লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের পাটগ্রামে পাথরবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে দুজনকে কারাদণ্ড দেওয়ার পর পাটগ্রাম থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে থানায় হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে কারাদন্ডপ্রাপ্ত দুজনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাটগ্রাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাইদুল ইসলাম মানিক ও একজন নৈশপ্রহরীসহ চার বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত অপর তিনজন হলেন, পাটগ্রাম পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হাবিবুল ইসলাম, বিএনপি কর্মী আব্দুর রশিদ ও নৈশ প্রহরী আবুল কালাম।
এর আগে বুধবার বিকেলে পাটগ্রামে একটি পাথরবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে রাতেই একদল দুষ্কৃতিকারী পাটগ্রাম থানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় থানার আসবাবপত্র ভাঙচুরসহ ব্যাপক তাণ্ডব চালায় তারা।
ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকালে পাটগ্রাম থানা পরিদর্শনে করেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, লালমনিরহাট পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার। দিনভর সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে বৃহষ্পতিবার রাতে ২৭ জনকে শনাক্ত করে নামীয় আসামি করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও সহস্রাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে পাটগ্রামে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাটগ্রাম এলাকায় অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোড়দার করা হয়েছে।
অপর দিকে এ ঘটনায় বিএনপির সম্পৃক্ততা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে শুক্রবার দুপুরে পাটগ্রাম উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান।সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, "বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড পেইজে এ ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে একটি পোস্ট দিয়েচেন যা অনবিপ্রেক, উদ্দেশ্যমূলক ও দুঃখজনক। সেদিনের ঘটনাটি নিছক ইজারাদার ও প্রশাসনের মধ্যকার বিষয়। যার সাথে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির নুন্যতম সংশ্লিষ্টতা নেই। বিএনপি একটি উদারপন্হী ও জনকল্যাণমুখি রাজনৈতিক দল, এ দলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। এমতাবস্থায় বিএনপি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চায়, দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কোন ব্যক্তির অপকর্মের দায় বিএনপি অতিতেও নেয়নি, ভবিষ্যতেও নিবে না। তাই কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির কোন অপকর্মের দায় বিএনপির উপর চাপানোর অপচেষ্টা করলে তা হবে খুবই দুঃখজনক।
তারপরেও এ ঘটনায় যদি তাদের দলের কেউ জড়িত থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা বিএনপি ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক একেএম মমানুল হক, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাহেদুল ইসলাম পাটোয়ারী সাজু, জেলা যুবদলের আহবায়ক আনিছুর রহমান ভিপি আনিছ, পাটগ্রাম পৌর বিএনপির সভাপতি মোস্তফা সালাউজ্জামান ওপেল, পাটগ্রাম উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউর রহমান প্রমুখ।