আর্কাইভ  বুধবার ● ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ● ২৬ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   বুধবার ● ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছয়টি হলে সাদিক-আবিদ-হামিম-ফরহাদরা কে কত ভোট পেলেন?

ডাকসু নির্বাচন ২০২৫
ছয়টি হলে সাদিক-আবিদ-হামিম-ফরহাদরা কে কত ভোট পেলেন?

ফলাফল বর্জনের ঘোষণা দিলেন যে দুই ভিপি প্রার্থী

ডাকসু নির্বাচন
ফলাফল বর্জনের ঘোষণা দিলেন যে দুই ভিপি প্রার্থী

৯ হলের ফল ঘোষণা : সাদিকের ভোট ৯৭৫৭, আবিদ ৪০৬৪

৯ হলের ফল ঘোষণা : সাদিকের ভোট ৯৭৫৭, আবিদ ৪০৬৪

জগন্নাথ হলে বিপুল ভোট পেলেন আবিদ, তলানিতে ছাত্রশিবির

জগন্নাথ হলে বিপুল ভোট পেলেন আবিদ, তলানিতে ছাত্রশিবির

ছাত্রদল নেতা হামিমের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা, ঢাবি শিক্ষক বললেন ‘এই কষ্ট কোনোদিন ভুলব না’

মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রাত ১০:০৬

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় সহকারী প্রক্টর ও লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক শেহরীন আমিন মোনামিকে ঘিরে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ডাকসুর জিএস পদে ছাত্রদল-সমর্থিত প্রার্থী শেখ তানভির বারী হামিমের সঙ্গে তীব্র বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। এ সময় মোনামি পদত্যাগের হুমকি দিলে হামিম পাল্টা বলেন, ‘আপনি পদত্যাগ করলে আমার কী?’ পরে ছাত্রদলের আরও কিছু নেতাকর্মীও উত্তেজিত হয়ে ওঠেন।

ঘটনার পর নিজের অবস্থান ও কষ্টের কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তুলে ধরেন মোনামি। বাংলা ও ইংরেজি মিশিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস লিখেছেন এই আলোচিত শিক্ষক। তিনি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা রেখেছিলেন। অভ্যুত্থানের সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার একটি বক্তব্য ব্যাপক ভাইরাল হয়েছিল। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘যে শিবির মুহির মতো মানুষ তৈরি করে আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি সে শিবিরই সবচেয়ে সেরা।’

মোনামি লিখেছেন, ‘আমি গত আগস্টে সহকারী প্রক্টর হিসেবে যোগ দিই। একটাই কারণ ছিল, জুলাইকে আমি ভীষণ আপন মনে করি এবং আমার আলমা মেটারের (প্রিয় শিক্ষাঙ্গন) জন্য কিছু ভালো কাজ বা অবদান রাখতে পারি, তা হয়তো এই ভূমিকার মাধ্যমেই সম্ভব। আমি শুধু একটাই চেয়েছি, একজন শিক্ষক হতে! আমার কোনো প্রশাসনিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই, নেই কোনো রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাও। কিন্তু আজ আমি এখানে, অভিযোগে অভিযুক্ত, হয়রানির শিকার (নিজ ক্যাম্পাসে এবং অনলাইনেও)।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমার শিক্ষার্থীদের কাছে, যারা এতদিন আমাকে একাডেমিক কিংবা প্রক্টরিয়াল ভূমিকায় দেখেছ, তাদের কাছে আমার শুধু একটি প্রশ্ন-আমি কি কখনো পক্ষপাতদুষ্ট ছিলাম? আমি কি কখনো তোমাদের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চেয়েছি? আমি কি সর্বোচ্চ চেষ্টা করিনি তোমাদের সাহায্য করার? আমার ক্ষমতা ও এখতিয়ারের মধ্যে যতটুকু সম্ভব, আমি কি তা করিনি? তাহলে আজ কেন এসব অভিযোগ?’

 

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো আমাকে কষ্ট দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমি জানি আমি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ছিলাম। প্রথমত, আমি নিরাপত্তা-ইনচার্জ ছিলাম। তাই ভুল অপবাদ দেওয়ার আগে তা জানা উচিত। দ্বিতীয়ত, নির্বাচন আচরণবিধি কেন প্রার্থীরা বারবার লঙ্ঘন করছিল? তোমরা কি তা জানোনি? আমি আমার নির্দেশনায় কঠোর ছিলাম এবং এতে কোনো অনুশোচনা নেই। আমি সঠিক কাজটাই করেছি, আমি দায়িত্বে ছিলাম।’

নিজের কষ্টের কথা জানিয়ে মোনামি আরও লিখেছেন, ‘আসল কষ্টটা কোথায় বলি। যে দিন থেকে আমি যোগ দিয়েছি, আমাকে ২১ ফেব্রুয়ারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, আমি তা সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। আমাকে পহেলা বৈশাখের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, আমি পরিস্থিতি দক্ষতার সঙ্গে সামলে তা শেষ করেছি। আমাকে এককভাবে ১৪ জুলাইয়ের সারারাতের কনসার্ট আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, আমি আমার টিম নিয়ে তা সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। আমাকে ৫ আগস্টের অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, আমি সফলভাবে তা সম্পন্ন করেছি।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘কিন্তু আজ আমাকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হলো। আমার নিজের সহকর্মীকে নীচু মানসিকতার অভিযোগ ও অশোভন আচরণের মুখোমুখি হতে হলো, শুধুমাত্র কারণ তিনি আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আমাকে এক ঘণ্টা আগেই প্রক্টর অফিসে ফিরে আসতে হলো, কারণ আমি ঝুঁকিতে ছিলাম। আর আমার উপস্থিতি পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারত। আমার দায়িত্ব অসমাপ্ত থেকে গেল।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি এই কষ্ট কোনোদিন ভুলব না। আমি ছাত্রলীগকে ভয় করিনি। আমি কাউকেই ভয় করি না, কারণ সত্য আমার পক্ষে। তবু আমি চুপচাপ ফিরে এসেছি, কারণ আমি চাইনি আমার কারণে নির্বাচন ব্যাহত হোক।’

সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘আমার শিক্ষার্থীদের প্রতি বিনীত অনুরোধ-তোমরা এতদিন পর এত সুন্দর একটি নির্বাচন করেছো। দয়া করে স্বার্থান্বেষী মহলকে এটা নষ্ট করতে দিও না।’

মন্তব্য করুন


Link copied