আর্কাইভ  বুধবার ● ২০ আগস্ট ২০২৫ ● ৫ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   বুধবার ● ২০ আগস্ট ২০২৫
দুদকের মামলায় সাজার হার কমছে, বাড়ছে খালাস

দুদকের মামলায় সাজার হার কমছে, বাড়ছে খালাস

ফেব্রুয়ারির ভোটে সংশয় দেখছে না বিএনপি

ফেব্রুয়ারির ভোটে সংশয় দেখছে না বিএনপি

নজিরবিহীন লুটপাট ‘ভঙ্গুর’ ব্যাংক খাত

হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরে ঋণ কেলেঙ্কারি-পাচার
নজিরবিহীন লুটপাট ‘ভঙ্গুর’ ব্যাংক খাত

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশনের আড়ালে সমন্বয়কদের চাকুরি!

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশনের আড়ালে সমন্বয়কদের চাকুরি!

ফেব্রুয়ারিতেই তরুণদের দল

বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, বিকাল ০৬:৫৩

Advertisement Advertisement

উত্তর বাংলা ডেস্ক: তারুণ্যনির্ভর নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। অভ্যুত্থানের শক্তি সংগঠিত করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাজনৈতিক দল গঠন ও পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছেন তরুণ এ ছাত্রনেতারা।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী গতকাল  বলেন, ‘৫ আগস্ট-পরবর্তী রাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে আধুনিক চিন্তাধারা ও পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের সঙ্গে বাস্তবসম্মত ও ভিন্নধারার একটি রাজনৈতিক দল গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। জনগণও চাইছে তরুণদের নেতৃত্বে রাজনীতিতে নতুন ধারার প্রচলন শুরু হোক। ৫ আগস্টের পরই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত তরুণদের ঐক্যবদ্ধ করে সেই দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নিশ্চিতভাবে বলতে না পারলেও আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে দল গঠনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশাবাদী।’

জাতীয় নাগরিক কমিটিসূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা সামনে রেখে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের এক দফা ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’ বাস্তবায়নে কাজ করবে তরুণদের এ রাজনৈতিক দল। নতুন রাজনৈতিক দলটি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে। দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে জেতার সম্ভাবনা আছে এমন সব প্রার্থীকে। এজন্য প্রতিটি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের বাছাই করার প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনি আসনভিত্তিক এবং জাতীয় পর্যায়ে নতুন নেতৃত্ব তৈরিতেও কাজ করছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। নতুন দল গঠন করা হলেও বিলুপ্ত করা হবে না জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফরম দুটি। নতুন দল পরিচালনার দায়িত্ব ও ‘প্রেশার গ্রুপ’ হিসেবে কাজে লাগানো হবে এ দুটি প্ল্যাটফরমকে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে নতুন দলে। নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতারা দলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত হবেন না। তবে তাঁদের মধ্যে কয়েকজন নির্বাচনে অংশ নেবেন। দুই প্ল্যাটফর্ম থেকে যারা নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে আগ্রহী, তাদের দলে জায়গা দেওয়া হবে। জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফয়সাল মাহমুদ শান্ত বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বাংলাদেশের চলমান বাইনারি রাজনীতির বিরুদ্ধে তরুণদের রাজনীতিতে উঠে আসা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। নতুন ধারার রাজনীতির ভিত্তি হবে ১৯৪৭, ১৯৭১ এবং ২০২৪-এর চেতনা। তরুণদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা নতুন রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য হবে বাংলাদেশে বহু বছর ধরে চলমান রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনা। বিভাজনের রাজনীতি থেকে সরে এসে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনের প্রয়াস চালানো। নাগরিক কমিটিসূত্রে জানা যায়, বর্তমানে জেলা ও প্রতিষ্ঠানভিত্তিক কমিটি গঠনের কাজ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। প্রাথমিকভাবে দলের একটি কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচনের আগে সম্পন্ন করা হবে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠনের কাজ।

গত ২২ অক্টোবর হাসনাত আবদুল্লাহ, আরিফ সোহেল, আবদুল হান্নান মাসুদ ও উমামা ফাতিমাকে নিয়ে চার সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ ছাত্র সংগঠন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি যথাক্রমে ১২ ও ১৫টি জেলা কমিটি ঘোষণা করেছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য হিসেবে নতুন করে আরও ৪৫ জনকে যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে এ কমিটির সদস্যসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৭-এ। গত সোমবার রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সদস্য বাড়ানোর এ তথ্য জানান জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের স্পিরিট (চেতনা) সমুন্নত রাখতে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটি বর্ধিতকরণের চলমান প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নতুন করে ৪৫ জনকে কেন্দ্রীয় সদস্য করা হয়েছে।

নতুন যুক্ত হওয়াদের মধ্যে আছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেতা আলী আহসান জোনায়েদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাসমুন নাহার হল সংসদের সাবেক ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেত্রী উম্মে হাবিবা বেনজির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক নেতা মীর আরশাদুল হক, ইনকিলাব মঞ্চের নেতা শরিফ ওসমান হাদি, সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন শিশির ও আরিফুর রহমান তুহিন, আইনজীবী মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহছান, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক অরণি সেমন্তি খান প্রমুখ। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক দফা (ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৩ সেপ্টেম্বর নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে আহ্বায়ক, আখতার হোসেনকে সদস্যসচিব ও সামান্তা শারমিনকে মুখপাত্র করে ৫৫ সদস্যের জাতীয় নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশ করে। এরপর ৩ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের সাতজন আইনজীবীকে জাতীয় নাগরিক কমিটিতে যুক্ত করা হয়। এ সাতজনকে যুক্ত করার পর নাগরিক কমিটির সদস্যসংখ্যা দাঁড়ায় ৬২-তে। নতুন করে আরও ৪৫ জনকে যুক্ত করায় বর্তমানে কমিটির সদস্য সংখ্যা ১০৭।

মন্তব্য করুন


Link copied