আর্কাইভ  সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫ ● ১০ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫
সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

► এক চুক্তি, চার সমঝোতা স্মারক ও এক কর্মসূচি সই
একাত্তর ইস্যু দুবার মীমাংসিত, বললেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী
বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

উল্টো বাড়ছে দিনদিন, চলছে শুধুই আলোচনায়
রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

ফিরে দেখা জুলাই বিপ্লব

গুলি করার পর মাসুদকে হাসপাতালে নিতে বাধা

রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫, দুপুর ০২:৫৭

Advertisement Advertisement

নিউজ ডেস্ক: স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে গত বছরের ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে ছাত্র-জনতার অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন সরওয়ার জাহান মাসুদ। সেখানেই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন।

তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করে ছোট ভাই মাসুম আল সামীর। কিন্তু আওয়ামী ক্যাডাররা তাকে হাসপাতালে নিতে বাধা দেয়। মৃত্যুর পর লাশ রাতেই দাফন করার জন্য চাপ দেওয়া হয়।

জানা গেছে, সেদিন আওয়ামী ক্যাডারদের ছোড়া গুলি ফেনী কলেজের শিক্ষার্থী মাসুদের বুকে দুটি এবং একটি হাতে লাগে। গুলিবিদ্ধ এ তরুণকে পরে স্থানীয় সার্কিট হাউস সড়ক থেকে উদ্ধার করে তারই ছোট ভাই মাসুম।

মাসুম জানায়, আমার ভাই বেঁচেছিল, সময়মতো হাসপাতালে নিতে পারলে প্রাণে বেঁচে যেত। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পথে গাড়ি থামিয়ে আমাদের বাধা দিয়েছিল। ওই দলের নেতৃত্ব দেয় দাগনভূঞা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাতুভূঞা ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুল্লা আল মামুন। ওই সন্ত্রাসী আমার ভাইকে বলেছিলÑসে তো রাজাকার, রাজাকার মরলে কিছু হয় না।

মাসুম আরো বলে, সেদিন ভাইয়া আমার আগে আন্দোলনে অংশ নিতে মহিপালে যায়। আমি পরে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করি। আমি মহিপাল ফ্লাইওভারের উপরে উঠি, ভাইয়া নিচে ছিল। একপর্যায়ে জোহরের নামাজের সময় হলে ছাত্র-জনতা মহাসড়কেই নামাজে দাঁড়িয়ে যায়। এ সুযোগে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা অতর্কিত চারদিক ঘেরাও করে গুলি করতে থাকে। ভাইয়ার বুকে দুটি ও হাতে একটি গুলি লাগে। গুলির আওয়াজ শুনে আমি ভাইয়াকে ফোন দিচ্ছিলাম। কেউ ধরছিল না। পরে সেখানে থাকা এক ব্যক্তি ফোন ধরে বললেন ভাইয়া গুলিবিদ্ধ হয়েছে। অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় পড়ে আছে। এরপর ভাইয়াকে হাসপাতালে নিতে চাইলে মামুনের নেতৃত্বে যুবলীগ-ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাদের গাড়ি থামিয়ে দেয়। এ খবর বাড়ি জানানোর পর আত্মীয়স্বজনরা সেখানে গেলে তাদেরও মারধর করে ওই সন্ত্রাসীরা। এরপরও তাদের হাত-পায়ে ধরে ভাইকে নিয়ে দাগনভূঞা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসাকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। উপজেলার পাকিস্তান বাজার এলাকায় আমাকে আবারও মারধর করা হয়।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মাসুম আরো বলেন, তারপর লাশ পাঠানো হয় ফেনী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে। কিন্তু সেখান থেকে লাশ দ্রুত বাড়ি নিতে চাইলেও বাধা দেওয়া হয়। পরে রাত ১টায় ভাইয়ার লাশ বুঝে পেলেও রাতের মধ্যেই তা দাফনের নির্দেশ দেয় খুনিরা।

ছেলে হারানোর বেদনা ভুলতে পারছেন না শহীদ মাসুদের মা বিবি কুলসুম। ছেলের শোকে এখনো আহাজারি করেন তিনি। তিনি বলেন, আমার ছেলে মানুষের জন্য কাজ করত। সামাজিক কাজে যুক্ত থেকে মানুষের উপকারে ব্যস্ত থাকত। তারা আমার ছেলেকে মেরে ফেলল। আমার ও তার বাবার সঙ্গে বিদেশে যাওয়ার কথা ছিল ছেলের। কিন্তু তার আগেই তাকে দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হলো। আমার সন্তানের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।

মন্তব্য করুন


Link copied