নিউজ ডেস্ক: দল ভাঙার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার এবং মুজিবুল হক চুন্নুকে রংপুর বিভাগে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, দল ভাঙার ষড়যন্ত্র এবং মব ভায়োলেন্সের প্রতিবাদে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘোষণা দেন তিনি। এ সময় সকল অবস্থাতেই জিএম কাদেরের পক্ষে রংপুর বিভাগ জাতীয় পার্টিকে একতাবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
সমাবেশে মোস্তাফিজার রহমান বলেন, রংপুর ডিভিশনে এই দালালচক্রকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। যেখানেই তাদের দেখা যাবে ও অস্তিত্ব পাওয়া যাবে, সেখানেই বাজ পাখির মতো গিয়ে তাদের তুলে নিয়ে এসে দিগম্বর করে রংপুরের রাজপথে দাঁড় করিয়ে রাখার জন্য নেতাকর্মীরা প্রস্তুত থাকবেন।
বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে মোস্তফা আরও বলেন, বর্তমান অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বেশ অবনতি ঘটেছে। এ অবস্থা চলমান থাকলে কিভাবে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব? পুলিশকে একটিভ এবং সঙ্গে সেনাবাহিনী দিয়ে যদি জাতীয় নির্বাচন ধাপে ধাপে করা হয় তাহলে হয়তো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে।
দেশের অবস্থা আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগের সঙ্গে তুলনা করে তিনি আরও বলেন, আজকে আমার মনে হচ্ছে আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে আছি। মানুষ খুন হচ্ছে। মানুষেকে দিনের বেলা কুপিয়ে মারা হচ্ছে। রাতের বেলা গাড়িতে মরদেহ পাওয়া যাচ্ছে। দিনের বেলা এখানেই দুলিত সম্প্রদায়ের ২ জনকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো। এ ধরণের ঘটনা ঘটছে। বুড়িরহাটে একটা ১২ বছরের ছেলেক জবাই করে মারা হলো। এটা কি পরিস্থিতি।
আ. লীগের মতো জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে যেভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জাতীয় পার্টিকেও সেভাবে নিষিদ্ধ করার একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। জাতীয় পার্টির কয়েকটা দালাল চক্র এটার সঙ্গে জড়িত। বলেন, রুহুল আমীন হাওলাদার শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে পোস্টার বানিয়ে নির্বাচন করেছিল, আনিছুল ইসলাম মাহমুদ শেখ হাসিনার আর্শিবাদ পুষ্ট হয়ে তার ছবিটা প্রথমে দিয়ে নির্বাচন করেছে, চুন্নু শেখ হাসিনার ছবি লাগিয়ে নির্বাচন করেছে। সেই ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়ার জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত আছি। এই চক্রটিকে আমরা রংপুর বিভাগের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিজেদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে মোস্তফা বলেন, আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমাদের নেতাকর্মীদের নামে প্রায় ২২টি মামলা হয়েছে। ৪ জনকে কারাগারে নেয়া হয়েছে, ২ জন শহিদ হয়েছে। তারপরেও আমাদেরক ফ্যাসিস্টদের দোসর বলা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের মতো আমাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনাদের সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নই থেকে যাবে। কখনও বাস্তবায়ন হবে না।
এর আগে নগরীর সেন্ট্রাল রোডের দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়ে পায়রা চত্বর, টাউন হল হয়ে আবারও দলীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। বিক্ষোভে এ তিন নেতার কুশপুত্তালিকা বহন করে এতে জুতা নিক্ষেপ করা হয়। নর্থ ভিউ হোটেলের সামনে কুশপুত্তলিকায় আগুন ধরিয়ে দিয়েও উল্লাস করেন নেতাকর্মীরা।
জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে সমাবেশে সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামান নাজিমের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির ও আজমল হোসেন লেবু, যুগ্ম মহাসচিব হাজি আব্দুর রাজ্জাক ও মাহবুবার রহমান।