বিমান বিধ্বস্ত : আহমেদাবাদে এ পর্যন্ত ২৪০ মরদেহ উদ্ধার

বিমানটি ব্রিটিশ রাজধানী লন্ডনের দক্ষিণে গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাচ্ছিল।

‘আমরা এখনো মৃতের সংখ্যা যাচাই করছি, যার মধ্যে রয়েছে ওই ভবনের নিহতরাও যেখানে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল,’ রয়টার্সকে জানিয়েছেন রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা বিধি চৌধুরী।

তিনি জানান, মৃত্যুর সংখ্যা ২৪০-এর বেশি, যা আগে বলা ২৯৪ জন থেকে সংশোধন করা হয়েছে—কারণ পূর্বের হিসেবে কিছু দেহাংশ দ্বিগুণ গণনা হয়েছিল। ঠিক কতজন বিমানে ছিলেন আর কতজন মাটিতে ছিলেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এর আগে তিনি বলেছিলেন, ‘প্রায় ২৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যেহেতু উড়োজাহাজটি একটি হোস্টেল ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হয়েছে, সেখানে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থীও নিহত হয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘১১এ নম্বর আসনে বসা এক যাত্রীকে জীবিত পাওয়া গেছে। তিনি বিমানের জরুরি নির্গমন দরজার পাশেই ছিলেন।

গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদ শহরের পুলিশপ্রধান জি এস মালিক রয়টার্সকে জানান, দুর্ঘটনাস্থল থেকে এখন পর্যন্ত ২০৪টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কেউ বেঁচে যাওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকা পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, বিমানে থাকা ২৪২ জনের সবাই নিহত হয়েছে।

পুলিশ কমিশনার মালিক আরো বলেন, উদ্ধার করা মৃতদেহের মধ্যে বিমান আরোহী ছাড়াও দুর্ঘটনাস্থলের স্থানীয় বাসিন্দারা থাকতে পারে।

দুর্ঘটনাস্থলের ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানটির বিভিন্ন অংশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ভবনটির চারপাশে। বিমানের লেজের অংশটি ভবনের ওপর আটকে রয়েছে।

সিএনএন নিউজ-১৮ চ্যানেল জানিয়েছে, রাজ্য পরিচালিত বিজে মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলের ডাইনিং এলাকায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়, যাতে অনেক মেডিক্যাল শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

রয়টার্সকে দেওয়া এক সূত্রের তথ্য মতে, বিমানের যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন ২১৭ জন প্রাপ্তবয়স্ক, ১১ শিশু ও দুই নবজাতক। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, এদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডীয় নাগরিক।

বিমান ট্র্যাকিং সাইট ফ্লাইটরাডার২৪ জানিয়েছে, বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি ছিল বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার, যা এখন পর্যন্ত অন্যতম আধুনিক যাত্রীবাহী বিমান। এভিয়েশন সেফটি নেটওয়ার্কের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে বাণিজ্যিকভাবে চালু হওয়ার পর এটি ড্রিমলাইনারের প্রথম দুর্ঘটনা।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্সে পোস্টে লিখেছেন, ‘আহমেদাবাদের এই ট্র্যাজেডি আমাদের স্তব্ধ ও শোকাহত করে দিয়েছে। এটি ভাষার অতীত বেদনার।’

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, দুর্ঘটনার ছবি ‘বিধ্বংসী’ এবং তিনি এই পরিস্থিতির বিকাশ সম্পর্কে নিয়মিতভাবে অবগত হচ্ছেন। বাকিংহাম প্যালেসের একজন মুখপাত্র জানান, রাজা চার্লসকেও আপডেট জানানো হচ্ছে। ব্রিটিশ রাজা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমার স্ত্রী ও আমি আহমেদাবাদে আজ সকালে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ঘটনায় চরমভাবে শোকাহত।’