আর্কাইভ  শুক্রবার ● ৭ নভেম্বর ২০২৫ ● ২৩ কার্তিক ১৪৩২
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ৭ নভেম্বর ২০২৫
২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

দিনাজপুরে বিএনপি'র প্রার্থীতা পরিবর্তনের দাবিতে কাফন মিছিল

দিনাজপুরে বিএনপি'র প্রার্থীতা পরিবর্তনের দাবিতে কাফন মিছিল

ছাত্র-জনতার হত্যাকাণ্ডের দায় ‘নিরাপত্তা বাহিনী’র ওপর চাপালেন হাসিনা

ছাত্র-জনতার হত্যাকাণ্ডের দায় ‘নিরাপত্তা বাহিনী’র ওপর চাপালেন হাসিনা

ঠাকুরগাঁওয়ে এক বিদ্যালের ৮ ছাত্রী হঠাৎ অসুস্থ, বিদ্যালয়ে আতঙ্কে সকলেই

ঠাকুরগাঁওয়ে এক বিদ্যালের ৮ ছাত্রী হঠাৎ অসুস্থ, বিদ্যালয়ে আতঙ্কে সকলেই

ছাত্র-জনতার হত্যাকাণ্ডের দায় ‘নিরাপত্তা বাহিনী’র ওপর চাপালেন হাসিনা

শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫, বিকাল ০৫:০২

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানী ঢাকা ত্যাগের ১৫ মাস পর বলেছেন, গত বছরের সেই ‘বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি’র সময় নিরাপত্তা বাহিনী যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল, তাতে ‘নিঃসন্দেহে ভুল হয়েছিল’।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু’কে দেওয়া এক লিখিত সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ‘সন্দিহান’ যে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে নির্বাচন আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কি না। নির্বাচন যদি হয়ও, তা বৈধ হিসেবে স্বীকৃত হবে না, কারণ তার দল আওয়ামী লীগ এখনো নিষিদ্ধ।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানাননি বলেও দাবি করেন শেখ হাসিনা।

এক প্রশ্নের জবাবে জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর চাপিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “মাঠপর্যায়ের নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত পরিবর্তিত এবং সহিংস পরিস্থিতির মধ্যে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছিলেন। সহিংসতার প্রতিক্রিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু সদস্যের আচরণে নিঃসন্দেহে ভুল হয়েছিল, তবে জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তগুলো ছিল স্বভাবতই সামঞ্জস্যপূর্ণ, সৎ উদ্দেশ্যপ্রসূত এবং প্রাণহানি কমানোর লক্ষ্যে নেওয়া।”

শেখ হাসিনার এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) তার এবং তার সরকারের কয়েকজন শীর্ষপর্যায়ের ব্যক্তির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে আইসিটির বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে শেখ হাসিনা বলেছেন, “দোষী সাব্যস্ত হওয়ার রায়টি আগে থেকেই নির্ধারিত। যখন তা ঘোষণা করা হবে, আমি অবাক হব না। কিন্তু এই আইসিটি আসলে এক প্রহসনমূলক আদালত, যা আমার রাজনৈতিক শত্রুরা নিয়ন্ত্রণ করছে—যাদের উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ধ্বংস করা। মৃত্যুদণ্ডের দাবি আসলে সেই একই হত্যাপ্রবণ লক্ষ্যকেই পরিবেশন করে।”

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশ ছাড়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেননি—এমন দাবি পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করতে হলে রাষ্ট্রপতির কাছে একটি চিঠি জমা দিতে হয়। আমি কখনো এমন কোনো চিঠিতে সই করিনি, রাষ্ট্রপতিও কোনো পদত্যাগপত্র পাননি।”

শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নির্বাচন আয়োজনের আহ্বানে কোনো সাড়া দিচ্ছে না। তিনি বলেন, “আমি নিশ্চিত নই যে, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আদৌ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন যদি হয়ও, আওয়ামী লীগ অংশ নিতে না পারলে তা বৈধ হবে না।”

তার ভাষায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার “যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় টিকে থাকতে বদ্ধপরিকর। তারা নির্বাচিত নয়, জনগণের কাছে জবাবদিহির কোনো অঙ্গীকারও তাদের নেই।

নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানাননি দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, “স্পষ্ট করে বলি: আমি বর্জনের আহ্বান জানাইনি। আমি শুধু বলেছিলাম, যদি আওয়ামী লীগকে ভোটে অংশ নিতে না দেওয়া হয়, তাহলে কোটি কোটি সমর্থক ভোট দেবে না, কারণ তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন করার সুযোগ পাচ্ছে না।”

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে চলমান বিতর্ক প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “দেশের নতুন কোনো চার্টারের প্রয়োজন নেই। এই চার্টার বাংলাদেশের জনগণের কণ্ঠকে প্রতিফলিত করে না... আমি সন্দেহ করি, ওই গণভোট আদৌ গণতান্ত্রিক হবে কি না।”

বাংলাদেশে ফিরে না আসার কারণ হিসেবে ‘চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি’কে দায়ী করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “ইউনূস তার মন্ত্রিসভায় কিছু উগ্রপন্থিকে নিয়োগ দিয়েছেন, এই ঘটনাটা তাদের (উগ্রপন্থিদের) জন্য একধরনের উৎসাহের বার্তা দিচ্ছে এবং নিঃসন্দেহে তাদের বাস্তব সহায়তাও দিচ্ছে।”

অন্তর্বর্তী সরকারের পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের প্রচেষ্টার বিষয়ে শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন, বাংলাদেশের মানুষ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে সংঘটিত বর্বরতা কখনো ভুলবে না।

তিনি বলেন, “অবশ্যই পাকিস্তানের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু সেটি হতে হবে পরিমিত ও ভারসাম্যপূর্ণ—অন্ধভাবে এবং আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অর্থাৎ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে উপেক্ষা করে নয়।”

মন্তব্য করুন


Link copied