নিউজ ডেস্ক: এফডিসির চার দেয়ালের ভিতর লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন শব্দগুলো দীর্ঘদিন শোনা যায় না। শুটিং আর ডাবিং ফ্লোরে নেই তারকাদের সরব উপস্থিতি। নেই শুটিং লাইটের আলোর ঝলকানি। এর চেয়েও বড় অস্বস্তির কথা- ২০২২ সালে শুরু হওয়া বিএফডিসি কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও শেষ হয়নি। সহসা এই কমপ্লেক্সটির আলোর মুখ দেখারও কোনো সম্ভাবনা নেই। এসব কারণে খোদ এফডিসির কর্মকর্তা-কর্মচারী আর চলচ্চিত্রকাররা এফডিসিকে এখন ভূতুড়ে বাড়ি বলতেও দ্বিধা করে না।
ঢাকাই সিনেমার আঁতুরঘর-খ্যাত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)। ১৯৫৭ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে সিনেমার উন্নয়নে এফডিসি কাজ করলেও একটা সময়ে এসে এটি হয়ে গেছে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। যেখানে সিনেমার উন্নয়নের চেয়ে, সমিতি, সংগঠন, মিটিং, রাজনীতি, আন্দোলন, সভা-সমাবেশের চর্চাই বেশি হয়ে থাকে। এ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে যারাই আসেন, কেউই সিনেমার উন্নয়নে সঠিক ভূমিকা পালন করতে পারেন না বলেও অভিযোগ সিনেমা সংশ্লিষ্টদের। আর তাতেই ধীরে ধীরে কোমায় চলে গেছে সিনেমার প্রাণকেন্দ্র এফডিসি। এফডিসি যে শুধুই বাণিজ্যিক কেন্দ্র এটি প্রমাণ করে গেছে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। আওয়ামী শাসনামলে ২০১৮ সালে একনেকের সভায় পাস করানো হয় ‘বিএফডিসি কমপ্লেক্স’ নামের একটি ১২তলা ভবনের কাজ। যার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল প্রজেক্ট দাঁড় করানোর নামে অর্থ লুটপাটের ব্যবস্থা করা। সিনিয়র চলচ্চিত্রকারদের আপত্তি সত্ত্বেও ২০২২ সালে এফডিসির ৩, ৪, ৫ নম্বর শুটিং ফ্লোর ও এডিটিং ভবন ভেঙে ৯৪ কাঠা জমির ওপর বহুতল কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। যার ব্যয় ধরা হয় ৩২৩ কোটি টাকা। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের জুন মাসে। অথচ শেষ হওয়া তো দূরের কথা নির্ধারিত সময়ের পরেও দেখা যাচ্ছে বর্তমানে কাজ হয়েছে মাত্র ৪০ শতাংশের মতো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকল্প কর্মকর্তা বলছেন, নানা কারণে সময়মতো কাজ শেষ করা যায়নি।
আমরা সময় নিয়েছি, এখন ২০২৬ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। জানা গেছে, প্রকল্পের মেয়াদ ২০২১ সালের ডিসেম্বর ধরা হলেও নির্মাণকাজই শুরু হয় ২০২২ সালে। সবশেষ সংশোধনীর মাধ্যমে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের জুন ঠিক করা হয়েছে, ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬৫ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের অগ্রগতি যে মোটেই সন্তোষজনক নয় তা ২০২৪ সালের জুনে নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদনে তুলে ধরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ। সাত দশক আগে চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়ন ও প্রসারে এফডিসি যাত্রা শুরু করেছিল, সেই এফডিসি ২০০০ সালে এসে মুখথুবড়ে পড়ে নানা অব্যবস্থাপনা আর সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে।
