আর্কাইভ  শনিবার ● ২৭ জুলাই ২০২৪ ● ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
আর্কাইভ   শনিবার ● ২৭ জুলাই ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: রংপুরে ১২ মামলায় গ্রেপ্তার ১৭৫       আহতরা যেই দলেরই হোক, চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী       ২৭শে জুলাই রংপুর বিভাগের আট জেলায় কারফিউ শিথিল       সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান বেরোবি প্রশাসনের       "শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে"      

 width=
 

ঢাক ঢোল পিটিয়ে উদ্বোধনের ১৩ মাসেও চালু হয়নি রংপুর শিশু হাসপাতাল

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, রাত ১০:৫৫

ডেস্ক: প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ছাড়াই ১০০ শয্যার বিশেষায়িত রংপুর শিশু হাসপাতালটি সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক ঢাক ঢোল পিটিয়ে উদ্বোধন করেছেন। উদ্বোধনের ১৩ মাস পরেও চালু করা হয়নি হাসপাতালটি। কবে নাগাদ চালু করা সম্ভব হবে তাও বলতে পারছেনা স্বাস্থ্য বিভাগের কোন কর্তাই। বর্ণীল সাজে সজ্জিত রংপুর শিশু হাসপাতাল ভবনে এক ভুতুরে পরিবেশ বিরাজ করছে। এখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন আবাসিক চিকিৎসক, ৪ জন নার্স এবং নিরাপত্তা প্রহরীরা কর্মহীন অলস সময় কাটাচ্ছেন। এর চত্বরে শিশুদের জন্য নির্মিতি বিভিন্ন খেলার রাইড গুলো নষ্ট হবার উপক্রম হয়েছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের দপ্তর এবং বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত রংপুর বিভাগের শিশুদের বিশেষায়িত স্বাস্থ্য সেবার লক্ষ্যে রংপুর মহানগরীর প্রাণ কেন্দ্র সাবেক সদর হাসপাতাল চত্বরের প্রায় ১ দশমিক ৭৮ একর জমির উপর স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে এবং স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্বাবধানে ৩ বছর আগে রংপুর শিশু হাসপাতালটির নির্মান কাজ সম্পন্ন করা হয়। সে সময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট নব মির্মিত ঞাসপাতালের সকল ভবন হস্তান্তর করে। এরপর করোনার ডামাডোলে এখানে শিশুদের চিকিৎসা সেবার কার্যক্রমের উদ্যোগ বন্ধ রেখে এটিকে করোনার বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

করোনার প্রার্দূভাব অনেক আগে মুছে গেলেও অজ্ঞাত কারনে শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম আজও শুরু করা হয়নি। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় অবশেষে গত বছরের ১৬ ই ফেব্রæয়ারী ’২০২৩ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রী জাহিদ মালিক রংপুর ১০০ শয্যার শিশু হাসতালটির ঢাকেেঢাল পিটিয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর রংপুরের একজন কর্মকর্তা জানান, রংপুর পুরাতন সদর হাসপাতাল চত্বরের প্রায় ১ দশমিক ৭৮ একর জমির উপর প্রায় সাড়ে ৩১ কোটি টাকা ব্যায়ে ২০১৭ সালের ২১ শে নভেম্বর এই শিশু হাসপাতালের নির্মান কাজ শুরু হয়। এর নির্মান কাজ ২ বছর সময় বেঁেধ দেয়া হলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান র্নিধারিত সময়ের আগেই এর কাজ সম্পন্ন করেন।

নতুন নির্মিত এই শিশু হাসপাতাল ক্যাম্পাসে তিনতলা বিশিষ্ট মূল হাসপাতাল ভবনে প্রতি তলায় ২০ হাজার ৮৮২ বর্গফুট আয়তনসহ মোট ৬২ হাজার ৮৪৬ বর্গফুট আয়তনের হাসপাতালের প্রথম তলায় জরুরী বিভাগ, বর্হি বিভাগ, চিকিৎসকদের চেম্বার ও প্যাথলজিক্যাল ল্যবরেটরীর ব্যাবস্থা রয়েছে। দ্বিতীয় তলায় অপারেশন থিয়েটার ও ব্রোন ইউনিট এবং তৃতীয় তলায় শিশু ওর্য়াড এবং কেবিনের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া এখানে ৬ তলা বিশিষ্ট ডাক্তারদের আবাসিক ভবন এবং ষ্টাফ ও নার্সদের আবাসিক ভবন, তিন তলা বিশিষ্ট সুপারিনটেনডেন্ট কোয়াটার, দুই তলা বিশিষ্ট গ্যারেজ কাম ড্রাইভার কোয়াটার, কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সাপ্লাই সিষ্টেম, বিদ্যূৎ সাব ষ্টেশন, পানি ও পয়ঃ নিস্কাশন ব্যবস্থা, অভ্যন্তরীন সড়ক তৈরী করা সহ আনুষাঙ্গিক অবকাঠামো নির্মান করা হয়েছে।

রংপুর শিশু হাসতালটি চালু হলে এখানে এই অঞ্চলের শিশুদের বিনামূল্যে জটিল অপারেশন সহ বিশেষায়িত উন্নত চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে। শিশু হাসপাতাল প্রকল্প অর্ন্তর্ভুক্ত অবকাঠামো সমূহ নির্মানের পর ২০২০ সালের ৮ই মার্চ হাসপাতাল ভবনটি রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

এ ব্যাপারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের পরিচালক ডা, ইউনুছ আলী জানান, নব নির্মিত শিশু হাসপাতালটি তার হাসপাতালের অধিনে চলবেনা। এর জন্য আলাদা প্রশাসনিক অনুমোদন প্রয়োজন। নিয়োগ দিতে হবে প্রয়োজনীয় জনবল ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ চিকিৎসা সামগ্রী। এ জন্য চিকিৎসা সামগ্রী সহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয় করতেই অনেক অর্থের প্রয়োজন। এখানে হাসপাতাল পরিচালনার জন্য একজন সুপার নিয়োগ দিতে হবে। এটা আলাদা প্রশাসনিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হবে। এসবের কিছুই এখনও করা হয়নি। এ জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। তারা অর্থ মন্ত্রনালয়ে প্রয়োজনীয় আর্থিক অনুমোদন প্রদান করার পর জনবল নিয়োগ ও চিকিৎসা সরজ্ঞাম ক্রয় এবং স্থাপন করার পর চালু করা যাবে। তবে আপাতত একজন চিকিৎসক দিয়ে আউট ডোর সার্ভিস চালু করা হলেও তা বাস্তবায়িত হচ্ছেনা। কারন হাসপাতালের আউট ডোরে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা ২ কিলোমিটার দুরে আসতে চায়না।

অন্যদিকে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা, এবিএম আবু হানিফ জানান, রংপুর ১০০ শয্যার বিশেষায়িত শিশু হাসতালটির জন্য্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ এবং জনবলের চাহিদা র্নিধারন করে এসব বরাদ্দের জন্য মন্ত্রনালয়ে প্রয়োজনীয় চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে, দাপ্তরিক কাজ চলছে। তবে কবে নাগাদ চালু করা সম্ভব হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি ওই কর্মকর্তা। খবর-দৈনিক সংবাদ

মন্তব্য করুন


 

Link copied