আর্কাইভ  সোমবার ● ৬ অক্টোবর ২০২৫ ● ২১ আশ্বিন ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ৬ অক্টোবর ২০২৫
দুই বছরে গাজায় ২ লাখ টন বিস্ফোরক ফেলেছে ইসরাইল

দুই বছরে গাজায় ২ লাখ টন বিস্ফোরক ফেলেছে ইসরাইল

কুড়িগ্রামে নদীতে ভেসে আসছে হাজার হাজার গাছের গুড়ি

কুড়িগ্রামে নদীতে ভেসে আসছে হাজার হাজার গাছের গুড়ি

ভারী বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে নেপাল-ভারতে নিহত ৬৭

ভারী বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে নেপাল-ভারতে নিহত ৬৭

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটে ঐকমত্য: আলী রীয়াজ

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটে ঐকমত্য: আলী রীয়াজ

নাজিয়াকে দাফন করছেন বাবা, মা আইসিইউতে ছেলের অপেক্ষায়

বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, রাত ১২:৪০

Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউর ওয়েটিং রুমের এক কোণে বোরকা পরা মা তাহমিনা নীরবে সন্তানদের জন্য কাঁদছিলেন। সোমবার রাত আড়াইটার দিকে তাহমিনার চোখের সামনেই শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করে মাইলস্টোন স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহিয়া আশরাফ নাজিয়া (১৩)। তার শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। নাজিয়ার সঙ্গে ৯৫ শতাংশ পোড়া ক্ষত নিয়ে ছোট ভাই তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আরিয়ান আশরাফ নাফির (৯) আইসিইউর ১০ নম্বর শয্যায় চিকিৎসা চলছে।

তাহমিনা বলেন, “দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগে আমি ওদের জন্য স্কুলমাঠে অপেক্ষা করছিলাম। ছেলে আরিয়ানের আগে ছুটি হয়। মেয়ের ছুটি হয় পরে। ১টার পর আরিয়ান তার খালাতো ভাই জুনাইদকে নিয়ে নাজিয়াকে আনতে যায়। জুনাইদও মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী। ঠিক তখনই বিমানটি স্কুলের ওপর এসে পড়ে। নাজিয়ার খালাতো ভাইয়ের শরীর ২০ শতাংশ পুড়েছে। দুর্ঘটনার পর প্রথম আমার ছেলেমেয়েকে বাংলাদেশ মেডিকেলে নেওয়া হয়। পরে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছে। আমার ছেলেমেয়ে দুজনের গায়ের চামড়া এমনভাবে পুড়েছে প্রথমে ওদের চিনতে পারছিলাম না। নাম ধরে ডাকলে ছেলে বলে ওঠে, ‘আম্মু আমি আরিয়ান।’ তখন ওকে চিনতে পারি। এরপর এখন পর্যন্ত ছেলে আর কোনো কথা বলেনি। এ ছাড়া মেয়ের সামনে দিয়ে কয়েকবার খুঁজলেও চেহারা পুড়ে যাওয়ায় চিনতে পারিনি। আমার মেয়ের পা থেকে মাথা পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছে। ছেলে বার্নে এসে চিকিৎসা পেলেও মেয়ে সেই সুযোগ আর পায়নি। নাজিয়া কথা বলতে বলেতেই আমার সামনে মারা যায়। মেয়ের যতক্ষণ জ্ঞান ছিল আমাকে বলেছিল, ‘আম্মু আমার অনেক পানি পিপাসা লাগছে। আমার মুখে পানি দাও, জুস দাও।’ আইসক্রিম খেতে চাইছিল। আইসক্রিম খেলে ভিতরের গরম কমবে বলছিল। এমনকি তার ভাই নাফি ভালো আছে কি না, জানতে চেয়েছিল। পরে রাত ২টা ৩২ মিনিটে তিনবার জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে আমার চোখের সামনে মারা গেল। মেয়ে আমার কাছে শেষবারের মতো জানতে চেয়েছিল কখন বাসায় যাবে। আমি বলেছিলাম, সকালে। তখন যা খেতে চাইবে তাই দেব। ততক্ষণে চিকিৎসক আমাকে বলে দিয়েছিলেন যে আর বেশিক্ষণ নাজিয়ার হাতে সময় নেই। মেয়েকে বলেছিলাম কাল সকালে তোমার সব কষ্ট শেষ হয়ে যাবে, এরপর তুমি বাসায় যাবে। চিকিৎসকরা শেষ মুহূর্তে কোনো ওষুধ কাজ না করায় মেয়ের মৃত্যুর সময় কষ্ট কমাতে ওকে ব্যথানাশক ওষুধ দেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই আস্তে আস্তে নিশ্চুপ হয়ে যায় নাজিয়া। আমার চোখের সামনে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়।” নাজিয়ার মায়ের সঙ্গে দুপুরে যখন কথা হয় তখন নাফির বাবা মো. আশরাফুল ইসলাম মেয়ে নাজিয়াকে উত্তরার কামারপাড়ায় দাফন করতে নিয়ে যান।

মন্তব্য করুন


Link copied