এক দশকে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার ঋণজালে পড়া এফডিসিকে নতুন করে আর অনুদান না দিয়ে বিকল্প উপায়ে সচল রাখার উপায় খুঁজছে সরকার। ২০১৬ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময়ে সরকারের কাছ থেকে অনুদান আর ঋণ বাবদ প্রায় ৮০ কোটি টাকা নিয়েছে এফডিসি। বছর বছর সংস্থাটির লোকসান ও ব্যয় বাড়ছে; অদূর ভবিষ্যতে যে আয়-উন্নতি হবে, তেমন আভাসও মিলছে না। এর মধ্যে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কথা বলে চলতি ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সরকারের কাছে ১১৮ কোটি টাকার অনুদান বা থোক বরাদ্দের আবেদন করেছে এ লোকসানি সংস্থা। এ অবস্থার মধ্যে সংস্থাটিকে লাভজনক করতে উপায় খুঁজছে সরকার। চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক সভায় এফডিসির জায়গা সম্পদের বিকল্প ব্যবহার এবং সেখানে কর্মরতদের একাংশকে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। যা পরবর্তীতে চলচ্চিত্রকারদের ক্ষোভের মুখে বাতিল করতে বাধ্য হয় সরকার। সভায় উপস্থিত একাধিক কর্তাব্যক্তি তখন জানিয়েছিলেন, এফডিসিকে লাভজনক করতে করপোরেশন ভেঙে দিয়ে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ পদ্ধতিতে পরিচালনার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেক্ষেত্রে এ খাতের সফল উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ত করা হবে। এফডিসির পক্ষ থেকে এমন প্রস্তাবে হতাশা প্রকাশ করা হয়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ‘দুর্নীতির’ দায়ভার এফডিসির বর্তমান ব্যবস্থাপনা নিতে চাইছে না। তাঁরা সংস্থাটিকে লাভজনক করার কয়েকটি সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন। এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুমা রহমান তানি বলেন, গত ১৬ বছরে এফডিসির আধুনিকায়নে কোনো বিনিয়োগ করা হয়নি।
বিগত দিনের অনেক নেতৃত্ব এফডিসিকে ইচ্ছাকৃতভাবে পিছিয়ে দিয়ে দেশীয় সংস্কৃতির বিপরীতে প্রতিবেশী দেশের সংস্কৃতিকে বাজার ধরায় সহায়তা করেছেন। আধুনিক প্রযুক্তির অপ্রতুলতা, জরাজীর্ণ স্টুডিও, অপ্রতুল সরঞ্জাম ও সংস্কারের অভাবে এফডিসি দিনদিন অতীতের সোনালি গৌরব হারিয়েছে। এফডিসি প্রশাসনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, কাজের গতি ফিরিয়ে আনা ও আয় বৃদ্ধির জন্য গত বছর এফডিসির বিভিন্ন শুটিং ও ডাবিং ফ্লোর এবং সংস্থাটির অভ্যন্তরে চলচ্চিত্র নির্মাণ কাজ ও ক্যামেরাসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ভাড়া কমানো হয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনো সুফল আসেনি। কারণ এখানে নেই কোনো আধুনিক যন্ত্রপাতি ও চলচ্চিত্র নির্মাণের উন্নত ব্যবস্থা। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, এখন অ্যালেক্সাসহ আরও উন্নত ক্যামেরার যুগ। অথচ ২০১৭ সালে এফডিসির আধুনিকায়ন প্রকল্পের অধীনে এখানে আনা হয় মান্ধাতার আমলের রেড ড্রাগন, রেড স্টারলেট ও সনি এফ ৫৫ ক্যামেরা। যা দিয়ে এখন সময় উপযোগী চলচ্চিত্র নির্মাণ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই নির্মাতারা বাইরে গিয়ে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান থেকে উন্নত প্রযুক্তির ক্যামেরাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ভাড়া নিয়ে কাজ করছেন। একই সঙ্গে শুটিং-ডাবিংয়ের উন্নত ব্যবস্থা না থাকায় তাও নির্মাতারা বাইর থেকে করিয়ে নিচ্ছেন। জানা গেছে, বর্তমানে এফডিসিতে প্রাগৈতিহাসিক আমলের আটটি ক্যামেরা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- রেড ড্রাগন একটি, রেড স্কারলেট দুটি ও সনি এফ ৫৫ ক্যামেরা পাঁচটি। এর মধ্যে আবার এখন শুধু সচল আছে সনি এফ-৫৫ মডেলের তিনটি ক্যামেরা। বাকিগুলো নষ্ট।
