আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ● ১১ পৌষ ১৪৩২
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
বঙ্গোপসাগরে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

বঙ্গোপসাগরে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

রংপুরে বেড়েছে নারী ভোটার ও কেন্দ্র সংখ্যা

রংপুরে বেড়েছে নারী ভোটার ও কেন্দ্র সংখ্যা

কে এই মার্টিন লুথার কিং?

কে এই মার্টিন লুথার কিং?

তরুণ প্রজন্মকেই আগামীর নেতৃত্ব নিতে হবে : তারেক রহমান

তরুণ প্রজন্মকেই আগামীর নেতৃত্ব নিতে হবে : তারেক রহমান

সাইবেরিয়ান বিড়াল জেবু, বাংলাদেশের আবহাওয়ায় খাপ খাওয়া ও যত্ন

বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, দুপুর ০৩:১১

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরেছেন। তবে তার এই আগমন শুধু রাজনৈতিক কারণে নয়, পোষা বিড়াল জেবুকে ঘিরেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে তারেক রহমানের মোবাইল ফোনের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা জেবুর একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

এরপর আরও একাধিক ছবি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম ও বিড়ালপ্রেমীদের মধ্যে জেবুকে ঘিরে ব্যাপক আগ্রহ ও কৌতূহল তৈরি হয়।
 
জেবু কোন জাতের বিড়াল
 
 
জেবু হলো সাইবেরিয়ান জাতের লোমশ বিড়াল, যা রাশিয়ার প্রাকৃতিক ও প্রাচীন জাতের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। সাইবেরিয়ানরা তিন ধরনের প্রাকৃতিক লোমে পরিচিত: গার্ড হেয়ার, অ্যান হেয়ার, ডাউন হেয়ার। এই তিনটি স্তর মিলিত হয়ে একটি সু-বিকশিত জলরোধী ট্রিপল কোট তৈরি করে। ঘন লোম, শক্তিশালী শরীর এবং বন্ধুত্বপূর্ণ, স্নেহপ্রবণ স্বভাব সাইবেরিয়ান বিড়ালকে আলাদা করে তোলে। লোম থেকে উৎপন্ন অ্যালার্জেন কম হওয়ায় এটি অনেক অ্যালার্জি আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে হাইপোঅ্যালার্জেনিক বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়।
 
রঙিন লোমের সুদর্শন প্রজাতি
 
 
সাইবেরিয়ান বিড়াল চটপটে এবং বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাবের। তাদের পেছনের অংশ শক্ত, পা বড় এবং লেজ পুরু। শরীরের দৈর্ঘ্য মাঝারি থেকে বড় এবং আকৃতি গোলাকার ও মজবুত। চোখের রং সাধারণত সবুজ, সোনালি বা তামাটে হয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে সাদা সাইবেরিয়ান বা দাগযুক্ত প্রজাতির ক্ষেত্রে নীল বা বিভিন্ন রঙের চোখও দেখা যায়। রঙের ক্ষেত্রে কালো বা বাদামি ম্যাকেরেল ট্যাবি সবচেয়ে সাধারণ, এছাড়া সাদা, নীল, লাল এবং ক্রিম রঙের সাইবেরিয়ান বিড়ালও পাওয়া যায়। এই জাতের বিড়ালের আয়ু সাধারণত ১০ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত থাকে।
 
পরিবারের জন্য আদর্শ বিড়াল
 
 
এই জাতের বিড়াল শুধু দেখতে সুন্দর নয়, মানসিকভাবে মানুষকে আনন্দ দেয়। বন্ধুসুলভ, শান্ত এবং পরিবারপ্রিয় স্বভাবের কারণে সাইবেরিয়ান বিড়াল পোষা প্রাণী হিসেবে চমৎকার বিকল্প। এটি বিশেষ করে শিশু ও বড়দের সঙ্গে সহজেই মানিয়ে নিতে পারে এবং ঘরের পরিবেশকে আনন্দময় করে তোলে।
 
