আর্কাইভ  রবিবার ● ১২ অক্টোবর ২০২৫ ● ২৭ আশ্বিন ১৪৩২
আর্কাইভ   রবিবার ● ১২ অক্টোবর ২০২৫
জিম্মিরা মুক্ত হওয়ামাত্রই গাজার সুড়ঙ্গগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ইসরাইলের

জিম্মিরা মুক্ত হওয়ামাত্রই গাজার সুড়ঙ্গগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ইসরাইলের

রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

‘সেফ এক্সিট’, যা বলছেন উপদেষ্টারা

‘সেফ এক্সিট’, যা বলছেন উপদেষ্টারা

সারজিসকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে যা বললেন প্রিন্স মাহমুদ

সারজিসকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে যা বললেন প্রিন্স মাহমুদ

ঘুমের মধ্যে বালিশ ভিজে যায় লালায়, কোন বিপদের লক্ষণ

রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, রাত ১২:০০

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: লালা শুধু কি শিশুদের মুখ দিয়েই ঝরে! আসলে ছোট-বড় বিভেদে নয় সবার মুখেই লালা উৎপন্ন হয়ে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মুখ দিয়ে লালা ঝরতে পারে, তা ছোট হোক বা বড়দের। বিশেষ করে ঘুমের মধ্যে অনেকের মুখ দিয়ে লালা ঝরে বালিশ ভিজে যায়!

বিষয়টি বিব্রতকর হলেও কিন্তু হেলাফেলার নয়। কারণ লালা ঝরার সমস্যাটি হতে পারে শারীরিক বিভিন্ন অসুস্থতার লক্ষণ। আবার স্বাভাবিকভাবে শোয়ার ধরন পরিবর্তনের কারণেও ঘুমের মধ্যে মুখ থেকে লালা ঝরতে পারে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক ঘুমের মধ্যে লালা ঝরে কেন? এর প্রতিকারই বা কী?

লালা কেন ঝরে?

মানবদেহ প্রতিদিন ১ লিটারেরও বেশি লালা উৎপাদন করে। এটি লালা গ্রন্থি দ্বারা উৎপাদিত হয়ে থাকে। জেগে থাকা অবস্থায় আমরা লালা ঝরতে দেই না, সাধারণত তা গিলে ফেলা হয়। পরক্ষণে রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে পুনরায় লালা উৎপাদিত হতে থাকে। ঘুমে বিভোর থাকা অবস্থায় লালা যেহেতু গিলে ফেলা যায় না, তাই মুখে লালা জমতে শুরু করে। এর ফলে ঠোঁটের কোণ দিয়ে লালা বাইরে ঝরে পড়ে।

মুখ শুকিয়ে যাওয়া

যখন মুখ শুকিয়ে যায়, তখন লালাগ্রন্থি মুখ আর্দ্র রাখতে বেশি লালা উৎপাদন করে। যদি আপনি মুখ খোলা রেখে ঘুমান বা পর্যাপ্ত জল না খান, তাহলে ঘুমের সময় অতিরিক্ত লালা বের হতে পারে।

সমাধান: দিনে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। বিছানার পাশে এক গ্লাস পানি রাখুন, যাতে মাঝরাতে মুখ শুকোলে একটু চুমুক দিতে পারেন।

খালি পেটে সকালে পানি খেলে ঘটবে শরীরের জাদুকরি ৮ পরিবর্তন
অ্যালার্জি ও সংক্রমণ

হাঁপানি, সিজনাল অ্যালার্জি বা সর্দি-কাশির সময় শরীর বাড়তি লালা তৈরি করে, যাতে জীবাণু বা অ্যালার্জেন বেরিয়ে যেতে পারে। এর ফলে ঘুমের সময় লালা পড়া বেড়ে যায়।

সমাধান: সিজনাল অ্যালার্জির জন্য ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ যেমন Claritin বা Zyrtec নিতে পারেন। যদি ভাইরাল সংক্রমণ হয়, সাধারণত সময়ের সঙ্গে সেরে যায়। তবে দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