গতকাল এফডিসি ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে একমাত্র দুই নম্বর ফ্লোরে তানিম নূর পরিচালিত ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ নামের একটি ছবির শুটিং চলছে। এ ছাড়া চলচ্চিত্র নির্মাণের আর কোনো কাজ হয়নি সেখানে গতকাল। চলচ্চিত্রকাররা বলছে, তাও ভাগ্য ভালো আজ একটি ছবির হলেও শুটিং চলছে, কারণ প্রতিদিন এখানে কাজের অভাবে কাকপক্ষীও দেখা যায় না। এফডিসির হিসাব শাখার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫৭ সালে যাত্রা করা এফডিসি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে সর্বোচ্চ রাজস্ব দিয়েছিল ১৯৯৯-২০০০ সালে; যার পরিমাণ ছিল ১১ কোটি ৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। তবে এরপর থেকেই রাজস্ব দেওয়ার পরিমাণ কমতে থাকে। আর ২০১৬ সাল থেকে সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি নিয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। অব্যবস্থাপনা আর সময়ের সঙ্গে খাপ খাইতে না পেরে একসময়ের জৌলুস হারিয়ে ফেলেছে প্রতিষ্ঠানটি। বাস্তবতার নিরিখে এফডিসিকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সহযোগিতা না করে ‘বিকল্প চিন্তা’ করা হলে তা ‘অবিচার’ হবে বলে মনে করেন সংস্থার বর্তমান এমডি মাসুমা রহমান তানি। তিনি বলেন, কেবল ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু, আর শুটিং স্পটগুলো সঠিক মূল্যে ভাড়া দিতে পারলেই যে আর্থিক সমস্যা অনেকটা কেটে যাবে তা আমি গত আগস্ট মাসের পরিসংখ্যান দিয়ে দেখিয়েছি। আর আধুনিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি যুক্ত হলে এফডিসিকে আবারও লাভজনক জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এখানে অন্য কোনো চিন্তা করা ঠিক হবে না।
তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের আগস্টে এফডিসির পরিচালন আয় ২৪ লাখ ৭১ হাজার ২৩২ টাকায় উন্নীত করতে পেরেছি, যা আগের বছর আগস্টে ছিল ১২ লাখ ২৭ হাজার ৩৭০ টাকা ৬৫ পয়সা। এ থেকে বোঝা যায়, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করলে এফডিসিকে অচিরেই লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এমডি তানি বলেন, পরিচালকরা যেন কম টাকায় আন্তরিকতার সঙ্গে শুটিং করতে পারেন, সেই সঙ্গে এফডিসির আর্থিক অবস্থারও যাতে উন্নতি হয়, সেই উদ্দেশ্যে মূল্যহার কমানো হয়েছে। আমরা আমাদের সার্ভিসের রেট কার্ড মূল্য সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে শুরু করে ২-৩ হাজার টাকা মূল্য কমিয়ে এনেছি। নিয়মগুলো সহজ করে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছি, যেন সিনেমা বানানো বা যেকোনো নির্মাণ নির্মাতাদের জন্য সহজ হয়।
এদিকে চলচ্চিত্রকারদের আরও অভিযোগ হলো, ফ্লোরের ছাদ থেকে পানি পড়ছে; এসি নষ্ট থাকে। তেজগাঁওয়ে সাড়ে সাত একর জায়গার ওপর অবস্থিত এফডিসিতে আগে ছিল নয়টি শুটিং ফ্লোর, পুকুর, বাগান, সুইমিং পুল, কৃত্রিম ঝরনা, জমিদার বাড়ি এবং নানা শুটিং স্পট। কিন্তু এখন শুটিংয়ের উপযুক্ত স্থান বলতে রয়েছে কেবল প্রশাসনিক ভবনের সামনে আর ঝরনা স্পটের আশপাশের খোলা জায়গাটুকু। বাকি সব জায়গা অনেকটা দুর্দশাগ্রস্ত। আগের নয়টি শুটিং ফ্লোরের স্থলে এখন আছে ৫টি (১, ২, ৭, ৮ ও ৯)। এরমধ্যে আট নম্বর শুটিং ফ্লোরটি প্রায় এক দশক ধরে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে ভাড়া দিয়ে রাখা হয়েছে। এফডিসির উৎপাদন শাখার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, উৎপাদন শাখার অধীনে রয়েছে ক্যামেরা ও লাইট শাখা, শব্দ শাখা, এডিটিং শাখা, ফ্লোর ও সেট শাখা। ২০১৬ সালে সর্বশেষ আমরা যন্ত্রপাতি পেয়েছিলাম।
