আর্কাইভ  শনিবার ● ৪ অক্টোবর ২০২৫ ● ১৯ আশ্বিন ১৪৩২
আর্কাইভ   শনিবার ● ৪ অক্টোবর ২০২৫
হঠাৎ খিঁচুনিতে জবি ছাত্রদল নেতার মৃত্যু

হঠাৎ খিঁচুনিতে জবি ছাত্রদল নেতার মৃত্যু

বেরোবির শহীদ ফেলানী হলে নানামুখী ভোগান্তি, বৈষম্যের অভিযোগ শিক্ষার্থীদের

বেরোবির শহীদ ফেলানী হলে নানামুখী ভোগান্তি, বৈষম্যের অভিযোগ শিক্ষার্থীদের

নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে মিছিল, ব্লকেড কর্মসূচি

নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে মিছিল, ব্লকেড কর্মসূচি

মা ইলিশ রক্ষায় মেঘনায় আজ রাত থেকে ২২ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ

মা ইলিশ রক্ষায় মেঘনায় আজ রাত থেকে ২২ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ

ভারতের পতনের সুর, হাহাকার

পাকিস্তান ট্রাম্পের বুকে দিল্লির অন্তর্জ্বালা কমছে না !

শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫, রাত ১২:৪৯

Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  হোয়াইট হাউসের উজ্জ্বল আলোতে এক অদ্ভুত দৃশ্য। একদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হাতে পরিচিত থাম্সআপ ভঙ্গি, অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ আর সেনাপ্রধান আসিম মনির। মনিরের হাতে চকচকে এক বাক্স। যার ভেতরে বিরল খনিজ সম্পদ। ট্রাম্পের দিকে বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সেটি যেন প্রতিকীভাবে জানানো হলো পাকিস্তান এখন শুধু বন্ধুত্ব নয় সম্পদ আর সুযোগও নিয়ে এসেছে আমেরিকার দৌরগোড়ায়। এই বৈঠকটি হয়েছে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে। শাহবাজ শরীফ ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জুলাই মাসে করা এক চুক্তির জন্য।

 
যেখানে আমেরিকা পাকিস্তানের জন্য শুল্ক কমিয়েছে। আর বিনিময়ে পাকিস্তান তার জ্বালানি, খনিজ ও কৃষি খাতে মার্কিন বিনিয়োগের পথ খুলে দিয়েছে। শরীফ ট্রাম্পকে বলেছেন আপনি একজন শান্তির দূত। এমনকি সাম্প্রতিক ভারত পাকিস্তান সংঘাত থামাতে ট্রাম্পের মধ্যস্থতাকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি। মুনিরও পিছিয়ে থাকেননি। ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য বলে ঘোষণা করেছেন। কিন্তু নয়া দিল্লি ভিন্ন ছবি আঁকছে। ভারত স্পষ্টভাবে অস্বীকার করছে যে ট্রাম্প কোন ভূমিকা রেখেছেন দুই দেশের সীমান্ত সংঘাত থামাতে। তাদের মতে পাকিস্তান আসলে পুরোই কৌশলী খেলছে। কখনো আমেরিকার কাছে, কখনো চীনের কাছে আবার কখনো সৌদি আরবের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা টিকিয়ে রাখছে ইসলামাবাদ। ভারতের জন্য সমস্যা আরো গভীর।
 
যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ভারতীয় তেলের আমদানির উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে। কারণ দিল্লি এখনো রাশিয়ার সঙ্গে জ্বালানি ব্যবসা চালাচ্ছে। অন্যদিকে পাকিস্তান ট্রাম্পকে প্রশংসা আর খনিজ দিয়ে ঘিরে ধরছে। ফলে ভারতীয় নীতি নির্ধারকদের মনে প্রশ্ন জেগেছে ওয়াশিংটন কি সত্যিই দীর্ঘমেয়াদে বিশ্বাসযোগ্য মিত্র? অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের বিশ্লেষক হর্ষপন্ত বলেন, যদি ভারত মনে করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি অটোট নয় তবে ভারতের ইন্দোপ্যাসিফিক কৌশল পুরোপুরি বদলে যাবে।
 
তার মতে এর প্রভাব পড়বে কোয়াড জোটের উপরও। যেখানে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া আর জাপান একসঙ্গে চীনের উত্থান ঠেকাতে কাজ করছে। এদিকে পাকিস্তান থেমে নেই, সম্প্রতি তারাসৌদি আরবের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে। যেখানে বলা আছে যদি এক দেশের উপর আক্রমণ হয় অন্য দেশ সেটিকে নিজেদের বিরুদ্ধে আক্রমণ বলেই ধরে নেবে। ভারতের কূটনৈতিক মহলে অবশ্য এটিকে বড় কোন আতঙ্ক হিসেবে দেখা হয়নি। সাবেক কূটনৈতিক অজয় বিসারিয়া বলেন, পাকিস্তান দারিদ্র আর অস্থিরতায় জর্জরিত।
 
তাই তারা নানা খাত থেকে টাকা আনার জন্যই এসব জোট করছে। ভারত জানে এ সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী নয়। তবে আশাবাদীর সুর থাকলেও সন্দেহটা থেকে যাচ্ছে। সাবেক রাষ্ট্রদূত মীরাশংকর সতর্ক করেছেন ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি মূলত লেনদেনমুখী। তিনি দেশ দুটোকে অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার চোখে দেখেন। দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত সঙ্গীর মতো নয় পাকিস্তান এর ফাঁকে গোলে মাঝে মাঝেই ছোট ছোট সুবিধা দিচ্ছে যাতে ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে গুরুত্ব ধরে রাখা যায়। কিন্তু ইতিহাস বলে ওয়াশিংটন ইসলামাবাদ সম্পর্ক বারবারই ভেঙে পড়েছে। জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমিতাভ মাত্র ভাষায় আমেরিকার পাকিস্তান প্রেম নতুন কিছু নয়।
 
ঠান্ডা যুদ্ধ, সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধ প্রতিযুগেই তারা ইসলামাবাদকে হাতিয়ার বানিয়েছে। এখন হয়তো পশ্চিম এশিয়া আর মধ্য এশিয়ার অস্থিরতার জন্য দরকার পড়ছে। তবে মাত্র মনে করেন ওয়াশিংটন এখন অনেক বেশি সচেতন পাকিস্তানের দ্বিচারিতা নিয়ে এবং চীনের মোকাবেলায় ভারতকে যে কৌশলগতভাবে প্রয়োজন তা তারা ভালোভাবেই বোঝে। তবে মুখের কথায় বেড়াল মারলেও ভারতের অন্তরজ্বালা কমছে না। ট্রাম্পের কাছে নাকানি চুবানি খেয়ে মোদি প্রশাসন এখন দিশেহারা। দিল্লি কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না।

মন্তব্য করুন


Link copied