নিউজ ডেস্ক: জুলাই ঘোষণাপত্রকে অপূর্ণাঙ্গ, দুর্বল ও ফরমায়েশি বলে মন্তব্য করেছেন কিছু রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘নেক্সাস ডিফেন্স অ্যান্ড জাস্টিস’ আয়োজিত ‘নির্বাচনমুখী জুলাই ঘোষণাপত্র, শহীদদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন প্রতিক্রিয়া জানান বক্তারা।
সভায় বক্তৃতা করেন গণ-অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদী, ইসলামি ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ সিবগা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ব্রি. জে. এটিএম জিয়াউল হাসান (অব.), কর্নেল মোহাম্মদ শাহনূর রহমান (অব.), কর্নেল জাকারিয়া হোসাইন (অব.) প্রমুখ।
শরীফ ওসমান হাদী বলেন, ব্রিটিশবিরোধী লড়াইয়ের চূড়ান্ত অর্জন আমাদের ১৯৪৭-এর আজাদী। এই আজাদীকে জুলাই ঘোষণাপত্রে উপনিবেশবিরোধী লড়াই বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৪৭কে মার্ক করা হয়নি। অথচ এই ৪৭ই হলো আমাদের রাষ্ট্র আকাঙ্ক্ষা প্রথম সফলতা। ৪৭কে স্বীকৃতি দিতে হবে। যেহেতু এখানে ৭৫-এর ৭ই নভেম্বরের স্বীকৃতি আছে। এখানে ৯০-এর স্বীকৃতি আছে। এর সঙ্গে আমাদের ঐতিহাসিক পিলখানা হত্যাকাণ্ড এবং শাপলা হত্যার স্বীকৃতি থাকতেই হবে।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, ঘোষণাপত্রটি দুর্বল হয়েছে, অপূর্ণাঙ্গ হয়েছে। শুধু তা-ই নয় বরং বৈষম্যমূলক হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে উদ্ভ‚ত একটি অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের মধ্যে আমরা বৈষম্যের ছাপ দেখেছি। ঘোষণাপত্র তৈরির প্রেক্ষাপটেও আমরা দেখেছি বৈষম্য করা হয়েছে। এখানে লিখিতভাবেই তারা জানিয়েছে যে, ঘোষণাপত্রটি রচনার আগে তিনটি রাজনৈতিক দলের কাছে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপি। ফলে এখানে স্পষ্টত একটি বৈষম্য হয়েছে। কারণ এই তিনটি রাজনৈতিক দলই শুধু এই জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছে বিষয়টি এমন নয়।
সিবগাতুল্লাহ সিবগা বলেন, জুলাই-আগস্টে আমাদের চোখের সামনে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। অথচ জুলাই ঘোষণাপত্রের কোথাও গণহত্যার কথা উল্লেখ নেই। আমরা দেখতে পেলাম একটা ফরমায়েশি ঘোষণাপত্র হয়েছে। জুলাইয়ের এক দফা একদিনে আসেনি। এটার একটা ধারাবাহিকতা ছিল। সবাই জানে নয় দফা থেকে ১ দফা হয়েছে। এই নয় দফার উল্লেখ কি কোথাও আছে ঘোষণাপত্রে? কোথাও নেই। নয় দফা তো একটি বড় বৈধতা। এই গুরুত্বপূর্ণ বৈধতাকে তারা উপেক্ষা করছে। এই নয় দফায় আসলে এক দফা নিহিত ছিল। কারণ হাসিনা ৯ দফার কোনো দাবি মানতে পারেনি।
রাশেদ খান বলেন, আজকে একজন সচিবের বক্তব্য শুনলাম। তিনি বলেছেন, তার কাছে স্পষ্ট তথ্য রয়েছে।আটজন উপদেষ্টার দুর্নীতির তথ্য। আমি জানি না কতটুকু সত্য, কতটুকু মিথ্যা।তবে ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি একজন উপদেষ্টার এপিএসের দুর্নীতি এবং আরেকজন উপদেষ্টার দুজন পিএর দুর্নীতি।এই সরকারের কাছ থেকে আমাদের অনেক প্রত্যাশা ছিল যে বাংলাদেশকে তারা পরিবর্তন করে ফেলবে।কিন্তু এক বছরে শুধু উপদেষ্টা পরিষদ ও তাদের আত্মীয়স্বজনের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু আমার-আপনার কোনো পরিবর্তন হয়নি।