আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ১৯ আগস্ট ২০২৫ ● ৪ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ১৯ আগস্ট ২০২৫
ফিরে দেখা জুলাই বিপ্লব

শরীরে ৩৮ স্প্লিন্টারের যন্ত্রণায় কাতর অমিত

রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫, দুপুর ০২:৫৯

Advertisement Advertisement

নিউজ ডেস্ক: জুলাই বিপ্লবের অকুতোভয় সৈনিক অমিত হাসান। গত বছরের ৫ আগস্ট এক দফার আন্দোলনে যোগ দিয়ে গুলিবিদ্ধ হন এই জুলাই-যোদ্ধা। তার শরীরে এখনো রয়েছে ৩৮টি স্প্লিন্টার, যার মধ্যে মাথায় রয়েছে ২২টি। এগুলো নিয়েই বিনা চিকিৎসায় যন্ত্রণায় দিন কাটছে তার। তার সামনে অপেক্ষা করছে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, যা নিয়ে উদ্বিগ্ন তার পরিবার।

জানা গেছে, ঝিনাইদহের মহেশপুর পৌর শহরের গোপালপুর গ্রামের নুহু শেখের ছেলে অমিত হাসান। দরিদ্র ঘরের এই সন্তানের বেড় ওঠার গল্প খুবই করুণ। অর্থাৎ পিছুটান তার ছিল। কিন্তু এই পিছুটান উপেক্ষা করে ৫ আগস্ট তিনি মহেশপুরের শাপলা চত্বরে যোগ দেন হাসিনার পতনের আন্দোলনে। সেদিন পুলিশের ছোড়া গুলির ৩৮টি স্প্লিন্টার অমিতের শরীরে বিঁধে। তার মধ্যে মাথায় রয়েছে ২২টি স্প্লিন্টার। এর তিনটি স্প্লিন্টার মাথার গভীরে ঢুকে আছে।

অমিত  বলেন, ওই দিন শাপলা চত্বরে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। স্লোগান চলতে থাকে স্বৈরাচার হাসিনা সরকার পতনের দাবি নিয়ে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি তাদের ছত্রভঙ্গ করতে এগিয়ে গেলে তারাও সামনের দিকে এগোতে থাকে। এ সময় তাদের দিকে গুলি চালায় পুলিশ। গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারাই। এর পর আর কিছুই জানি না।

কথা বলতে বলতে অমিতের খালা জবেদা খাতুন বাইরে থেকে বাড়ি আসেন। তিনি বলেন, অমিতকে নিয়ে বড় বিপদে আছি। পুলিশের গুলিতে মারাত্মক আহত হয় অমিত। তাকে তার সহযোদ্ধারা মহেশপুর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে। ৬ আগস্ট যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তারদের পরামর্শে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ডাক্তার না থাকায় তিনদিন অনেকটা বিনা চিকিৎসায় থাকার পর বাড়ি ফিরে আসে সে। পরদিন মহেশপুরের ছাত্ররা আবারও ঢাকায় নিয়ে তাকে সিএমএইচে ভর্তি করে। সেখানে ৯ দিন চিকিৎসা শেষে আবারও বাড়ি চলে আসে অমিত। এখন অমিতের সপ্তাহে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকার ওষুধ লাগে। টাকার অভাবে তাকে ওষুধ খাওয়াতে পারছি না। মাথার গভীরে গুলির স্প্লিন্টার থাকায় তার নার্ভ অকেজো হয়ে যাচ্ছে, যে কারণে হাত-পায়ের শক্তি ধীরে ধীরে কমে আসছে।

অমিত বলেন, এ পর্যন্ত স্থানীয় বিএনপির পক্ষ থেকে ১০ হাজার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাঁচ হাজার এবং ডিসি অফিস থেকে ১০ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছি। ঢাকার ডাক্তার বলেছেন আমার মাথায় থাকা গুলির স্প্লিন্টার ২২টার মধ্যে তিনটি মাথার গভীরে ঢুকে আছে, যে কারণে অপসারণ করতে গেলে আমি মারা যাব। এখন যত দিন যাচ্ছে, চলাফেরা করতে তত বেশি কষ্ট হচ্ছে আমার।

এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাদিজা আক্তার বলেন, যারা আহত আছেন তাদের নাম গেজেট আকারে আছে। তাদের জন্য আর্থিক অনুদান আসবে। তখন তারা অবশ্যই পাবে। এর বাইরে কিছু বলতে পারছি না।

মন্তব্য করুন


Link copied