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
 
 
সাইবেরিয়ান বিড়ালের ইতিহাস কমপক্ষে ১,০০০ বছর পূর্বের। সাইবেরিয়ান বিড়ালের ইতিহাসে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১৯৯০ সালে প্রথমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই জাতের বিড়াল আমদানি করা হয়। এরপর ১৯৯৬ সালে আন্তর্জাতিক বিড়াল সমিতি (টিআইসিএ) সাইবেরিয়ান জাতকে স্বীকৃতি দেয়।
 
 
১৯৯৯ সালে আমেরিকান বিড়াল ফ্যান্সিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (এসিএফএ) এবং ২০০৬ সালে ক্যাট ফ্যান্সিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (সিএফএ) এটিকে গ্রহণ করে। এই স্বীকৃতিগুলো সাইবেরিয়ান বিড়ালের বৈশিষ্ট্য, স্বাস্থ্যের মান এবং প্রজনন প্রক্রিয়াকে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তুলেছে।
 
দাম কেমন
 
 
সাইবেরিয়ান বিড়াল পোষার ক্ষেত্রে দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। বাংলাদেশে সাধারণত একটি সাইবেরিয়ান বিড়ালের পাপট (ক্যাট) ১.৫ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এর দাম নির্ভর করে বিড়ালের রং, বয়স, জেনেটিক লাইন, ভ্যাকসিনেশন এবং স্বাস্থ্যগত অবস্থার উপর। সাধারণত প্রিমিয়াম রেজিস্টার্ড ব্রিডারদের কাছ থেকে নেওয়া বিড়াল এই দামের মধ্যে পড়ে।
 
বাংলাদেশের আবহাওয়ায় উপযোগী কি না
 
 
সাইবেরিয়ান বিড়ালের লোম ঘন ও ট্রিপল-কোটযুক্ত, যা মূলত ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য উপযুক্ত। বাংলাদেশে শীত তুলনামূলক কম এবং গ্রীষ্মে আর্দ্রতা বেশি, তবুও সঠিক যত্ন নিলে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে মানিয়ে নিতে পারে।
 
গ্রীষ্মে ঘন লোমের কারণে অতিরিক্ত গরম হতে পারে,তাই ঘরের ভেন্টিলেশন ভালো রাখতে হবে, হালকা শীতল জায়গায় থাকার ব্যবস্থা এবং নিয়মিত ব্রাশিং করা জরুরি। শীতে ঘন লোম বাংলাদেশের শীতের জন্য আদর্শ, শীতকালে তারা আরামদায়ক এবং স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে।
 
 
আর্দ্র ও গরম আবহাওয়ায় স্কিন ইস্যু যেমন চুলকানি বা ফাঙ্গাল ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই নিয়মিত চুলের যত্ন নেওয়া, ব্রাশ করা এবং প্রয়োজনে হালকা চুলের ট্রিম করানো প্রয়োজন।
 
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্য খাওয়ানো
 
 
সাইবেরিয়ান বিড়ালের লোম ঘন, উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখতে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশে স্ট্যান্ডার্ড ক্যাট ফুড সহজলভ্য, তবে কিটেন বা ছোটবেলার বিড়ালের জন্য বয়স অনুযায়ী পুষ্টির মান খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
 
 
বিড়ালের সেরা খাবার বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বদা পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তাদের জন্য পরিষ্কার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। শুকনো খাবার সুবিধাজনক হলেও টিনজাত খাবারে কম কার্বোহাইড্রেট এবং অতিরিক্ত আর্দ্রতা থাকে, যা সব সময় স্বাস্থ্যকর নয়। নিয়মিত নির্ধারিত সময় অনুযায়ী দিনে দুই থেকে তিনবার পরিমিত খাবার দেওয়াই উত্তম।
 
সারাদিন খাবার ফেলে রাখলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত পানি নিশ্চিত করলে সাইবেরিয়ান বিড়াল সুস্থ, সক্রিয় এবং প্রাণবন্ত থাকবে ।
সূত্র: দ্য স্প্রুস পেটস, পুরিনা ইউএস,আমেরিকান বিড়াল ফ্যান্সিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন

মন্তব্য করুন


Link copied