আর্কাইভ  শনিবার ● ১৯ জুলাই ২০২৫ ● ৪ শ্রাবণ ১৪৩২
আর্কাইভ   শনিবার ● ১৯ জুলাই ২০২৫
নেতৃত্বে থাকা এসি আল ইমরানের নাম নেই মামলা তালিকায়

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় রমজান আলীর ক্ষোভ
নেতৃত্বে থাকা এসি আল ইমরানের নাম নেই মামলা তালিকায়

কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিকে ঘিরে ব্যাপক সংঘর্ষ, সারাদেশে নিহত ৩১

ফিরে দেখা জুলাই বিপ্লব
কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিকে ঘিরে ব্যাপক সংঘর্ষ, সারাদেশে নিহত ৩১

১৮ জুলাই ‘জুলাই আন্দোলন’ স্মরণে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের ঘোষণা

ফিরে দেখা জুলাই বিপ্লব
আন্দোলন নেয় মোড়
১৮ জুলাই ‘জুলাই আন্দোলন’ স্মরণে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের ঘোষণা

রংপুরে আবু সাঈদ হত্যায় এসি ইমরানকে আসামি করার দাবি ভাইয়ের

তথ্য গোপন করে বিসিএস কর্মকর্তা  
রংপুরে আবু সাঈদ হত্যায় এসি ইমরানকে আসামি করার দাবি ভাইয়ের

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় রমজান আলীর ক্ষোভ

নেতৃত্বে থাকা এসি আল ইমরানের নাম নেই মামলা তালিকায়

শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, রাত ১২:০০

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ৩০ জনকে আসামি করে মামলার অভিযোগ আমলে নেওয়ার আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নিয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। চারজন আগে থেকে আটক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।   

তবে এই ৩০ জনের মধ্যে এক পুলিশ অফিসারকে আসামি না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই ও মামলার অভিযোগ দাখিলকারী  মো. রমজান আলী।

১৬ জুলাই বেসরকারী একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আবু সাঈদের বড় ভাই মো. রমজান আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘আবু সাঈদ হত্যার ভিডিওতে দেখা যায় একজন পুলিশ গুলি করে তাকে হত্যা করে।  আবু সাঈদের হত্যার পর তার রক্তের ওপর পাড়ি দিয়ে দেশ নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসররা রয়ে গেছে। আমরা মামলা করার সময় সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আবু সাঈদকে হত্যার নেতৃত্বে থাকা পরশুরাম থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আল ইমরান হোসেনকে আসামি করি।

অথচ তাকে আইসিটি মামলার আসামি করা হয়নি। অথচ রংপুরে মামলা করার সময় সিসিটিভি ফুটেজ ও  আবু সাঈদের সহপঠীদের নিয়ে মামলা করি। সেখানে মো. আল ইমরান হোসেনকে ৫ নম্বর হত্যার আসামি করা হয়। অথচ আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা মো. আল ইমরান হোসেনের ত্রুটি খুঁজে পাননি। আমি শুনেছি এ পুলিশ কর্মকর্তা তিন কোটি টাকার জায়গা বিক্রি করে মামলা থেকে নাম কাটাতে বাণিজ্য করেছে। আমি বলি অপরাধীকে টাকার বিনিময়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তাকে আসামি করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এক বছরেও বিচার হয়নি। আমাদের চাওয়া-পাওয়া বর্তমান সরকারের সময়ে যেন বিচার শেষ হয়।’ 

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকায় পরশুরাম জোনের পুলিশের সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন আল ইমরান হোসেন। ৫ আগষ্টের পর দিন থেকে তিনি কর্মে অনুপস্থিত রয়েছেন।

এ বিষয়ে  রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মো. মজিদ আলী বলেন, ‘সে (আল ইমরান হোসেন) গরহাজির (পালাতক)। ৫ তারিখ পরবর্তী সময়ে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। আমাদের কাছে তার কোনো তথ্য নেই। তার কাজের কথা বিগত কমিশনার বলতে পারবেন, যেহেতু তার সঙ্গে কাজ করেছেন।’

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদরদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে আল ইমরানের বিষয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা বলেন, ‘৫ আগস্ট তিনি সর্বশেষ কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এরপরে তিনি আর যোগদান করেননি। এসি আল ইমরান হোসেন মেডিকেল ছুটি দিয়ে রেখেছেন। তিনি অফিসিয়ালি কোনো সিমকার্ড ব্যবহার করছেন না। তার সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকায়।’ 

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কশিনার হাবিবুর রহমান বলেন, গত ৫ আগষ্টের পরদিন থেকে এসি আল ইমরান হোসেন কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি সাময়িক বরখাস্ত হিসেবে আছেন। এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি।  

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালায় সুত্র জানায়, মো. আল ইমরান হোসেন ৩৫ তম বিসিএসের মাধ্যমে পুলিশ ক্যাডার হিসেবে যোগদান করেন। তার পুলিশ আইডি বিপি ৮৮১৭১৯৯৫২৪৭, তার গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাট। তার অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে ২০৪৭ সালে। তার স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে কর্মরত।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২৪ সালে ১৬ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের দিন পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পর ১৬ জুলাই রাত সাড়ে ১১টায় পুলিশ বাদি হয়ে তাজ হাট থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এসআই বিভূতিভূষণ রায় বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আসামি করা হয় অজ্ঞাতনামা ২/৩ হাজার ছাত্র জনতাকে। এ মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৬ জুলাই  ছাত্র-জনতা পুলিশের কাজে বাধা দিলে পুলিশ গুলি ছোড়ে। পুলিশ ও ছাত্র জনতার ইটপাটকেলে আঘাত প্রাপ্ত হয় এক ছাত্র। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। তার নাম আবু সাঈদ।

এ মামলার এজাহারে বলা হয়, ছাত্রদের আঘাতে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ২৩ জন আহত পুলিশের নাম উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে দুই নম্বরে উল্লেখ করা হয় পরশুরাম জোনের এসি মো. আল ইমরান হোসেনের নাম। পুলিশের করা মামলায় দেখা যায়, আবু সাঈদ হত্যার সময় ঘটনাস্থলে এসি মো. আল ইমরান উপস্থিত ছিলেন।

আবার ৫ আগস্টের পর রংপুরের তাজহাট থানা ও কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলার মধ্যে আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পুলিশের ১৭জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে ৫ নম্বর আসামি ছিল এসি মো. আল ইমরান হোসেন।

মন্তব্য করুন


Link copied