আর্কাইভ  শনিবার ● ১৫ নভেম্বর ২০২৫ ● ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
আর্কাইভ   শনিবার ● ১৫ নভেম্বর ২০২৫
হিরো আলম গ্রেফতার

হিরো আলম গ্রেফতার

আখতার হোসেন টাকা খেয়ে পিপি নিয়োগ দিয়েছেন : মুনতাসির মাহমুদ

আখতার হোসেন টাকা খেয়ে পিপি নিয়োগ দিয়েছেন : মুনতাসির মাহমুদ

উত্তরবঙ্গ অচল করার ক্ষমতা আমাদের আছে : শামীম পাটোয়ারী

উত্তরবঙ্গ অচল করার ক্ষমতা আমাদের আছে : শামীম পাটোয়ারী

কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা ৩ জানুয়ারি

কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা ৩ জানুয়ারি

‘গণভোট মানতে যারা অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা জনগণের ম্যান্ডেট প্রত্যাখ্যান করেছে’

শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, রাত ০৮:৩৪

Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  গণভোটের রায় বাধ্যতামূলকভাবে মানতে যারা অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা প্রকারান্তরে জনরায়কে জনগণের ম্যান্ডেট প্রত্যাখ্যান করেছে। যারা জনগণের ম্যান্ডেট প্রত্যাখ্যান করবে তাদেরকেও বাংলাদেশের জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

তিনি বলেন, ইদানিং একটি দলের নেতারা চূড়ান্তভাবে গণভোটের রায়কে প্রত্যাখ্যান করার মতামত ব্যক্ত করছেন। তারা গণভোটে না দেওয়ার জন্য ক্যাম্পেইন করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ সেটাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই তারা সেই ক্যাম্পেইন থেকে সরে আসতে তারা বাধ্য হয়েছে।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) কনফারেন্স রুমে জাতীয় কৃষি দিবস উপলক্ষে 'তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা: জাতীয় অর্থনীতির নতুন শক্তি' শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারটি আয়োজন করে কৃষিবিদ উইং, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি।

এনসিপি সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, বর্তমান বাংলাদেশে জুলাই সনদ নিয়ে অনেকগুলো দল ধোঁয়াশার জায়গা তৈরি করেছেন সেটা আমরা সন্দেহের চোখে দেখছি না। আমরা ঐকমত্য কমিশনে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ, গণভোট এবং পরবর্তী সংসদকে ক্ষমতা প্রদানের মধ্য দিয়ে সংবিধানের মৌলিক সংস্কারগুলোকে আমরা অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। ইদানিং দুই একটি দলের নেতারা গণভোটের রায়কে প্রত্যাখ্যানের মতামত ব্যাক্ত করেছেন। তারা গণভোটে না যেতে ক্যাম্পেইন করেছেন কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ সেটা প্রত্যাখ্যন করেছে। তারা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে।

তিনি বলেন, এরপরও বাংলাদেশের জনগণের রায়কে শ্রদ্ধা জানানোর মতো মতিগতি আমরা সেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রত্যক্ষ করছি না। গণভোটের রায় বাধ্যতামূলক হবে কিনা, গণভোটের রায়ের মধ্য দিয়ে সংবিধানে সংশোধনী আনা যাবে কিনা? সেই প্রশ্ন যারা করেছেন তারা শিক্ষিত মানুষ। তারা এটাও জানেন যে পৃথিবীর অনেক দেশে সংবিধান প্রণয়নের পর গণভোটের মাধ্যমে পাস করা হয়। গণভোটে যদি সংবিধান পাস না হয় তাহলে সে সংবিধান গৃহিত হয় না।

এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার জীবন দেওয়ার মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের যে সার্বোভৌম অভিপ্রায়ের অভিব্যাক্তি প্রকাশ ঘটিয়েছে সেটাকে ধারণ করে যে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। সেই গণভোটের ফলাফল বাধ্যতামুলকভাবে মানতে যারা অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা প্রকারান্তরে জন রায়কে জনগণের ম্যান্ডেন্টকে প্রত্যাখ্যান করেছে। যারা জনগণের ম্যান্ডেটকে প্রত্যাখ্যান করবে তাদেরকেও বাংলাদেশের জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে।

