আর্কাইভ  শনিবার ● ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ● ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
আর্কাইভ   শনিবার ● ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
রাজনীতি এখন ভোটের মাঠে

► ঘরে ঘরে ছুটছেন প্রার্থীরা দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি
► গ্রাম থেকে শহরে চলছে সভাসমাবেশ মিছিল
রাজনীতি এখন ভোটের মাঠে

আসনভিত্তিক ছবিসহ ভোটার তালিকা ছাপাতে ইসির নির্দেশ

আসনভিত্তিক ছবিসহ ভোটার তালিকা ছাপাতে ইসির নির্দেশ

দেশের কল্যাণে ঐকবদ্ধ না হলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে: তারেক রহমান

দেশের কল্যাণে ঐকবদ্ধ না হলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে: তারেক রহমান

ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীর তথ্য চেয়ে ডিএমপির অনুরোধ

ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীর তথ্য চেয়ে ডিএমপির অনুরোধ

এক সপ্তাহে ৪ খুনের মামলায় জামিন পেলেন ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী

শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, রাত ০৯:১১

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন প্রকাশ ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না হাইকোর্ট থেকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে চারটি চাঞ্চল্যকর খুনের মামলায় জামিন পেয়েছেন। তবে জামিনের বিষয়টি পুলিশ, প্রশাসন ও সাংবাদিকদের কাছ থেকে আড়ালে রাখতে নানা কৌশল নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। 

সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ১০টি খুনসহ মোট ১৯টি মামলা রয়েছে। এসব মামলার মধ্যে চট্টগ্রামের জোড়া খুন এবং প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী সরোয়ার বাবলা হত্যার ঘটনাও রয়েছে। তার স্ত্রী তামান্নার বিরুদ্ধেও একাধিক খুনসহ আটটি মামলা রয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট চান্দগাঁও থানার দোকান কর্মচারী শহিদুল ইসলাম হত্যা মামলায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট থেকে সাজ্জাদ ও তামান্নাকে জামিন দেওয়া হয়। একই দিনে একই বেঞ্চ ১৮ আগস্ট পাঁচলাইশ থানার ওয়াসিম আকরাম হত্যা মামলায় এই দম্পতিসহ তিনজনকে জামিন দেন। এর এক সপ্তাহ পর, ২২ সেপ্টেম্বর, পাঁচলাইশ থানার দোকান কর্মচারী মো. ফারুক হত্যা মামলা এবং আফতাব উদ্দিন তাহসীন হত্যা মামলাতেও তারা জামিন পান। চারটি মামলাতেই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন দেন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ সুমনের দ্বৈত বেঞ্চ। হাইকোর্টে ১৫ ও ২২ সেপ্টেম্বর জামিন দেওয়া হলেও সংশ্লিষ্ট আদেশে সহকারী রেজিস্ট্রার মো. ইউসুফ আলী স্বাক্ষর করেন যথাক্রমে ১৮ সেপ্টেম্বর ও ৫ অক্টোবর। তবে এসব জামিননামা চট্টগ্রামের আদালতে এসে পৌঁছায় প্রায় আড়াই মাস পর, গত ৮ ডিসেম্বর।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, জামিন পাওয়ার পরও সঙ্গে সঙ্গে জামিননামা চট্টগ্রাম আদালত বা কারাগারে পাঠানো হয়নি। বরং ধাপে ধাপে বিলম্বের কৌশল নেওয়া হয়। সাধারণত হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই জামিননামা কারাগারে পৌঁছে আসামির মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। চারটি মামলাতেই জামিন আবেদনে তামান্নার নাম এক নম্বরে রাখা হয়। নারী হিসেবে সহানুভূতি পাওয়ার পাশাপাশি সাজ্জাদের সন্ত্রাসী পরিচয় আড়ালে রাখার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ভয়ংকর বা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিন হলে সাধারণত রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার জজ আদালতে গিয়ে জামিন স্থগিতের আবেদন করলেও এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।

সাজ্জাদের আইনজীবী আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, সাজ্জাদ ও তামান্না চারটি মামলায় জামিন পেয়েছেন এবং জামিননামা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে হাইকোর্ট থেকে জামিননামা পাঠাতে দেরির বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার শাহ সৈয়দ শরীফ জানান, সাজ্জাদের বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি মামলায় হাইকোর্টের জামিননামা এসেছে। তামান্নার চারটি মামলার জামিননামা পাওয়া গেছে। সাজ্জাদ বর্তমানে রাজশাহী এবং তামান্না ফেনী কারাগারে থাকায় সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সেখানে পাঠানো হয়েছে।

বাবলা হত্যাকাণ্ড ও স্থানান্তর
জামিন পাওয়ার কিছুদিন পরই সাজ্জাদের প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার বাবলাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর সাজ্জাদকে ঘিরে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয় এবং প্রশাসনের নজরদারি বাড়ে। গত ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার খন্দকারপাড়া এলাকায় চট্টগ্রাম–৮ আসনে (বোয়ালখালী–চান্দগাঁও) বিএনপি মনোনীত প্রার্থী চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ এর নির্বাচনী জনসংযোগে গুলির করার এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গে থাকা ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন ও এরশাদ উল্লাহসহ আরও পাঁচজন। নির্বাচনী প্রচারের সময় বাজারে সরোয়ার বাবলাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পেছনে কারাগারে বসেই ফোনের মাধ্যমে সাজ্জাদ অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণ করছিলেন—এমন অভিযোগ ওঠে। এরপর গত ১৪ নভেম্বর সাজ্জাদকে রাজশাহী এবং গত ১৮ নভেম্বর তামান্নাকে ফেনী জেলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এর আগে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর সাজ্জাদ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। তাঁকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় বাবলাকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিয়েছিলেন তামান্না—এমন অভিযোগও রয়েছে। এর কিছুদিন পরই বাবলা হত্যাকাণ্ড ঘটে।

মন্তব্য করুন


Link copied