নিউজ ডেস্ক: শিশুদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে টিকা গ্রহণের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। টিকা গ্রহণের মাধ্যমে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। একটি রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি হলো সুস্থ, শিক্ষিত ও সচেতন নাগরিক। শনিবার (১৮ই অক্টোবর) সকালে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলনকক্ষে টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রম নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে বিভাগীয় পর্যায়ের পরামর্শমূলক কর্মশালায় জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট-এর মহাপরিচালক মুহম্মদ হিরুজ্জামান সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের আয়োজনে এবং রংপুর জেলা ও আঞ্চলিক তথ্য অফিসের সহযোগিতায় কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
মহাপরিচালক বলেন, চলমান টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনের আওতায় দেশের প্রায় পাঁচ কোটি শিশুকে টিকা প্রদান করা হবে। টাইফয়েড জ্বর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অঙ্গহানি, অন্ধত্ব, শ্রবণশক্তি হ্রাস এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। তিনি আরো বলেন, টাইফয়েড টিকা শরীরে নিজস্ব প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার পাশাপাশি ইমিউনিটি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নে গণমাধ্যমকর্মীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। টিকা গ্রহণ সম্পর্কে জনগণের মধ্যে বিদ্যমান দোদুল্যমানতা ও বিভ্রান্তি পরিহারে গণমাধ্যম নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারে। সচেতনতার অংশ হিসাবে তিনি গণমাধ্যকর্মীদের লেখনির পাশাপাশি টিকা সম্পর্কিত গুজব প্রতিরোধেও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার (রুটিন দায়িত্ব) মোঃ আবু জাফর বলেন, শিশুদের ঝরে পড়া ও বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির অন্যতম কারণ হচ্ছে অসুস্থতা। টাইফয়েড টিকা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কারণ এটি জীবনরক্ষাকারী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। টিকা রেজিস্ট্রেশনের গুরুত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের পরিসংখ্যানিক উপাত্ত তৈরিতে এবং শিশুদের ভবিষ্যৎ প্রয়োজনে টিকা সনদ কাজে লাগতে পারে। রংপুর বিভাগের টিকা রেজিস্ট্রেশনে নাগরিকদের উদ্বুদ্ধ করতে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের আহ্বান জানান।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা ও ইউনিসেফ রংপুরের সোশ্যাল অ্যান্ড বিহ্যাভিয়ার চেঞ্জ অফিসার মনজুর আহমেদ। জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক মকবুল হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক ড. মো: মোফাকখারুল ইকবাল, বাংলাদেশ বেতার রংপুরের আঞ্চলিক পরিচালক মো: আব্দুর রহিম প্রমুখ। কর্মশালায় সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো: মারুফ নাওয়াজ।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে সাংবাদিকগণ টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রম গতিশীল করতে কমিউনিটি পর্যায়ে ব্যাপক প্রচার, বিভাগীয় তথ্যকেন্দ্র স্থাপন, ধর্মীয় উপাসনালয়ে টাইফয়েড জ্বরের ভয়াবহতা ও টিকার গুরুত্ব তুলে ধরা, মনিটরিং বৃদ্ধি প্রভৃতি বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করেন। প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ড. মো. গওসুল আজিম চৌধুরী বলেন, রংপুরে ৪৮ লাখ ৯৯ হাজার ৮২২ জন শিশুকে টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত টিকা রেজিস্ট্রেশন হয়েছে ১৭ লাখ ৮২ হাজার ৮১ জন যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৩৬.৩৭ শতাংশ।