আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ৭ অক্টোবর ২০২৫ ● ২২ আশ্বিন ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ৭ অক্টোবর ২০২৫
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন আগামী ২০ ডিসেম্বর

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন আগামী ২০ ডিসেম্বর

বিসিবি পরিচালক হলেন রুবাবা দৌলা

বিসিবি পরিচালক হলেন রুবাবা দৌলা

এআই-ভিত্তিক অপব্যবহার প্রতিরোধে কতটা প্রস্তুত ইসি?

এআই-ভিত্তিক অপব্যবহার প্রতিরোধে কতটা প্রস্তুত ইসি?

অপরাধের ‘স্বর্গরাজ্য’ মোহাম্মদপুর, ‘আস্তানা’ জেনেভা ক্যাম্প

অপরাধের ‘স্বর্গরাজ্য’ মোহাম্মদপুর, ‘আস্তানা’ জেনেভা ক্যাম্প

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় পাঁচ দিনে ২ রোগীর মৃত্যু

শুক্রবার, ১ আগস্ট ২০২৫, রাত ১২:০০

Advertisement

প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: অভিযোগ উঠেছে  চিকিৎসা না পেয়ে বুধবার ৩০ জুলাই'২৫ রাতে হাসপাতালের ৬ষ্ঠ তলার পুরুষ ওর্য়াডে এবং ২৫ জুলাই'২৫ রাতে হাসপাতালের বারান্দায় দ্বায়িত্বরত চিকিৎসক হাসপাতালে না থাকায় চিকিৎসার অভাবে এ দুই রোগীর মৃত্যু ঘটে।

৩০ জুলাই নিহত ওই রোগীর নাম ফুলবাবু দাস (১৮)। সে উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণী ইউনিয়নের পূর্ব নাওড়া গ্রামের সুখ চরণ দাসের ছেলে।

নিহতের স্বজনদের দাবী, বুধবার রাত ৮টার দিকে ফুলবাবুর শ্বাস কষ্ট দেখা দিলে তাকে দ্রুত কুড়িগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে তাকে ভর্তি করে ৬ষ্ঠ তলায় নেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় ডাক্তার ও নার্স তাকে দেখতে আসেননি। ততক্ষণে মুখ দিয়ে রক্ত ক্ষরণ শুরু হয়। এরমধ্যে রাত ১১টার দিকে সে মৃত্যু বরণ করে।

এর আগে গত ২৫ জুলাই'২৫ চিকিৎসকের অবহেলায় ও ডিএমএফ এক শিক্ষার্থীকে ভাড়ায় জরুরী বিভাগের দ্বায়িত্ব দিয়ে দ্বায়িত্বরত চিকিৎসক প্রাইভেট বানিজ্য শেষে দ্বায়িত্বকালীন সময় শশুর বাড়িতে অবস্থান করায় সু চিকিৎসার অভাবে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের মিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা জামাল বাদশাহ (৫৫) নামে এক রোগীর  হাসপাতালের বারান্দায় অবহেলায় মৃত্যু হয়।

নিহতের ফুলবাবুর দাসের মা বকুল রাণী দাস তার অভিযোগে বলেন, হাসপাতালে ভর্তি করার পর আমার ছেলের মুখ দিয়ে রক্ত বাহির হচ্ছিল। পরে শ্বাস কষ্টে ছেলে আমার মারা যায়। ছেলে মারা যাওয়ার সময় ডাক্তার ও নার্সকে আমরা পাইনি। চিকিৎসার অবহেলায় তার ছেলে ফুলবাবু মারা গেছে বলে দাবী করেন তিনি।
নিহত ফুলবাবু দাসকে নিয়ে আসা পল্লী চিকিৎসক বাদল সরকার জানান, রাত ৯টায় দিকে আমরা কাশির সাথে রক্তপরা ও শ্বাসকষ্টজনিত কারণে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করি। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও কোনো ডাক্তার বা নার্স দেখতে আসেনি। জরুরি বিভাগ থেকে যেসব ওষুধপত্র দিয়েছে সেসব নিয়ে এসে দেখি এখানে রোগীকে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য চিল্লাচিল্লি করা হচ্ছে কিন্তু অক্সিজেন দেওয়া হয়নি। রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে ডাক্তাকে রোগীর কাছে আসার জন্য অনুরোধ করলেও কেউ আসেনি।

হাসপাতালে প্রত্যক্ষদর্শী সবুজ মিয়া বলেন, ফুলবাবু অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে যাচ্ছিল ও তার নাক দিয়ে রক্ত ঝড়তেছিল। পরে আমি তাকে বিছানায় শুয়ে রাখি। রোগীর অক্সিজেনের সমস্যা দেখে নার্সদের ডাক দিই কিন্তু প্রায় আধাঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কেউ আসেনি। ততক্ষণে রোগী মারা গেছে। এমনকি মৃত ব্যক্তিকে তারা ইসিজি করতে বলে আর সেই মৃত রোগীকে স্যালাইন দেয়।
সেখানে দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স কোহিনুর খাতুন বলেন, আমরা একটা সেকেন্ডের জন্য বসে নাই। এখানে শতশত রোগী। সে সময় একসঙ্গে সাতজন রোগী আসায় রিসিপশন ভরা ছিল। এরকম ভরা থাকলে কি কাজ করা সম্ভব। দায়িত্বে আমাদের কোনো অবহেলা ছিল না বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে দায়িত্বরত চিকিৎসক আব্দুল হান্নান বলেন, রোগীর অবস্থা আশংকাজনক ছিল। ওই রোগীর বিষয়ে কেউ কিছু আমাকে জানায়নি। আপনারা আবাসিক মেডিকেল অফিসারের সঙ্গে কথা বলুন।
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. শহিদুল্লাহ লিংকন দায় সারা ভাবে চিকিৎসকের অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি শোনার পর আমি সকালে তদন্ত করেছি। সে সময় রোগীর চাপ ছিল খুব। যিনি মারা গেছেন তার শরীরে প্রচুর জ্বর ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। তাকে রেফার্ড করা হলেও তারা রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যায়নি।

মন্তব্য করুন


Link copied