আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১ আগস্ট ২০২৫ ● ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১ আগস্ট ২০২৫

তিন আসনে লড়বেন খালেদা জিয়া

বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, সকাল ০৯:৩৯

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: শারীরিকভাবে বর্তমানে অনেকটা সুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন তিনি। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলে বগুড়া এবং ফেনীর তিন আসনে লড়াই করবেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, যেই নির্বাচনের জন্য খালেদা জিয়া কারাভোগ করেন, সীমাহীন জুলুমের শিকার হন, সেই নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন। দেশের মঙ্গল ও জনগণের চাহিদার কথা বিবেচনা করে খালেদা জিয়া সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নেবেন।

সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরে আসার পর থেকে খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। অর্থাৎ ১৯৯১ সাল থেকে যত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার মধ্যে একটি ছাড়া বাকি সব নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। ব্যতিক্রম ছিল ২০১৮ সালের নির্বাচন। কারগারে থাকায় ২০১৮ সালে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হন। এবারও তার দল চাচ্ছে খালেদা জিয়া নির্বাচনে লড়াই করুক।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নির্বাচন অংশ নেওয়া ওনার গণতান্ত্রিক অধিকার। উনি নির্বাচন করলে দলের জন্য ভালো। আমাদের ভোট বাড়বে। উনি কখনো ভোটে পরাজিত হননি। উনি নির্বাচন করলে তিনটি আসনে করতে পারেন। নির্বাচন করলে ওনার কি কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন আছে? ঘরে বসেই তিনি সব করবেন। সর্বোপরি নির্বাচন করা উনার ব্যক্তিগত ইচ্ছা।

বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, দেশে গণতন্ত্রে উনার অবদান অনেক অনস্বীকার্য। ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘদিন নিপীড়ন ও বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া নির্বাচনে লড়াই করা সব আসনেই জয়ী হয়েছেন। তিনি বলেন, শুধু বিএনপি নয়, জনগণের দাবি খালেদা জিয়া পুনরায় নির্বাচনে অংশ নেবেন। অসুস্থতার মধ্যেও তিনি কিন্তু রাজনীতিত থেকে কখনো দূরে ছিলেন না। সবশেষ দলের বর্ধিত সভাতেও ভার্চুয়ালি অংশ নিয়েছেন। কয়েক দিন আগেও জুলাই স্মরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছেন। লাখ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীর আশা তিনি দেশের হাল ধরতে নির্বাচনে অংশ নেবেন।

এ প্রসঙ্গে গতকাল প্রথম বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু জানান, সংসদ নির্বাচন হলে তাতে অংশ নেবেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফেনীতে এক মতবিনিময় সভায় মিন্টু বলেন, বিশ্বাস করতে চাই, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। দেশে এখন যে অবস্থা ফেব্রুয়ারি আগেই নির্বাচন হতে পারে। হয়তো জানুয়ারিতেও হয়ে যেতে পারে। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন। নির্বাচন হলে তিনি অংশগ্রহণ করবেন।

খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য গতকাল রাতে বলেন, হ্যাঁ ম্যাডাম নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। এটা মোটামুটি নিশ্চিত। যদি উনার স্বাস্থ্যগত নতুন বড় কোনো জটিলতা সৃষ্টি না হয়। এটা উনার ইচ্ছা। মেডিকেল বোর্ড উনাকে সশরীরে বড় জমায়েতে উপস্থিত হওয়া থেকে বারণ করেছেন। আর ঘরে থেকে সবকিছুই তিনি করতে পারবেন। তিনি বলেন, দেখুন, রাজনীতি খালেদা জিয়ার শখ। করলে তো কোনো বাধা নেই। ইদানীং অনেকেই তাকে নির্বাচন করার ব্যাপারে উৎসাহিত করছেন। উনার গ্রহণযোগ্যতা অনেক। দেশের বর্তমান স্বার্থে তাকেই নির্বাচন করতে হবে বলে অনেকে বলার চেষ্টা করছেন। ম্যাডামও বলছেন তার শরীরের যে অবস্থা তাতে নির্বাচন করতে পারবেন কি না; শরীর সায় দিলে লড়াই করবেন। তবে উনার মানসিক অবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী ও দৃঢ়। সবার সঙ্গে সব বিষয়ে খোলামেলা কথা বলছেন।

কখনোই পরাজিত হননি খালেদা জিয়া দলে নেতৃত্বের মতো নির্বাচনের মাঠেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাফল্য ছিল শতভাগ। নির্বাচনে খালেদা জিয়া কখনোই পরাজিত হননি। ১৯৯১ সাল থেকে শুরু করে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনটি সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়া প্রতিবারই ৫টি আসনে প্রার্থী হয়েছেন এবং সব আসনেই তিনি জয়লাভ করেছেন। এর মধ্যে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিতর্কিত একতরফা নির্বাচনেও খালেদা জিয়া প্রার্থী ছিলেন। এরপর ২০০৮ সালে খালেদা জিয়া তিনটি আসনে প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা করে তিনটিতে জয়ী হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করেছিল বিএনপি। সে নির্বাচনে বিএনপি মাত্র ৩০টি আসন পেলেও খালেদা জিয়া নির্বাচনে জয়লাভ করতে কোনো অসুবিধা হয়নি।

২০১৮ সালের নির্বাচনেও খালেদা জিয়া তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। এসব আসন হচ্ছে-ফেনী ১. বগুড়া ৬ ও বগুড়া ৭। তার পক্ষে মনোনয়নও কেনা হয়েছিল। কিন্তু দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হওয়ার কারণে নির্বাচনে অযোগ্য হয়ে পড়েন তিনি।

পর্যালোচনা দেখা যায়, খালেদা জিয়ার অতীত নির্বাচনগুলোতে বগুড়া, ফেনী, লক্ষ্মীপুর এবং চট্টগ্রামের আসন থেকে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এ ছাড়া ১৯৯১ সালে ঢাকার একটি আসন থেকে এবং ২০০১ সালে খুলনার একটি আসন থেকে ভোটে লড়েছেন তিনি। সবটিতেই খালেদা জিয়া বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন।

মন্তব্য করুন


Link copied