স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারী-২ (সদর) সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে গাড়ী চাপা দিয়ে হত্যা মামলার প্রায় ১২ বছর পর আদালতের নির্দেশে নিহত সিদ্দিক আলী ওরফে আবু বক্কর সিদ্দিকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে দেহাবশেষ (নমুনা) সংগ্রহ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার(৩১ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের আকাশকুড়ি গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তানজীর ইসলামের উপস্থিতিতে নিহতের মৃতদেহের দেহাবশেষ সংগ্রহ করা হয়। পরে তা রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে প্রেরণ করা হয়।
এসময় নীলফামারী থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) সজীব সাহা, নিহত সিদ্দিক আলীর ছেলে মামলার বাদী লিটন রহমান ও সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর আবু হানিফা শাহ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ জানায়, নিহতের ছেলে লিটন রহমান ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলমের নীলফামারী আমলি আদালত-১এ হত্যা মামলায় আসাদুজ্জামান নূর সহ ২০২জনকে আসামী করে দায়ের করেছিলেন। আদালত মামলাটি সদর থানায় এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করার জন্য নির্দেশ দিলে তা ওই বছরের ৩ নভেম্বর থানায় দায়ের করা হয় (মামলা নম্বর জি,আর ৩২০/২০২৪)। অন্য আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক, সহসভাপতি হাফিজুর রশিদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন মুন, জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক শাহিদ মাহমুদ, আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম শাহ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনিরুল হাসান শাহ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ সরকার প্রমুখ।
দায়ের করা মামলায় সংক্ষিপ্ত বিবরন তুলে ধরে বাদীর আইনজীবী মামুনুর রশিদ পাটোয়ারী জানান, ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী লক্ষ্মীচাপের কাছারি বাজারে আগুন লাগিয়ে দিয়ে লুটপাট চালায়। দুই দিন পর ১৪ ডিসেম্বর উল্লিখিত আসামিরা ভিন্ন দলের নেতা-কর্মীদের মারধর শুরু করেন। এসময় বাদী লিটন রহমানের পিতা সিদ্দিক আলী আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর দ্বারা মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাঁকে বাঁচাতে ছুটে এলে সাবেক এমপি ও সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর দ্রুত তাঁর গাড়ি দিয়ে সিদ্দিক আলীকে চাপা দিয়ে হত্যা করেন।
উক্ত মামলার সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক(এসআই) সজীব সাহা, জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের আকাশকুড়ি গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে নিহতের মৃতদেহের দেহাবশেষ উদ্ধার করে তা রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে নিহতের ছেলে মামলার বাদী লিটন রহমান অভিযোগ করেন, ২০১৩ সালের ১৪ডিসেম্বর আমার বাবাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আসাদুজ্জামান নুর ছিলেন এই ঘটনার মুল নায়ক। দ্রুত আসামীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করেন তিনি।
উল্লেখ যে, উক্ত মামলায় আসাদুজ্জামান নুরকে নীলফামারী সদর থানা পুলিশ গত ৮ জুলাই শ্যোন গ্রেপ্তার দেখিয়েছে।