নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর: রংপুরের তারাগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় (৮০) ও তার স্ত্রী সুবর্ণা রায়কে (৬৫) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
নিহত দম্পতির বড় ছেলে শুভেন রায় (৪০) রবিবার রাতে তারাগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। পুলিশ এখনো হত্যাকাণ্ডের কারণ উদ্ঘাটন করতে পারেনি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
এর আগে, গত শনিবার গভীর রাতে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের রহিমাপুর চাকলা রায় বাড়িতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। মামলা দায়েরের মাধ্যমে তদন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এলেও হত্যার কারণ উদ্ঘাটন না হওয়ায় অনেকের মধ্যে ক্ষোভ ও নানা আলোচনা তৈরি হয়েছে।
শুভেন রায় মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন- রাতের কোনো এক সময়ে দুর্বৃত্তরা গোপনে বাড়িতে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তার বাবা-মাকে হত্যা করে। ডাইনিং রুমে বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায়ের রক্তাক্ত মরদেহ এবং রান্নাঘরে স্ত্রী সুবর্ণা রায়ের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। উভয় মরদেহের মাথার খুলি ফেটে মগজ বেরিয়ে ছিল বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঘটনার দিন সকালে বাড়ির কাজের লোক দীপক চন্দ্র রায় ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে সন্দেহ হলে মই বেয়ে ঘরে উঠে প্রথমে যোগেশ চন্দ্র রায়ের মরদেহ দেখতে পান এবং পরে রান্নাঘরে সুবর্ণা রায়ের মরদেহ দেখতে পান। এরপর তিনি বিষয়টি স্থানীয়দের জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে।
নিহত দম্পতির ছেলে শুভেন রায় জানান, প্রতিদিনের মতো তার বাবা-মায়ের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়েছিল ৬ ডিসেম্বর রাত ৯টা ২২ মিনিটের দিকে। পরদিন সকালে ভাগিনা দীপক রায়ের ফোনে তিনি প্রথম হত্যার খবর পান।
খবর পেয়ে তারাগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দুইটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) সুশান্ত চন্দ্র রায়সহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
নিহত দম্পতির বড় ছেলে শুভেন রায় বর্তমানে র্যাব জয়পুরহাট সিপিসি-৩ ক্যাম্পে কর্মরত এবং ছোট ছেলে রাজেশ খান্না রায় বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত আছেন। দুই ভাই পরিবার নিয়ে কর্মস্থলে বসবাস করেন। গ্রামের বাড়িতে তাদের বাবা-মা একাই থাকতেন।
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। কী উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা এখনো জানা যায়নি। পুলিশ হত্যার কারণ উদ্ঘাটন, অপরাধীদের শনাক্ত এবং গ্রেফতারে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।