ নেওয়ার কথা ভাবেনি।”
আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে কর্মীরা যে জয়কে দলের বড় কোনো পদে আনার জোর দাবি জানিয়েছিলেন, সে কথাও সাক্ষাৎকারে বলেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
কর্মীদের ওই দাবির পর সম্মেলনে কী ঘটেছিল, সেই বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি ওকে ডেকে বললাম, তুমি মাইক্রোফোনে গিয়ে বল- তুমি কি করতে চাও। ও তখন মাইক্রোফন নিল, বললো, ‘না, এই মুহূর্তে দলে কোনো পদ আমি চাই না। বরং যারা এখানে কাজ করছেন, তাদেরই পদ পাওয়া উচিৎ। কেন আমি একটি পদ দখলে রাখব? আমি আমার মায়ের সাথে আছি, দেশের জন্য কাজ করছি এবং মাকে সহায়তা করছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “তার ভাবনাগুলো এরকমই। এমন নয় যে, ওকে আমার পদ দিতে হবে বা সেরকম কিছু করতে হবে।”
দলের কর্মীদের ওই আহ্বানে জয়ের এখন সাড়া দেওয়া উচিত বলে মনে করেন কি না- সেই প্রশ্ন শেখ হাসিনার কাছে রেখেছিল এএনআই।
উত্তরে তিনি বলেন, “এটা নির্ভর করবে জনগণের ওপর।”
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর জয় কম্পিউটার বিজ্ঞান নিয়ে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতে। ২০১৩ মাঝামাঝি সময় থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী জয় দেশে এসে রাজনীতি নিয়ে কথা বলে আলোচনার ঝড় তোলেন। নির্বাচনের আগের মাসগুলোতে তিনি বিভিন্ন জেলা সফর করে সমাবেশ ও আলোচনাসভায় আওয়ামী লীগের রূপকল্প বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে বক্তব্য দেন।
সজীব ওয়াজেদ জয় আওয়ামী লীগের গবেষণা ও প্রচারনা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্স অ্যান্ড ইনফরমেশনের চেয়ারম্যান। ছোট বোন সায়মা ওয়াজেদ প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারপারসন।
এনএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতের সঙ্গে ‘পরীক্ষিত বন্ধুত্বের’ নানা দিক নিয়েও কথা বলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা এবং ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার কথাও স্মরণ করেন শেখ হাসিনা।