আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ৩ জুন ২০২৫ ● ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ৩ জুন ২০২৫
বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা

বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা

গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার এবং আহতদের জন্য বরাদ্দ ৪০৫ কোটি ২০ লাখ টাকা

গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার এবং আহতদের জন্য বরাদ্দ ৪০৫ কোটি ২০ লাখ টাকা

দাম কমতে পারে যেসব পণ্য-সেবার

বাজেট ২০২৫-২৬
দাম কমতে পারে যেসব পণ্য-সেবার

দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের

বাজেট ২০২৫-২৬
দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে সনাক রংপুরের মানববন্ধন

রবিবার, ১ জুন ২০২৫, দুপুর ০৪:২৩

Advertisement

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: ১ জুন ২০২৫, রংপুর: ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ উদ্যাপনের অংশ হিসেবে আজ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), রংপুরের উদ্যোগে এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। আজ সকাল ১১টায় রংপুরের প্রেসক্লাব সম্মুখে “প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে সকলে, একসাথে, এখনই” এ দাবিতে এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
 
এবারের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়’ (Ending Plastic Pollution)। প্রায় ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে রংপুর  সনাক সভাপতি ড. শাশ্বত ভট্টাচার্য এর সভাপতিত্বে সময় বক্তব্য রাখেন সনাক সহ-সভাপতি প্রফেসর মো: শাহ আলম, সনাক সদস্য অ্যাডভোকেট এ এ এম মুনীর চৌধুরী, জনস্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন বাংলাদেশ এর আহবায়ক মো. বেলাল আহমেদ, তরুন প্রতিনিধি ইয়েস সহ-দলনেতা বিক্রম কুমার শর্মা ও তাসলিমা আক্তার মিম প্রমুখ।
 
বক্তারা রংপুরের পরিবেশ রক্ষায় নাগরিক সচেতনতার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে শ্যামাসুন্দরী খালের দূষণমুক্ত ও প্লাস্টিকমুক্তকরণ, পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যবহার সংকোচনে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং পলিথিন ও প্লাস্টিক উৎপাদন বন্ধ করে এর বিকল্প পন্য প্রস্তত করা, পাটের ব্যবহার বৃদ্ধিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ, অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবী জানান। পরিবেশ রক্ষায় নাগরিক সচেতনতা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বচ্ছ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহŸানে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন এবং এ সময় পরিবেশ দিবস উপলক্ষে টিআইবি’র ধারণাপত্র বিতরণ করা হয়। মানববন্ধন অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সনাক সদস্য সামসাদ বেগম, মো: সিদ্দিকুর রহমান, মো: জাহাঙ্গীর আলম, নিশাত আরা বেগম, মোহাম্মদ শাহজাহান, সমাজকর্মী মোশফেকা রাজ্জাক, টিআইবি’র রংপুর ক্লাস্টারের কোঅর্ডিনেটর কমল কৃষ্ণ সাহা। উক্ত আয়োজনে সনাকের ইয়েস, এসিজি সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন এবং অধিকার আদায়ে নিজ নিজ অবস্থানে সোচ্চার থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
মানববন্ধনে এপ্রেক্ষাপটে, টিআইবি সংশ্লিষ্ট অংশীজনের জন্য নি¤œলিখিত সুপারিশসমূহ তুলে ধরা হয়:
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আইএনসিতে উত্থাপনের জন্য সুপারিশ: বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল কর্তৃক উত্থাপনের জন্য বিষয়সমূহ;
১. প্লাস্টিক দূষণ রোধ-সংক্রান্ত চুক্তিটি দ্রæততার সাথে সম্পাদন করতে হবে। এক্ষেত্রে, জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে স্বার্থের দ্ব›দ্ব-সংশ্লিষ্টদের বাদ দিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নিশ্চিতের জোরালো দাবি উত্থাপন করতে হবে। এজন্য, বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে একত্রে কাজ করতে হবে;
২. চুক্তির আওতায় ২০৪০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক তৈরিতে ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং উৎপাদিত প্লাস্টিক বর্জ্যরে শতভাগ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের দাবি উত্থাপন করতে হবে;
৩. প্লাস্টিক দূষণ রোধ-সংক্রান্ত চুক্তির আওতায় দেশগুলোকে প্লাস্টিক উৎস থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের তথ্য স্বচ্ছতার সাথে নিরূপণ করতে হবে। সেই তথ্যর ভিত্তিতে এনডিসি’র তথ্য হালনাগাদ ও সংশোধন করে উপস্থাপনের দাবি উত্থাপন করতে হবে;  
৪. চুক্তির আওতায় “দূষণকারী কর্তৃক ক্ষতিপূরণ প্রদানের নীতি” বা চড়ষষঁঃবৎ-ঢ়ধুং ঢ়ৎরহপরঢ়ষব – এর ভিত্তিতে, প্লাস্টিক উৎপাদনকারীদের অবদান অনুযায়ী দূষণের দায় দূষণকারীকে গ্রহণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে হবে।
বাংলাদেশ সরকারের জন্য সুপারিশ
৫. ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে সেই ঘোষণা ২০২৫ সালের আইএনসি সভা থেকে প্রদান করতে হবে;
৬. “ন্যাশনাল থ্রিআর স্ট্রাটেজি ফর ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট” কৌশলপত্রটি হালনাগাদ ও সংশোধনসহ পরিবেশ সংক্রান্ত বৈশি^ক প্রতিশ্রæতির আলোকে একটি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে;
৭. প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ, পৃথকীকরণ, পুনঃপ্রক্রিয়াজতকরণের ব্যবস্থাসহ একটি আধুনিক ও কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে পরিবেশ অধিদপ্তর, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভাগুলোর কারিগরি ও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে;
৮. বর্জ্য ব্যবস্থাপনা-বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জনসচেতনতা ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে সরকারি-বেসরকরি প্রতিষ্ঠান, উদ্যোক্তা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী এবং তরুণসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে;
৯. প্লাস্টিক শিল্পের জন্য আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি ও অন্যান্য প্রণোদনা হ্রাস করে পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণকে উৎসাহিত করতে হবে;
১০. অপ্রাতিষ্ঠানিক প্লাস্টিক পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকারীদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করার লক্ষ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে হবে এবং প্লাস্টিক-সংক্রান্ত অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে পরিবেশ দূষণ হ্রাস করতে হবে;
১১. সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বিশেষকরে, ‘উৎপাদনকারীর সম্প্রসারিত দায়িত্ব’ সম্পর্কিত নির্দেশিকাটির ব্যপক প্রচারণা নিশ্চিত করতে হবে;
১২. যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলা বন্ধ এবং পরিবেশ দূষণ রোধে সাধারণ জনগণের মধ্যে প্লাস্টিকের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে;
১৩. নদী, জলাশয় ও পরিবেশের বিভিন্ন উৎসে থাকা প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণসহ পরিবেশ সুরক্ষা কার্যক্রমে নাগরিক উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে;
১৪. প্লাস্টিক দূষণ ও পরিবেশের ক্ষতিসহ এখাত-সংশ্লিষ্ট অনিয়মের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
 
উল্লেখ্য, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষায় বিশ^ব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টি, অধিপরামর্শ কার্যক্রম এবং এ সংক্রান্ত বহুমুখী উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে ১৯৭৩ সাল থেকে প্রতিবছর ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়ে আসছে। এ বছর দিবসটি উপলক্ষ্যে টিআইবি দেশব্যাপী ৪৫টি সনাক এলাকায় একযোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে।

মন্তব্য করুন


Link copied