নিউজ ডেস্ক: বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি এবং আর্থিক প্রনোদনা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
রোববার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ‘শিক্ষকতা পেশা: মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘এনটিআরসিএর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধান, অধ্যক্ষ নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি অচিরেই বাস্তবায়ন হবে। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি এবং আর্থিক প্রনোদনা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
নির্ভুলভাবে পাঠ্যবই ছাপাতে এনসিটিবির সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
এমপিওভুক্ত স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা ৫০০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ফলে এখন থেকে এই শিক্ষকরা প্রতি মাসে এক হাজার ৫০০ টাকা করে বাড়ি ভাড়া ভাতা পাবেন।
বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা প্রতি মাসে এক হাজার টাকা হারে বাড়ি ভাড়া ভাতা পান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তাদের ভাতার পরিমাণ নির্ধারিত না রেখে মূল বেতনের শতাংশ হারে দেওয়ার প্রস্তাব পাঠায় অর্থ মন্ত্রণালয়। তাতে সর্বনিম্ন বাড়ি ভাড়া ভাতা ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করে মূল বেতনের ৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বড় অংশই নিজের বাড়িতে থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করেন। তাই তাদের বাড়ি ভাড়া ভাতার তেমন প্রয়োজন হয় না।
তিনি আরও বলেন, তবু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়ে মূল বেতনের শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া ভাতা না দিয়ে প্রত্যেকের ভাতার পরিমাণ ৫০০ টাকা বাড়ানোর সারসংক্ষেপ অনুমোদন করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সারা দেশে স্কুল ও কলেজে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা তিন লাখ ৯৮ হাজার ৬৮ জন। বর্তমানে এক হাজার টাকা হারে বাড়ি ভাড়া ভাতা দিতে প্রতি বছর সরকারের ব্যয় হয় প্রায় ৪৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্কুলের শিক্ষক ও কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা ৩৫৭ কোটি টাকা ও কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের ভাতা ১১২ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে মূল বেতনের ২৫ শতাংশ উৎসব বোনাস পেতেন। সম্প্রতি তা বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। এতে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে বছরে ২২৯ কোটি টাকা।
নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়ন ও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার বাড়তি চাপ অর্থ মন্ত্রণালয়ের জন্য টেনশনের ব্যাপার উল্লেখ করে মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমার সবচেয়ে ভয়ের কারণ হলো নতুন বেতন স্কেল বাস্তবায়ন ও এমপিওভূক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বাড়তি চাপ।
তিনি আরও বলেন, মার্চ-এপ্রিল থেকে বেতন স্কেল কার্যকর করা হলেও জুন পর্যন্ত বাড়তি বেতনের টাকা চলতি বাজেটেই সংস্থান করতে হবে। এছাড়া সরকার বিপুল পরিমাণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছে, যাদের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পরিশোধেও অর্থ প্রয়োজন হচ্ছে।