বিশেষ প্রতিনিধি॥ ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আনোয়ারুল হক সরকার মিন্টু। কিন্তু দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা ভয়ে সমর্থন দিয়েছে নীলফামারী ১ (ডোমার-ডিমলা) আসনর সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকারের ভাতিজা উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক ফেরদৌস পারভেজকে (আনারস)।
বুধবার(৮ মে) ছিল ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহন। অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতাকর্মীরা এমপির ভাতিজাকে ভোট দেয়ার প্রমান স্বরূপ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে আনারস প্রতীকে সিল দেয়ার পর মোবাইলে ছবি তুলেছেন। কেউ কেউ ফেসবুকে তা পোষ্ট করেন কেউবা জায়গা মতো ছবি পৌছে দেন। এদের মধ্যে ফেসবুকে পোষ্ট দেন উপজেলার খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ মানিক। তিনি নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সিল মারা ব্যালটের সঙ্গে ছবি তুলে সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের ব্যক্তিগত আইডিতে পোস্ট করেন। যা নিমিষেই ভাইরাল হয়ে যায়। তিনি বুধবার দুপুরের দিকে উপজেলার খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের উত্তর বন্দর খড়িবাড়ী ¯েপশাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতা মানিক মোবাইল নিয়ে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এরপর ব্যালট নিয়ে গোপন কক্ষে যান যান। সেখানে ব্যালটে সিল মেরে সেখানেই সিল মারা ব্যালটের ছবি তুলে তার ব্যক্তিগত আইডিতে পোস্ট করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোটগ্রহণের গোপন কক্ষ ও ব্যালটের ছবি দেওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে নির্বাচন কমিশনের।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মো. মানিক মুঠোফোনে ফোন করলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি কেন্দ্রে গিয়ে আমার নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে সেটির ছবি ফেসবুকে দিছি। এটা তো অন্যায়ের কিছু দেখছি না। ছবি দেওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে নির্বাচন কমিশনের, দিলে জেল জরিমানাও হতে পারে এমন এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ওহহ তাই। এটা আমার জানা ছিলনা। ওটা আমার ভুল হয়েছে, আমি ছবিটি সরিয়ে নিয়েছি।
নাম প্রকাশ না করার সর্ত্বে অনেক নেতাকর্মী জানান, ভোট দেয়ার পর তার প্রমান ছবি তুলে রাখতে হয়েছে। এবং তা জায়গামতো পৌছে দিত হয়। তা না হলে খবর খারাপ হবে। আর মানিক কিছু না বুঝে ভুল করে ফেসবুকে পোষ্ট করে দিয়ে ভাইরাল হয়ে গেছে।
এদিকে বিধি লংঘন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সিল মারা ছবি ফেসবুকে আপলোডের বিষয়টি নিয়ে অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
উক্ত ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ডিমলা পল্লী উন্নয়ন অফিসের সহকারী অফিসার আব্দুল কাদের এর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
আঃলীগের নেতার ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে ভোট দেওয়ার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করার বিষয়ে ডিমলা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শুভ কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ভোটকেন্দ্রের গোপন বুথে প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার ছবি তোলা বেআইনি। কোনো ভোটার যাতে ভোটকেন্দ্র মোবাইল ব্যবহার করতে না পারেন সেজন্য সেখানে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের বিশেষভাবে নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এরপরও ওই ব্যক্তি কীভাবে মোবাইল ব্যবহার করেছে তা জানা নেই।
জেলা নির্বাচন অফিসার ও ডিমলা রিটানিং অফিসার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এখন ভোট গণনা চলছে। এবিষয়ে ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সকলকে জিজ্ঞেসাবাদ করা হবে।