আর্কাইভ  বুধবার ● ২৯ মার্চ ২০২৩ ● ১৫ চৈত্র ১৪২৯
আর্কাইভ   বুধবার ● ২৯ মার্চ ২০২৩
 width=
 width=
শিরোনাম: বুড়িমারীতে ৩কোটি টাকার ভারতীয়পণ্য ও তিনটি ট্রাক আটক       নির্বাচনে গণমাধ্যমকর্মীদের বাধা দিলে ২-৭ বছরের কারাদণ্ড       মা হলেন মাহি       রংপুরে গাঁজাসহ ৩ জন গ্রেফতার       দিনাজপুর গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মোটর সাইকেল আরোহী নিহত       

নীলফামারী সরকারি কলেজে দুইদিন ব্যাপী জমজমাট বসন্ত ও পিঠা উৎসব

বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বিকাল ০৭:৩০

স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ বসন্ত বরণ-পিঠা উৎসব ও জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মেতে উঠেছে নীলফামারী সরকারি কলেজ। ভাপা, চিতই, চন্দ্র পুলি, পাটি শাপটা, নকশি, দুধপুলি, কলি,ফুল,ময়ুরাক্ষী, ডিম বাহারী,বিবিখানা, সুজি, নারকেল,তেল, রসপিঠাসহ নানান ধরনের পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেছেন শিক্ষার্থীরা। ছাত্রীরা খোপায় বিভিন্ন ফুলের তৈরি মালা আর পরনে নানা রঙের বাসন্তী শাড়ী। শুধু শিক্ষার্থী নয় বর্ণিল সাজে সেজেছে পুরো ক্যাম্পাস। 

কলেজ ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার চত্বরের সামনে বর্নিল সাজে প্রত্যেক বিভাগের নিজ নিজ ব্যবস্থায়, বসেছে প্রায় ১৬টি পিঠা স্টল। প্রতিটি স্টলে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য আর সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে নীলফামারী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত কাশফুল সাংস্কৃতিক অঙ্গন’এর আয়োজনে আজ বুধবার(২২ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকে দুইদিন ব্যাপী শুরু হয়েছে পিঠা ও বসন্ত উৎসব। 
সকাল ১০টার দিকে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন কলেজটি অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ দিদারুল ইসলাম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কাশফুল সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রধান উপদেষ্ঠা কলেজের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. তারিকুল আলম লিখন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কলেজের উপাধাক্ষ মো. মাহবুবার রহমান ভুইয়া, শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরা জেসমিন, কাশফুল সাংষ্কৃতিক অঙ্গনের উপদেষ্ঠা সহকারী অধ্যাপক মো. নূরুল করিম, মনি সংকর দাস, অশোক কুমার, সভাপতি মেহেদী হাসান প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কাশফুল সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সভাপতি কলেজের দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সৈয়দ মেহেদী হাসান আশিক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কলেজের গনিত বিভাগ চতুর্থ বর্ষের ছাত্র স্বদেশ রায় ও এইচএসসি হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্রী শিশির আক্তার। 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে পিঠা স্টলগুলো পরিদর্শন করে তাদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান কলেজের অধ্যক্ষ। 
অনুষ্ঠানে বসন্তের বন্দনায় কাশফুল অঙ্গনের সদস্যরা সংগীত, কবিতা আবৃতি ও নৃত্য পরিবেশন করেন। 
পিঠা উৎসব উপভোগ করতে আসা ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আলপনা আক্তার মৌমিতা বলেন, বিদেশী অনেক খাবার আমাদের দেশে জায়গা করে নিয়েছে। যার ফলে দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার নানা ঐতিহ্যবাহী পিঠা। প্রতিবছর এমন পিঠা উসবের আয়োজন করা হলে নতুন প্রজন্ম দেশি পিঠায় পরিচিত হতে পারবে। একই বিভাগের শিক্ষার্থী রিদওয়ানুম ইকরা বলেন, পিঠা শুধু খাবার নয়, এর সাথে জড়িয়ে আছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে। 

দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী বৃষ্টি আক্তার বলেন, এই পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত না হলে আমরা বুঝতেই পারতাম না আমাদের দেশে ঐতিহ্যবাহী এত ধরনের পিঠা আছে। আমরা বাড়ীতে শুধু তিন থেকে চার ধরনের পিঠা দেখতে পাই। কিন্তু এখানে এসে দেখছি নানা ধরনের পিঠার সমাহার।
সংগঠনের প্রধান উপদেষ্ঠা মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, বাঙালির লোকজ সংস্কৃতিকে সমুন্নত করতে ও শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে এবারই প্রথম নীলফামারী সরকারি কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে বসন্ত বরণ ও পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, পিঠা উৎসবটি জানুয়ারী মাসে করার কথা থাকলেও বিভিন্ন পরীক্ষার কারণে তা করা সম্ভব হয়নি। তাই বসন্তের সাথে আমরা পিঠা উৎসবের আয়োজন করি।
সংগঠনের উপদেষ্ঠা সহকারী অধ্যাপক নূরুল করিম বলেন, পিঠা উৎসবে ১৬টি স্টলের মধ্যে কলেজের ১৪টি বিভাগের (ডিপার্টমেন্ট) শিক্ষার্থীরা ১৪টি, কাশফুল সাংষ্কৃতিক অঙ্গনের একটি এবং রক্ত দানকারী সংগঠণ ‘বাধন’ এর একটি রয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার(২৩ ফেব্রুয়ারী) বিকালে স্টলে পিঠা সাজানো ও পরিবেশনায় সেরা স্টলকে পুরষ্কার বিতরণ, সমাপনী এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দুইদিনের এ উৎসব শেষ হবে।  

মন্তব্য করুন


Link copied