নিউজ ডেস্ক: পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া গ্রামের দরিদ্র পরিবারে জন্ম এমদাদুল হকের। পিতা ছোবাহান হাওলাদার ও মা ফাতিমা বেগমের তিন সন্তানের মধ্যে ছোট ছিলেন তিনি।
অভাব-অনটনের কারণে শিক্ষাজীবন ব্যাহত হলেও বাবা-মায়ের চিকিৎসা ও সংসার চালাতে গাড়ি চালানোর পেশা বেছে নেন। মাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন তার আর কষ্ট করতে হবে না। কিন্তু সেই তরতাজা যুবক ঘরের সুদিন ফেরানোর পরিবর্তে ফিরলেন লাশ হয়ে। এরপর থেকে শোকে বিহ্বল মা ফাতিমা।
জানা যায়, গত বছরের ২০ জুলাই এমদাদুল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন। আন্দোলনের একপর্যায়ে উত্তর বাড্ডার এএমজেড হাসপাতালের সামনে পুলিশ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি ছোড়ে। খুব কাছ থেকে ছোড়া পুলিশের গুলি কপাল ভেদ করে তার মাথা চিরে পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়, ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। সহযোদ্ধারা হাসপাতালে নিতে গেলে মাঝপথেই তার মৃত্যু হয়। লাশ গ্রামে পৌঁছলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা প্রকাশ্য জানাজা বন্ধের অপচেষ্টা চালায়। তবে জনরোষে তারা পিছু হটলেও দাফনে অংশগ্রহণকারীরা পরে নানা হুমকির মুখে পড়েন।
ছেলের চলে যাওয়ার ১১ মাস হতে চললেও মা ফাতিমার মন মানতে চায় না। অসম্ভব জানার পরও সন্তানকে ফিরে পেতে চান তিনি একটু সময়ের জন্য হলেও। তিনি বলেন, আমার ছেলেটা যদি একটু ফিরে আসত! ও তো বলেছিল, মা তোমার আর খালে গিয়ে পানি আনতে হবে না। আমি মোটর কিনে দেব। কিন্তু পানির মোটরের বদলে পেলাম ছেলের লাশ।
পিতা ছোবাহান হাওলাদারও ছেলের স্মৃতিতে বাকরুদ্ধ হয়ে আছেন। এখন তিনি চান ছেলের হত্যাকারীদের বিচার।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, এমদাদুল ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাকে হারিয়ে পরিবারটি এখন দিশাহারা। জুলাই ফাউন্ডেশন ও সরকারি-বেসরকারি সহায়তায় কোনোমতে চলছে পরিবারের খরচ।