আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ১৯ আগস্ট ২০২৫ ● ৪ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ১৯ আগস্ট ২০২৫

তিস্তা নদীতে ছুড়ে ফেলে নবজাতক পুত্র সন্তানকে হত্যা করল বাবা

সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩, দুপুর ০৩:৩৮

Advertisement Advertisement

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।।  তিস্তা ব্রিজ থেকে নদীতে ছুড়ে ফেলে নবজাতক পুত্র সন্তানকে হত্যার দায়ে ঘাতক পিতা লাল মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ। এর আগে ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৭ অক্টোবর বিকেলে তিস্তা ব্রিজ এলাকায়। 

পুলিশ জানায়, জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝার ইউনিয়নের রাবাইটারী এলাকায় লালমিয়া ছামিরন দম্পতির গত ৩ বছর পূর্বে প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয়। লাল মিয়ার পরিবারে প্রেমের বিয়ে মেনে না নেওয়ায় তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ তেতুলতলা এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিল। এরই মধ্যে গত ২২ অক্টোবর ছামিরন তার বাবার বাড়িতে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান প্রসব করেন। জন্মের পর হতে তার স্বামী উক্ত সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করে। এমতাবস্থায় স্ত্রী ছামিরন প্রতিবাদ করলে গত ২৭ অক্টোবর বিকেলের দিকে স্বামী লাল মিয়া পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নবজাতকের ডিএনএ পরীক্ষার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে মোটরসাইকেল যোগে রংপুর এর উদ্দেশ্যে রওনা করে। একই দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে  তিস্তা ব্রিজের মাঝখানে স্বামী লাল মিয়া মোটরসাইকেল থামিয়ে নবজাতককে তার মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর কথা বলে বিরতি নেয়। দুধ খাওয়ানোর এক পর্যায়ে ছামিরন বুঝে ওঠার আগেই তার স্বামী লাল মিয়া আকস্মিকভাবে নবজাতককে তার কোল হতে জোর পূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ব্রিজের উপর থেকে তিস্তা নদীতে ফেলে দিয়ে দ্রুত মোটরসাইকেলযোগে রংপুরের দিকে পালিয়ে যায়। 

পুলিশ আরও জানায়, পরে ছামিরন আর্তনাদ ও কান্নাকাটি করলে সমবেত পথচারীদের সে ঘটনাটি জানতে পারে। উপস্থিত লোকজন কাউনিয়া ফায়ায় সার্ভিসকে ফোন দিলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নবজাতকে খোঁজাখুজি করেও কোনো সন্ধান পাননি। পরে ছামিরন হতাশাগ্রস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পথে তার খুনী স্বামীকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়ে ন্যায্য বিচার পেতে সে মোবাইলে সুকৌশলে তার স্বামীকে তার কাছে আসতে বলে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ অক্টোবর রাতে ঘাতক লাল মিয়া ছামিরনের কাছে আসলে ছামিরন সুকৌশলে তাকে সঙ্গে নিয়ে কচাকাটার বলদিয়া ইউনিয়নের শাহিবাজার গ্রামে তার ভাইয়ের শ্বশুর মোঃ আব্দুল কুদ্দুসের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করে কচাকাটা থানা পুলিশকে জানায়। কচাকাটা থানা পুলিশ সংবাদ পাওয়া মাত্র তাৎক্ষণিকভাবে এসে ঘাতক স্বামীকে গ্রেফতার করে এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লাল মিয়া সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করে।

এ ঘটনায় একটি নিয়মিত হত্যা মামলা রুজু হয় এবং আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করা হলে সমস্ত ঘটনা বর্ণনা ও সত্যতা স্বীকার পূর্বক বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক  জবানবন্দী প্রদান করেন।

কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোঃ রুহুল আমীন বলেন, পিতা কর্তৃক নিজ নবজাতক পুত্র সন্তানকে হত্যা এটি একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা। এই বিষয়ে নাগেশ্বরী থানায় গত ২৯ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে এবং ঘাতক পিতা বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

মন্তব্য করুন


Link copied