নিউজ ডেস্ক: ঢাকাই শোবিজ তারকারা নানা সময়ে নানা কারণে আলোচনার শিরোনাম হন। কখনো ভালো কাজে হন নন্দিত কখনো আবার মন্দ কাজে বয়ে আনেন নিন্দা। এর মধ্যে অনেক তারকা একাধিকবার বিয়ে করেও হয়েছেন সমালোচিত।
রুনা লায়লা : উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই সংগীতশিল্পী এ পর্যন্ত তিনবার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। তাঁর প্রথম বিয়ে খাজা জাভেদ কায়সার নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। দ্বিতীয় বিয়ে করেন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক রন ড্যানিয়েলকে। সর্বশেষ তিনি ঘর বাঁধেন বাংলা চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান নায়ক আলমগীরের সঙ্গে।
আলমগীর : নায়ক আলমগীর ১৯৭৩ সালে প্রথমে বিয়ে করেন গীতিকার খোশনূর আলমগীরকে। গায়িকা আঁখি আলমগীর তাঁদের কন্যা। পরে খোশনূরের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটিয়ে আলমগীর ১৯৯৯ সালে গায়িকা রুনা লায়লাকে বিয়ে করেন।
সাবিনা ইয়াসমিন : সংগীতের এই কিংবদন্তি তিনবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর প্রথম ব্যবসায়ী স্বামী আনিসুর রহমান, দ্বিতীয়জন নৃত্যপরিচালক আমির হোসেন বাবু এবং তৃতীয় স্বামী কলকাতার সংগীতশিল্পী ও সুরকার কবীর সুমন। তিনজনের সঙ্গেই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে সাবিনা ইয়াসমিনের। তাঁর দুই সন্তান, কন্যা ফাইরুজ ইয়াসমিন এবং পুত্র শ্রাবণ।
শাকিব খান : নায়ক শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের গোপন বিয়ে হয় ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জন্ম হয় তাঁদের সন্তান আব্রাম খান জয়ের। ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি শাকিব-অপুর তালাক আইনগতভাবে কার্যকর হয়ে যায়। এর পাঁচ মাসের মাথায় বুবলীকে বিয়ে করেন শাকিব খান। ২০২০ সালের ২১ মার্চ সুদূর আমেরিকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে পুত্র শেহজাদ খান বীরের জন্ম দেন বুবলী। কথিত আছে ১৯৯৯ সালে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করার পর রাত্রি নামের এক এক্সট্রা শিল্পীকে গোপনে বিয়ে করেন শাকিব। সেই ঘরে একটি পুত্র সন্তানও আছে তাঁদের।
পরীমণি : আলোচিত এই নায়িকা বিয়ের দিক দিয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন। কাগজে-কলমে তাঁর চারটি বিয়ের খবর সবাই জানেন। আরেকটা বিয়ে লুকিয়ে করেছিলেন বলে গুঞ্জন। পিরোজপুরে নানাবাড়িতে থাকাকালীন খালাতো ভাই ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে পরীমণির বিয়ে হয়। সেই সংসার টেকে দুই বছর। এরপর ২০১২ সালের ২৮ এপ্রিল ফেরদৌস কবীর সৌরভ নামে এক ফুটবলারের সঙ্গে বিয়ে হয় নায়িকার। কিন্তু তাঁরা আলাদা হন বিয়ের কিছুদিন পর। নায়িকা হওয়ার পর ২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল বিনোদন সাংবাদিক তামিম হাসানের সঙ্গে বাগদান সারেন পরীমণি। কথিত আছে পরীমণি আর তামিমের গোপনে বিয়েও হয়েছিল। কিন্তু তা টেকেনি। এরপর থিয়েটারকর্মী ও চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান রনিকে খুবই অল্প দিনের পরিচয়ে বিয়ে করেন পরীমণি। এই সংসার টেকেনি তিন মাসও। ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর গোপনে বিয়ে করেন পরীমণি ও নায়ক শরিফুল রাজ। ২০২২ সালের ১০ আগস্ট জন্মগ্রহণ করে তাদের পুত্র শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য। শেষ পর্যন্ত ভেঙে যায় তাদের সংসার। ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পরীমণি রাজের উদ্দেশে বিচ্ছেদের নোটিস পাঠান।
সামিনা চৌধুরী : এই শিল্পী প্রথমে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন গায়ক, সুরকার ও সংগীত পরিচালক নকীব খানকে। মতের মিল না হওয়ায় ভেঙে যায় সে সংসার। পরে সামিনা চৌধুরী বিয়ে করেন অনুষ্ঠান নির্মাতা এজাজ খান স্বপনকে।
