আর্কাইভ  সোমবার ● ১ ডিসেম্বর ২০২৫ ● ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ১ ডিসেম্বর ২০২৫
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন কার্যক্রম স্থগিত

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন কার্যক্রম স্থগিত

তারেক রহমানের ফেরায় বাধা থাকলে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে: আসিফ নজরুল

তারেক রহমানের ফেরায় বাধা থাকলে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে: আসিফ নজরুল

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে দলগতভাবে জড়িত আওয়ামী লীগ, মূল সমন্বয়কারী তাপস : কমিশন

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে দলগতভাবে জড়িত আওয়ামী লীগ, মূল সমন্বয়কারী তাপস : কমিশন

লালমনিরহাটে স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিকের যাবজ্জীবন ‎

লালমনিরহাটে স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিকের যাবজ্জীবন ‎

নীলফামারীতে গৃহবধুকে গণধর্ষণের পর হত্যার দায়ে দুই ব্যাক্তির যাবজ্জীবন কারাদন্ড

সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫, বিকাল ০৫:২৭

Advertisement

স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারীতে স্বামী পরিত্যক্তা এক গৃহবধুকে গণধর্ষণের পর হত্যার দায়ে আনোয়ারুল হক (৪০) ও ছামিউল ইসলাম (৩০) নামে দুই ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছেন বিজ্ঞ আদালত। সোমবার(১ ডিসেম্বর) দুপুরে নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিজ্ঞ বিচারক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. জিয়াউদ্দিন মাহমুদ ওই রায় প্রদান করেন। দন্ডপ্রাপ্ত আনোয়ারুল হক জেলার সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কাঙ্গালপাড়া গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে এবং ছামিউল ইসলাম একই গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে।

মামলার বিবরনে জানা যায়, নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কিসামত কামারপুকুর গ্রামের মৃত আবেদ আলী ও মমতাজ বেগমের ছোট মেয়ে নিহত আকলিমা খাতুনের(২৫) ২০১৪ সালে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হাবড়া রসুলপুর গ্রামের আনিসুর রহমানের ছেলে শরিফুল ইসলামের সাথে বিয়ে হয়েছিল এবং তাদের সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর আকলিমার শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের তারসাথে যৌতুক সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ করতো। এমঅবস্থায় ২০২০ সালের ১৫ আগষ্ট আবারও ঝগড়া বিবাদ হলে আকলিমার স্বামী শরিফুল তাকে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে ২০ আগষ্ট আকলিমাকে তালাকনামা পাঠায় সে। পরেরদিন ২১ আগষ্ট সকাল থেকে আকলিমাকে নিজ ঘরে না পেয়ে পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুজির পর তার কোনো সন্ধ্যান পাওয়া যায়নি। এর একদিন পর ২২ আগষ্ট সকালে বাড়ির উত্তর পাশ্বের মৎস্য খামারের পিছনে আব্দুল মান্নানের জমিতে অবস্থিত ৩৩ হাজার ভোল্ট বৈদ্যুতিক টাওয়ারের নিচে আকলিমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় মরদেহ পাশে একটি কাগজে ‘আমার মৃত্যু দাই কেউ না, আমি নিজে মৃত্যু করছি, আমার হাতে চিঠি লিখে’ লিখা পাওয়া যায়, যা সন্দেহ তৈরি করে। পরে ২৩ আগষ্ট নিহত আকলিমার মা মমতাজ বেগম বাদী হয়ে সৈয়দপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সৈয়দপুর থানা পুলিশ লাশের ময়নাতদন্ত শেষে আনোয়ারুল হক ও ছামিউল ইসলামকে আটক করে। আসামীরা ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দেয়। দীর্ঘ শুনানী শেষে বিজ্ঞ বিচারক ওই দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং প্রত্যেককে একলাখ টাকা করে মোট দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন। পরে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। আসামী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন নূরুল জাকি ও আবু মো. সোয়েম।

রাস্ট্র পক্ষের আইনজীবী নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর পিপি এ্যাড. মো. আসাদুজ্জামান খান রিনো বলেন, উক্ত দুই আসামীরা শিশু হৃদয়(১৫)সহ তিনজন নেশাদ্রব্য সেবন করে ওই নারীকে গণধর্ষণের পর হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছেন। আদালতে মোট ১৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। দীর্ঘ শুনানির পর সাক্ষ্য-প্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দুই আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন। শিশু হৃদয়ের বিচার শিশু আইনে চলমান আছে। আসামীদের উপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষণা করা হয় বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, এই রায়ে প্রমাণ হয়েছে অপরাধ করে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। 

মন্তব্য করুন


Link copied