প্রায় নয় বছর ধরে নতুন কোনো সরঞ্জাম আনা হয়নি, ফলে আধুনিক প্রযুক্তির দিক থেকে আমরা পিছিয়ে আছি। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের জন্য ৫ দশমিক ১ সাউন্ড সিস্টেম সফটওয়্যার নষ্ট অনেক বছর ধরে। ডাবিং মেশিন নষ্ট, সাউন্ড মিক্সিংয়ের দুটি মেশিন ছিল; সেগুলো অনেক আগে থেকেই নষ্ট। ৫.১ বা ৭.১ সারাউন্ডিং সাউন্ড সিস্টেম নেই। এডিটিং শাখার মেশিনগুলো অচল, এডিটিং তো সফটওয়্যারের মাধ্যমে, এগুলো ব্যাকডেটেড হয়ে গেছে। ডিসিপি (ডিজিটাল সিনেমা প্যাকেজ) মেশিন নষ্ট। ক্রিস্টি প্রজেক্টর মেশিন কোনো কাজে লাগেনি। ভিজ্যুয়াল এফেক্টের কাজের সুবিধা নেই। ২০০৭ সাল থেকে ডিজিটাল সাউন্ড ইকুইপমেন্টের যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছিল কিন্তু সেগুলো মামলা ঝামেলায় ব্যবহার করা হয়নি। এগুলো এখন অকেজো, ব্যবহারযোগ্য নয়। দুটি জিমি জিব ক্রেইন (৪০ ফুট) থাকলেও তা চালানোর জন্য দক্ষ জনবল নেই। এই কর্মকর্তা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, নতুন যন্ত্রপাতি কিনতে হলে রাজস্ব খাত থেকে অর্থ লাগে। কিন্তু সেই সামর্থ্য এফডিসির নেই। তাই যন্ত্রপাতি কেনা হয়নি।
এফডিসির হিসাব শাখার তথ্যানুযায়ী, করপোরেশন ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে পরিচালন ও সেবা খাত থেকে ৬ কোটি ২৪ লাখ ৭৪ হাজার ৫৫৭ টাকা ২১ পয়সা আয় করেছিল। সেই বছর বিভিন্ন খাতে খরচ হয়েছে ২৩ কোটি ৯৯ লাখ ৬৪ হাজার ৭৬৩ টাকা ৮০ পয়সা। এর মধ্যে ব্যাংক ঋণের সুদ বাবদ খরচ হয়েছে ৩৪ লাখ ৩৪ হাজার ৮৭৪ টাকা। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে করপোরেশন আয় করেছে ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৩৩ হাজার ৭৭৫ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ২৪ কোটি ৪৮ লাখ ৬৮ হাজার ৪০২ টাকা ৫০ পয়সা। ঘাটতির বাকি টাকা আনতে হয় সরকারের কাছ থেকে। এফডিসির অ্যাকাউন্টস বিভাগ সূত্রে জানা গেছে ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরে কর্মীদের বেতন ভাতা, গ্র্যাচুয়িটি মিলিয়ে এফডিসি অনুদান পেয়েছে ৩১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, এ সময়ে ৪৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকার ঋণও করতে হয়েছে। তার মানে এক দশকে সরকারের অনুদান ও ঋণ মিলিয়ে ৮০ কোটি ১৩ লাখ টাকা নিতে হয়েছে এফডিসিকে। সংস্থার ২০২১-২২ সালের নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, প্রতিষ্ঠানটির ধারাবাহিক লোকসানের পরিমাণ ১৪২ কোটি ৩২ লাখ ৫৩ হাজার ৪৮৭ টাকা। নিরীক্ষার সময়ে প্রতিষ্ঠানটির ১৩ কোটি ২ লাখ ৪৮ হাজার টাকার সম্পদের তুলনায় দায় ছিল অনেক বেশি। এই পরিস্থিতি বলছে, এফডিসি এখন সীমাহীন অনিশ্চয়তায় পড়েছে। ফলে এটি টিকে থাকতে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এর ওপর আবার মড়ার ওপর খাঁরার ঘা হিসেবে চলচ্চিত্রকাররা দেখছেন সদ্য বিদায়ী তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের একটি বক্তব্য, তা হলো ‘এফডিসিকে চলচ্চিত্র নির্মাণ সংস্থা’র পরিবর্তে গবেষণাগার করতে হবে। তাঁর এ বক্তব্যে অসন্তুষ্ট চলচ্চিত্র দুনিয়ার মানুষ।