সুবর্ণা মুস্তাফা : ১৯৮৪ সালে কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদিকে বিয়ে করেন সুবর্ণা মুস্তাফা। ২৪ বছর সংসার করেন তাঁরা। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০০৮ সালে হুমায়ুন ফরীদিকে ডিভোর্স দেন সুবর্ণা। এরপর তিনি বিয়ে করেন নাট্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদকে। সুবর্ণার চেয়ে ১৪ বছরের ছোট সৌদ।
সুচরিতা : এই নায়িকা প্রথমে বিয়ে করেছিলেন অ্যাকশন হিরো নায়ক জসিমকে। অল্প কিছুদিন সংসার করেছিলেন তাঁরা। জসিমের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর সূচরিতা বিয়ে করেন প্রযোজক কে এম আর মঞ্জুরকে। এ বিয়েও বেশি দিন টিকেনি।
শমী কায়সার : ১৯৯৯ সালে কলকাতার চিত্রনির্মাতা রিঙ্গোকে বিয়ে করেন শমী কায়সার। দুই বছর টিকেছিল সে সংসার। এরপর শমী বিয়ে করেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও রাজনীতিক মোহাম্মদ এ. আরাফাতকে। এ বিয়েও বেশি দিন টেকেনি। এরপর ২০২০ সালের অক্টোবরে শমী বিয়ে করেন ব্যবসায়ী রেজা আমিন সুমনকে।
ডলি সায়ন্তনী : এই গায়িকা প্রথমে বিয়ে করেন গীতিকার রিজভীকে। সেই ঘরে ডলির দুটি কন্যাসন্তান। তারপরও সংসার টেকেনি। এরপর ডলি বিয়ে করেন গায়ক রবি চৌধুরীকে। টেকেনি সে সংসারও। বর্তমানে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে ঘর করছেন গায়িকা।
অপি করিম : ২০০৭ সালে জাপান প্রবাসী কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার তাসির আহমেদকে বিয়ে করেন অপি। বছর না গড়াতেই ভেঙে যায় তাদের সংসার। এরপর অপি প্রেম করে বিয়ে করেন নাট্যনির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বলকে। দ্বিতীয় সংসারকেও বিদায় জানিয়ে ২০১৬ সালের ৭ জুলাই বিয়ে করেন চিত্রনির্মাতা এনামুল করিম নির্ঝরকে।
প্রভা : সমালোচিত মডেল ও অভিনেত্রী প্রভার প্রথম বিয়ে হয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্বর সঙ্গে। বিয়ের পর সাবেক প্রেমিক রাজীবের সঙ্গে করা কয়েকটি পর্নো ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে প্রভাকে তালাক দেন অপূর্ব। পরে ২০১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর পারিবারিক উদ্যোগে বরিশালের ছেলে মাহমুদ শান্তকে বিয়ে করেন তিনি।
সুজানা জাফর : মডেল ও অভিনেত্রী সুজানা ২০০৬ সালে প্রথম বিয়ে করেন একটি বায়িং হাউসের কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদকে। চার মাসের মাথায় ভাঙে সে সংসার। এরপর তিনি ২০১৫ সালে নিজের থেকে সাত বছরের ছোট গায়ক হৃদয় খানকে বিয়ে করেন। মাত্র চার মাস পর ভাঙে সে সংসারও।
ন্যান্সি : ২০০৬ সালে গায়িকা ন্যান্সি বিয়ে করেন ব্যবসায়ী আবু সাঈদ সৌরভকে। ২০১২ সালে তাঁদের সংসারজীবনের ইতি ঘটে। পরে ২০১৩ সালে নাজিমুজ্জামান জায়েদ নামে এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন ন্যান্সি। টেকেনি সে সংসারও। এরপর ২০২১ সালে গীতিকার মহসিন মেহেদীকে বিয়ে করেন গায়িকা।
মিথিলা : ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট ভালোবেসে বিয়ে করেন অভিনেতা ও সংগীতশিল্পী তাহসান রহমানকে। ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল তাঁদের সংসারে আসে মেয়ে আইরা। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। পরে ২০১৯ সালের ৬ ডিসেম্বর কলকাতার চলচ্চিত্র নির্মাতা সৃজিত মুখার্জিকে বিয়ে করেন মিথিলা।
মাহিয়া মাহি : এই নায়িকা ২০১৬ সালে প্রথমে বিয়ে করেন সিলেটের ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপুকে। চার বছরের বেশি সময় সংসার করার পর ২০২১ সালের জুনে তাঁরা ডিভোর্সের ঘোষণা দেন। ওই বছরেরই সেপ্টেম্বরে নায়িকা বিয়ে করেন গাজীপুরের ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক রাকিব সরকারকে। এ ঘরে তাঁদের একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ডিভোর্স হয় তাঁদের।
এ ছাড়া শাকিল খান, গায়ক হৃদয় খান, রবি চৌধুরী, বাপ্পা মজুমদারসহ আরও অনেকেই একাধিকবার বিয়ে করেছেন।