তিনি বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বর্তমান সরকারের কাছে আহ্বান জানাতে চাই, জুলাই জাতীয় সনদ সংবিধান সংস্কারের যে আদেশ জারি করা হয়েছে সেখানে অনেকগুলো জায়গাতে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। সরকারের মর্জিমতো সংস্কারকে ভাগ করে ফেলা হয়েছে। সংস্কারের বিষয়বস্তুকে রাজনৈতিক দলের মতিগতি, অভিরুচির ওপর তাদের আওতাধীন করা হয়েছে। এমন অস্পষ্ট অবস্থায় রেখে বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে জুলাই সনদ দিয়ে পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব কিনা? সেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

সরকারের কাছে দ্রুত জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে যে অস্পষ্টতাগুলো রয়েছে সেগুলো দূরীকরণ করবেন এবং রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের রায় মেনে নিয়ে এ বাংলাদেশে যেন শান্তিপূর্ণ ও জনগণের অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সেই রাস্তায় সবাই হাঁটবে কোনো বিঘ্ন তৈরি করবে না। সামনের নির্বাচন জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। সেটাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য জুলাই সনদের ব্যাপারে কোনো রাজনৈতিক দল আপত্তি প্রদান করবে না, সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

দেশের কৃষি ও কৃষক নিয়ে আখতার হোসেন বলেন, আমরা যখন কৃষি ও কৃষক নিয়ে কথা বলছি তখন বাংলাদেশের রাজনীতির বড় দুটি দলের অবস্থান খুবই ভয়ংকরভাবে বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়েছে। দুইটা বড় দল কৃষকের ন্যায্য দাম এবং সংস্কারের জন্য জনগণকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। একটি দল কৃষি পণ্যের ন্যায্য দাম চাওয়ার কথা বলে জনগণের প্রত্যাশিত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার যে সংস্কার সেটাকে গৌণ করে ফেলছে। আবার আরেকটি দল আলু না গণভোট স্লোগানের মধ্য দিয়ে আলুর যে ন্যায্য দাম অর্থাৎ কৃষি পণ্যের ন্যায্য দাম যে কৃষকেরা পাচ্ছেন না সেটাকে তারা গৌণ করে ফেলেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় কৃষি পণ্যের ন্যায্য দাম এবং সংস্কারের জন্য গণভোট দুটাই একইসঙ্গে সমান্তরালে গুরুত্বপূর্ণ।

আখতার হোসেন বলেন, আমরা পলিসি নির্ভর বাংলাদেশ গঠন করতে বাধ্য। সেই পলিসি নির্ভর বাংলাদেশে আমাদের স্বাস্থ্য পলিসি কি রকম হবে, আমাদের শিক্ষানীতি, কৃষিনীতি কি রকম হবে এসব জায়গায় একটা ভারসাম্যপূর্ণ নীতিপ্রণয়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। রাষ্ট্রের প্রত্যেকটা জনগোষ্ঠীকে নিয়ে আমাদের আলাদা করে ভাবতে হবে। যাতে রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা কোনো একটা গোষ্ঠীর কাছে কুক্ষিগত না থেকে সবার মাঝে সমানভাবে বণ্টন হয় সে রকম বাংলাদেশ তৈরিতে কৃষকদের নিয়ে ভাবা, তাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে কার্যক্রম গ্রহণ করা। বাংলাদেশের কৃষিকে বাঁচিয়ে রাখার মধ্য দিয়ে দেশে স্বাধীনতা ও সার্বোভৌমত্ব বাঁচিয়ে রাখতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সর্বাধিক ভূমিকা রাখার প্রত্যয়ব্যক্ত করছি।

মন্তব্য করুন


Link copied