আর্কাইভ  শনিবার ● ২৭ জুলাই ২০২৪ ● ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
আর্কাইভ   শনিবার ● ২৭ জুলাই ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: রংপুরে ১২ মামলায় গ্রেপ্তার ১৭৫       আহতরা যেই দলেরই হোক, চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী       ২৭শে জুলাই রংপুর বিভাগের আট জেলায় কারফিউ শিথিল       সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান বেরোবি প্রশাসনের       "শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে"      

 width=
 

দিনাজপুরে ফিল্মী স্টাইলে ডাকাতিতে জড়িত ৬ জন গ্রেফতার 

বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বিকাল ০৫:১৪

শাহ্‌ আলম শাহী, দিনাজপুর:'দিনাজপুরের হাকিমপুর-হিলিতে ফিল্মী স্টাইলে একট চাউল কলে দুধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত আন্তঃজেলা ডাকাত সর্দার পোড়া রহিমসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলে বসেই এই ডাকাতির পরিকল্পনা করে ডাকাতেরা।
আজ বৃহস্পতিবার  ( ২২ ফেব্রুয়ারী) ভোরে এই আন্তঃজেলা ৬ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশের যৌথ টিম। তাদের কাছে বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র এবং ডাকাতির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।ডাকাতদলের অন্য সদস্যদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চালছে বলে জানিয়েছেন,জেলা পুলিশ সুপার শাহ্‌ ইফতেখার আহমেদ।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিং এ এ তথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার শাহ্‌ ইফতেখার আহমেদ জানান, মুখে মুখোশ এবং ছদ্মবেশে ধারন করে ফিল্মী স্টাইলে  ১৫ ফেব্রুয়ারী মধ্যরাতে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী বাসুদেবপুরে গনেশ প্রসাদ সাহার ইউনাইটেড রাইস মিলে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। মিলের সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, ছদ্মবেশে মুখে মুখোশ পরে একদল ডাকাত ফিল্মী স্টাইলে ডাকাতি চালাচ্ছিল। নিজেদেরকে গোপন করার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরার ল্যান্স বন্দ করার সময় একজনের মুখের স্পষ্ট সাদাকালো ছবি সিসিটিভিতে রেকর্ড হয়ে যায়। সেই ছবি হাকিমপুর থানা পুলিশের ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে তার সন্ধ্যানদাতাকে পুরষ্কৃত করার ঘোষনা করে। এব্যাপারে ১৭ ফেব্রুয়ারী হাকিমপুর থানার মামলা রেকর্ড করা হয়। মামলা নং-১৩। এরই মধ্যে ডাকাতদের চিহ্নিত করার অভিযান। ডাকাত দলের সদস্যরা চাউল কলের ম্যানেজার এবং প্রহরিকে বেঁধে রেখে সাড়ে ৩ লাখ টাকা লুট করে।

জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে ডাকাতির পরিকল্পনা আটার চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।  

হাকিমপুর থানার ইনচার্জ দুলাল হোসেন জানান, প্রথমে ক্লুলেস ছিল ডাকাতির ঘটনাটি। জড়িতদের গ্রেফতার এবং লুষ্ঠিত মালামাল উদ্ধারের অভিযানে সক্রিয় হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) আব্দুল্লাহ-আল-মাসুম,  সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোঃ জিন্নাহ আল মামুন  হাকিমপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম, হাকিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ দুলাল হোসেন, ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সোহেল রানা, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক সাদ্দাম হোসেন, কোতয়ালী থানার উপ পরিদর্শক নুর আলমসহ সঙ্গীয় ফোর্স। সিসি টিভি ফুটেজ এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় একে একে এসময় বেরিয়ে আসে মুল পরিকল্পনাকারি এবং জড়িতদর নাম ঠিকানা চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

পুলিশ সুপার শাহ্‌ ইফতেখার আহমেদ জানান,  দিনাজপুরের জেলা কারাগারে বসে ডাকাতির পরিকল্পনা আটে হাজতবাসি ডাকাত সর্দার জেলা সদরের বাসিন্দা প্রায় ৭০ বয়সি আব্দুর রহিম ওরফে পোড়া রহিম ও হাকিমপুর উপজেলার বাসুদেবপুরের বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সি আলিম হোসেন। অন্য মামলায় হাজতবাস করছিল তারা। এসময় পরষ্পরের সাথে পরিচয় পর্ব থেকে হাকিমপুরের ওই চাউল কলে ডাকাতি ছোক তৈরি করে তারা। কারামুক্তি পেয়েই সফল ডাকাতি চালায় তারা। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের জালে আটকা পড়ে দলের ৬ সদস্য, অন্যরা রয়েছে আত্বগোপনে।

ডাকাত সর্দার আব্দুর রহিম ওরফে পোড়া রহিম (৬৮) জেলা সদরের করিমুল্ল্যাপুর গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে আগের ৫ টি রয়েছে। আলিম হোসেন (৪০) হাকিমপুরের মধ্য বাসুদেবপুরের (মাঠপাড়া) মৃত ইমান আলী মিস্ত্রির ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১ টি মামলা বিচারাধীন আছে। আটক অন্য ৪ জন হলো জেলা শহরের ৬ নম্বর নিউ টাউনের দুলাল মিয়ার ছেলে শামিম পরন (৩০)। তার বিরুদ্ধে  বিভিন্ন ধরনের অপারাধের ১৪ টি রয়েছে। জেলা শহরের কসবার (পুলহাট) মৃত আব্দুস জব্বারের ছেলে আব্দুস সোহাগ (৩৪)। তার বিরুদ্ধে ১০ টি মামলা রয়েছে।  চিরিরবন্দরের ভাবকি গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে ফরিদুল ইসলাম ওরফে মাসুয়া (৪৫)। তার বিরুদ্ধে ১ টি মামরা রয়েছে। শহরতলী নিমনগরের (শেখপুরা) মৃত কান্দু মাসুদের ছেলে বকুল হোসেন (৫০)। 

ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র ১টি লোহার তৈরি গ্রিল কাটার যন্ত্র, ১টি চাপাতি, ১টি স্টিলের হাতল বিশিষ্ট দেশীয় তৈরি পশুর কুড়াল,২টি টর্চ লাইট, ৩টি বাটন মোবাইল ফোন, ডাকাতির উপকরন বহনকারব ২টি ট্রাভেল ব্যাগ এবং লুন্ঠিত সাড়ে ৩ লাখ টাকার মধ্যে ৯ হাজার ৩ শত টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো ছাড়াও লুন্ঠিত টাকা উদ্ধারে যৌথ টিমের অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানিয়েচেন পুলিশ সুপার।
 তিনি জানান,মিলের সিসি টিভির ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। এরপর থানা এবং ডিবি পুলিশ সমন্বয়ে অভিযান চালিয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তারদের মধ্যে আব্দুস সোহাগের বিরুদ্ধে ১০, শামিমের বিরুদ্ধে ১৪ এবং আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে পাঁচটি করে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে।
আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied