আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ৪ নভেম্বর ২০২৫ ● ২০ কার্তিক ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ৪ নভেম্বর ২০২৫
আলু এখন কৃষকের বোঝা

আলু এখন কৃষকের বোঝা

সাক্ষী না আসায় ফের পেছাল আবু সাঈদ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ

সাক্ষী না আসায় ফের পেছাল আবু সাঈদ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ

আগামী সপ্তাহে শেখ হাসিনার বিচারের রায় হবে : মাহফুজ আলম

আগামী সপ্তাহে শেখ হাসিনার বিচারের রায় হবে : মাহফুজ আলম

বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যেসব নারী প্রার্থীরা

বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যেসব নারী প্রার্থীরা

কর্তাদের জন্য রেলগাড়ি উল্টো পথে ৬ কিলোমিটার! যাত্রীদের ভোগান্তি-ক্ষোভ

মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫, দুপুর ০৩:১৫

Advertisement

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: রেলওয়েতে নিয়ম-কানুন, সময়সূচি সবই যেন সাধারণ যাত্রীদের জন্য! কিন্তু রেলের কর্তাব্যক্তিদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার কাছে সেই নিয়মনীতি যে কতটা ঠুনকো, তার প্রমাণ মিলল সোমবার বিকালে। 
 
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও রোড রেল স্টেশনে এমন ঘটনা ঘটে। ট্রেনটি পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে পার্বতীপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছিল। ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা আলম লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে আছেন।
 
পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুরগামী একটি ট্রেন যাত্রীদের নিয়ে রীতিমতো উল্টো পথে ছুটল প্রায় ৬ কিলোমিটার! এর কারণ, ট্রেনের যাত্রীদের গন্তব্যের চেয়েও বেশি জরুরি ছিল রেলের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার গন্তব্যে পৌঁছানো। কিন্তু এত কাণ্ডের পরও যখন কর্মকর্তারা 'লোকাল' ট্রেনে চড়তে অস্বীকার করলেন, তখন সাধারণ যাত্রীদের ক্ষোভ গিয়ে পৌঁছাল চরমে।
 
​জানা যায়, প্রতিদিনের মতো পঞ্চগড় থেকে ট্রেনটি যাত্রী নিয়ে পার্বতীপুরের দিকে যাচ্ছিল। ঠাকুরগাঁও রোড রেলওয়ে স্টেশন থেকে যাত্রী তুলে ট্রেনটি যখন শিবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছেছে, তখনই বাঁধে বিপত্তি। ট্রেনচালক জানতে পারেন, রেলওয়ের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ওই ট্রেনেই ফিরবেন এবং তারা অপেক্ষা করছেন ঠাকুরগাঁও রোড রেলওয়ে স্টেশনে।
 
​কর্তাদের নির্দেশ মেনে শিবগঞ্জ থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার পথ উল্টো দিকে যেতে হয় ট্রেনটিকে। অর্থাৎ, গন্তব্যের দিকে যাওয়া ট্রেনটি হঠাৎই পেছনের দিকে ছুটতে শুরু করে। এমন অদ্ভুত কাণ্ড দেখে ট্রেনের শত শত যাত্রী প্রথমে অবাক হন, পরে তাদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম হয়। অনেকের সময় নষ্ট হচ্ছিল, আবার অনেকেরই গন্তব্যে পৌঁছানোর কথা ছিল সময়মতো। কিন্তু কর্তাদের জন্য তাদের সময় ও ভোগান্তি উপেক্ষা করা হলো।
 
​কর্তাদের জন্য ৬ কিলোমিটার উল্টো পথে ছুটে অবশেষে ট্রেনটি যখন ঠাকুরগাঁও রোড রেলওয়ে স্টেশনে ফিরে এল, তখন দেখা গেল আরেক দৃশ্য। কর্মকর্তারা যখন জানতে পারলেন, এটি একটি লোকাল ট্রেন, তখন তারা সেই ট্রেনে চড়তে আপত্তি জানালেন!
 
​ট্রেনের যাত্রী রফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "আমাদের ভোগান্তিতে ফেলে ট্রেন উল্টো পথে আনা হলো। আর এখন তাঁরা 'লোকাল ট্রেন' বলে চড়বেন না! এটা কেমন কথা? খোদ রেলের বড় কর্মকর্তা হয়েও তাঁরা জানেন না যে এটা লোকাল ট্রেন ছিল? আমাদের সময় নষ্ট, ভোগান্তি, সব কি বৃথা?"
 
​কর্মকর্তাদের এমন আচরণে সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়। এই পুরো ঘটনায় রেল বিভাগের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। যাত্রীদের অভিযোগ, রেলওয়েতে সাধারণ মানুষের স্বার্থের চেয়ে কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত সুবিধা ও খেয়ালখুশির দামই বেশি।
 
​এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও সহকারী স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, "আমাদের ডিভিশনাল কয়েকজন দায়িত্ব রত কর্মকর্তারা আমাদের ঠাকুরগাঁওয়ে ছিলেন। তারা মূলত এখান থেকে যাওয়ার কথা ছিলেন। যে ট্রেনের কথা আপনি বলছেন সেই ট্রেনটি এখান থেকে ৬ কিলোমিটার গিয়েছিল। পরবর্তীতে কন্ট্রোল রুম থেকে লালমনিরহাট সেখান থেকে ট্রেনটিকে আবার ব্যাক করা হয়। এ বিষয়টি আমরা আগে জানতাম না। পরবর্তীতে আসার পরে জানতে পেরেছি আমাদের এখানে কর্মকর্তারা সেই গাড়িতে করে যাননি, তারা অন্য গাড়িতে করেই গিয়েছেন।"
 
এই বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আবু হেনা মোস্তফা আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মন্তব্য করুন


Link copied