অ্যাসিড রিফ্লাক্স

অ্যাসিড রিফ্লাক্সে আক্রান্ত অনেকেই অতিরিক্ত লালার সমস্যায় ভোগেন। রাতে বেশি খাওয়ার পর শুয়ে পড়লে রিফ্লাক্স বাড়ে, ফলে ঘুমের সময় লালা পড়া দেখা দিতে পারে।

সমাধান: ছোট ছোট মিল খান, আঁশযুক্ত খাবার বাড়ান। প্রয়োজনে ওভার-দ্য-কাউন্টার অ্যান্টাসিড ব্যবহার করতে পারেন, কিন্তু নিয়মিত সমস্যা থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করা জরুরি।

স্লিপ অ্যাপনিয়া

স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ঘুমের সময় শ্বাসপ্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হয়। এতে অনেক সময় মুখ খোলা রেখে শ্বাস নিতে হয়, যা লালার প্রবাহ বাড়ায়। অনেক স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগীর আবার দাঁত ঘষার অভ্যাসও থাকে, যা লালাগ্রন্থিকে আরও সক্রিয় করে।

সমাধান: নিয়মিত নাক ডাকা, অতিরিক্ত ক্লান্তি বা ঘুমে শ্বাস বন্ধ হওয়ার মতো লক্ষণ থাকলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সিপ্যাপ মেশিন বা ওজন কমানোর মতো চিকিৎসা কার্যকর হতে পারে।

ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

কিছু ওষুধ, বিশেষত মনোরোগের ওষুধ বা ডিমেনশিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত, লালাগ্রন্থির কার্যকলাপ বাড়ায়।

সমাধান: নতুন ওষুধ শুরু করার পর যদি অতিরিক্ত লালা পড়তে দেখেন, চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করু, ওষুধের প্রয়োজনীয়তা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে খোলামেলা কথা বলুন।

স্নায়বিক রোগ

পার্কিনসন’স ডিজিজ, সেরিব্রাল পালসি বা স্ট্রোকের মতো রোগে মুখ বন্ধ রাখা বা লালা গিলে ফেলার ক্ষমতা হ্রাস পায়। এর ফলে ঘুমের সময় লালা পড়া বেড়ে যায়।

সমাধান: স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ওষুধ বা থেরাপি গ্রহণ করুন। কিছু ওষুধ লালার উৎপাদন কমাতে সহায়ক হতে পারে।

ঘুমের ভঙ্গি

উল্টে বা কাত হয়ে ঘুমালে মাধ্যাকর্ষণের কারণে মুখের লালা সহজে বেরিয়ে যায়।

সমাধান: চেষ্টা করুন পিঠের ওপর সোজা হয়ে ঘুমাতে। মুখ বন্ধ রাখার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

বিশেষজ্ঞ ড. থমাস মাইকেল কিলকেনি, Staten Island University Hospital-এর Institute Sleep Medicine-এর পরিচালক বলেন, ঘুমের মধ্যে অল্প পরিমাণ লালা পড়া খুব সাধারণ একটি বিষয়। তবে যদি হঠাৎ করে বেড়ে যায়, ঘুমে সমস্যা তৈরি করে বা অন্য উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

প্রয়োজনে ওষুধের মাধ্যমে লালা নিঃসরণ কমানোর চিকিৎসাও পাওয়া যায়। শেষে ড. প্যাটেল সতর্ক করে বলেন, আপনার শরীরকে আপনি সবচেয়ে ভালো চেনেন। তাই কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ঘুমের মধ্যে লালা পড়া একেবারে স্বাভাবিক ব্যাপার, তবে যদি এটি হঠাৎ বেড়ে যায় বা অন্য শারীরিক সমস্যার সঙ্গে দেখা দেয়, তাহলে তা কোনো অন্তর্নিহিত অসুস্থতার সংকেতও হতে পারে। সঠিক ঘুমের ভঙ্গি, পর্যাপ্ত জলপান ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এই সমস্যার কার্যকর সমাধান দিতে পারে।

সূত্র: হেলথলাইন

মন্তব্য করুন


Link copied